শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

সৌমিত্র চক্রবর্তী



সৌমিত্র চক্রবর্তী

চাঁদ আমার অষ্টাদশী

কবিতা লিখিনা আমি প্রলাপ আঁকি,
রোজ রাতে চাঁদ নেমে চুমু খায় গালে-
চাঁদ তাতেই বিভোর!
ঘুম ঘুম অন্ধকারে ছায়ারা যেই এঁকেবেঁকে খেলে
অবসরে টুং টাং আবহ পেছনে
গান করি আমি, আমাদের দুজনের গান;
চাঁদ গালে হাত রেখে চুপ করে শোনে-
চাঁদ তাতেই বিভোর!
চরাচর নিথর তখন, ঝিঁঝিঁপোকা নীরব আলসে
এপারের ধ্বনি ঢেউ ওপারে লবণ সমুদ্রকূলে...
হঠাৎই থেমে যাই আকুল জিজ্ঞাসায়,
-আছো তুমি?
-শুনছি। শুধু এটুকুই ঘোর রাতে জ্যোৎস্না মাখায়।
অমনি চারিদিকে ফুলঝুরি নকশা তুলি,
চাঁদের গোপণ কোনে ভরে দিই
বহুদিন সঞ্চিত উপোসী আদরের উচ্ছল ঝর্ণা-
চাঁদ তাতেই বিভোর!
মাঝেমাঝে অমাবস্যা চুরি করে চাঁদ
ঝড়ের মাতনে প্রশ্নরা উথাল মাতাল
সম্পর্কের রেশম সুতো টুকরো হয়ে ছত্রখান,
কিন্তু ফের যেই কৃষ্ণপক্ষ তলায় অতলে, অভিমান
বদলায় ব্যাকুল ইচ্ছেয়, চাঁদ ফের উঁকি মারে,
আবার হাজারো শব্দ-গান-ছবি-আদরের মেলা,
আমি তো ডুবেই আছি অষ্টাদশী
শতাব্দী প্রাচীণ তরুনী চাঁদের দখলে-
চাঁদও তাতেই বিভোর!
*****



এসো বাঙলায় ফিরে আসি 

শীতার্ত রাতের শেষে
সারমেয়র কুঁইকুঁই
আর উত্তরে হাওয়ার গর্জন
পেছনে ফেলে
উষ্ণ লেপের তলায়
এসো বাঙলায় ফিরে আসি........................


হতে পারে
যা কিছু ভেবে থকি
সবই ভুল কিম্বা
অনেকটাই..............................


তাই বলে যা আছে আয়ত্ত্বে আমার
তাকে দূরছাই.......................?


হোক যা হবার তাই
তবুও আমি
আমার মতই হেসে চলে যাব.......................

                                                     
কে যে কোথায়                                             
কি ভেবে রঙীন শুকনো পাতায়                                   
মর্মর শব্দকেও ঢেকে দেয়......                                    
সে আমার বিচার্য নয়।                                         
                                                                                                             
                                                     
তার চেয়ে
এসো এই গন্ধমাখা শীতের রাতে
ক্যান্ডেল-লাইট ডিনার শেষে
আমার-তোমার-তাহাদের
বাঙলায় ফিরে আসি................................                                                                                                                 
*****



কেন এলে

সেই যদি চলে যাবে
কেন এলে?

গ্রীষ্মের ধূধূ উদাস
মাঠের রুক্ষতায়
স্মৃতি শব ফেলে
কেন এলে?

জল ঝরা দুপুরে
সূর্যাস্তের লাল
ছড়িয়ে ফেলে
কেন এলে?

ঝিঁঝিঁ ডাকা কালোতে
উত্তরে বরফের
ঝড় তুলে
কেন এলে?

বারবার এ খেলায়
হৃদয়ের দুচোখে
অজয়ের বন্যা ঢেলে
কেন গেলে?

সেই যদি চলে যাবে
কেন এলে-কেন এলে!
*****



কবিকল্পদ্রুম

সনাতন মাধুরী
তুমি এত ত্যাঁদোরি
জান্তাম না
কিছুমাত্র।
কবিতার প্রকাশে
মহিলার সকাশে
জিভ খুলে হ্যাহ্যা করো
অত্র।।
রাগিনীর খেয়ালে
শোক করে বোয়ালে
মাছেদের চোখে ঝরে
অশ্রু।
জলে জল ঝরছে
তাসঘর গড়ছে
ঝারি মেরে ওড়ে পাকা
শ্মশ্রূ।।
মাধুরী ও সনাতন
তোর হাড়ে কনকন
কেউ গেল একধাপ
এগিয়ে।
অতএব খাতাখানা
হাবিজাবি যত গানা
লিখে ঝাঁপ মারো কোঁচা
বাগিয়ে।।
নিজেকে পশরা করে
দোরে দোরে ঘুরে ঘুরে
প্রকাশক দের দয়া
মাংলো।
শেষমেষ খট্টাং
পড়ে চিৎ পট্টাং
শেষ দাঁত কখানাও
ভাংলো।
*****



কথারা কথা থাকে

কে যেন বলেছিল শান্ত সমাহিত
আমরা আগাছা রা অমৃত পুত্র!
কে যেন কথা সব একদা দিয়েছিল
রেখেছিল মন লুডোর ছকঘরে,
হাতের তালু নিয়ে কখন কি যে খেলা
লুডোর গুটি খানা কেবলই ওঠেনামে;
ছকের পরে ছক বিশাল হলঘরে
পর্দা উড়ে যায়, রাস্তা অধরাই।
কে যেন বলেছিল কখনো ছাড়ব না
কে যেন রেখেছিল হাতের পরে হাত!
আজকে উদাসীন শীতের রোদ্দুরে
মুখও ছায়া হয়, ছায়াও লুকোচুরি,
কথারা মায়াবী পুঁথিতে থেকে যায়
কে যেন কথা দেয়, রাখেনা কোনোদিন।