শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

মোঃ সরোয়ার জাহান


মোঃ সরোয়ার জাহান

বৃষ্টি
স্তনবৃন্তে ডুবে যাক ঠোঁট
উদাস আঙুল খেলে যাক
ফেনিল মত্ততায় ইচ্ছের  গলিতে!

সাধ হয় ভালোবেসে
মগ্ন হই বাহু বন্ধনে আবার
সঞ্চিত বিষদগ্ধ নীল রক্তস্রোতে
উঠুক কেঁপে ভীরু দীপ শিখা !

চির জীবনের বর্ষা ঋতু
দিয়ে যাক হৃদয়ে আসুক বৃষ্টি যুগল স্নানে !
============================




দুইটি নৈর্ব্যক্তিক নূপুর
পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে মুখর আমার হৃদয়
বৈশাখি মেঘ ঢেকেছে আকাশ
কতোটা জীবন আর নীল অভিমানে পুড়ে একা
দ্বিধাগ্রস্ত জেগে থেকে বুকে নিয়ে বিনিদ্র রাত!

তপ্ত সীসার মতো পুড়ে পুড়ে একদিন
কঠিন হয়েছি শেষে হয়েছি জমাট শিলা
বাইরে তুমুল বৃষ্টি চেতনায় তীব্র বৃষ্টিপাত
মনে পড়ে স্টেশন ভাসিয়ে বৃষ্টি ?

হেমন্তের বিবর্ণ পাতার মতো ঝরে গেছে
বর্ণমালাহীন শূন্যতায়
জলের আহ্লাদে আমি একা ভেসে যাবো
চপল ডানায় হাওয়া লাগা দিগন্তলীন কোন পাখি!

নানন বিন্যাসে শূন্যতা গেঁথে নেয়
দুইটি নৈর্ব্যক্তিক নূপুরে অর্থহীনতার পরপরে!
===========================




বৃষ্টির উঠান
তোমার হৃদয়ে নেই আর
মেঘেদের সংকেত
অথচ সারাদিন আমার আকাশে
কেমন জলভরা মেঘ ঘোরে
হাত ধরে ঠিক উঠে চলে যাবো
বৃষ্টির উঠানে
যদি কাছে আসো
রাখো হাত পুরনো দিনের মতো
পাথর হয়ে শুয়ে আছি বৃষ্টির প্রতীক্ষায়!
আমি তো চাই
বৃষ্টি হোক, বৃষ্টি হয়ে যাক
ভুল হয়ে গেছে,
হয়তো তেমন বাসতে-পারিনি-ভালো !
বিত্তের বিনাশী চাকায়
কালের যাত্রায়
হয়েছে রক্তাক্ত বহুবার
আমাদের ভালোবাসা !
মানবিক স্বভাবে
আমি যা রেখেছি
যত্নে স্বর্গের গোপন ধাপে ধাপে
দিনের শেষ, তোমার চোখের সূর্যাস্তে
আর হবে না কোন দিন
ছায়াছন্নও হবে না আর মেঘে মেঘ বেলা।


গোলকধাঁধা
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে
মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে তুলে আনবো
তোমার শীতার্ত পায়ের জন্য
স্বর্ণ আংটার একজোড়া চপ্পল !
সত্যি মিথ্যে
ধুলোর আকর ধুয়ে মুছে দেব সব
খুব জানি স্বর্গের পথ
যুগল পদস্পর্শের প্রতীক্ষা করে আছে
যে মাটি জানি তাও!
যেই না গড়েছি আশার বসত অপেক্ষায়
নির্মম শিকার করলে সবটুকু আনন্দ আমার !
উড়ে উড়ে গেলো সমস্ত বৈভব
জ্বলে গেলো পিঠ খরতাপে !
শূন্য হৃদয় প্রত্যাখ্যাত হতে হতে
ছোয়ার বাইরে
রয়ে গেলো ইচ্ছাকৃত স্পর্শগুলো বিদীর্ণ হৃদয়ে  !
নৈশব্দের জিহ্বা স্পর্শ করে দুরন্ত সময়
শেখায় ধৈর্য শেখায়
অপেক্ষার নীরবতা
তবু কিছু আছে বাকি
তবু আছে কিছু রাত ।
আষ্ঠেপৃষ্ঠে যে আমাকে বাঁধে
প্রকৃতির নিয়ম ও নিয়মহীনতার
সর্বনাশা মহিমায়
অভিমানহীন চলে গেলে বাতাস অগ্রাহ্য ভাবে
মমতার রক্তক্ষরণ হয় হৃদয় থেকে চোখ থেকে অশ্রু!
=================================




নারী
তরঙ্গভঙ্গে অদৃশ্য মাংসপেশির
দীর্ঘ নিঃশ্বাস টেনে যখন স্বস্তিতে
অবশেষে কুমারীর গলার অন্ধ গহ্বরে নিষ্পেষিত
হারিয়ে যাই আমি পথ নিদর্শনা হীন ….!
পশ্চাতে দাঁড়িয়ে দেখি জীর্ণ চূর্ণিত শরীরে
তুমি স্থির মূর্তি 
বিস্ময়ে তুলে নাও পুষ্প-সম্ভার
তারপর ছুঁড়ে দাও করপুটে বিড়ম্বিত মধ্যরাতে !

নেপথ্যে থেকে যায় দেবদারু অন্ধকার ছায়া
প্রচণ্ড চিৎকারে ভেঙে ফেলে জল,
কেঁপে উঠে রূপালি দানারা
তখন দেখি
জলের ভেতর থেকে জেগে উঠেছে নারী
তার বুক,দুপাশে অনিঃশেষ
রূপো জল ঝরছে আকাশরঙে;
উদোম নারী আলোকময়ই রূপোর ফোঁটা
আমি দেখি নারী দেহ রমণীয় দেহ ছায়া
দেখি তোমার অনাবৃত স্তন
আর দেখি তোমার আগ্নেয় রূপে দগ্ধীভূত আমার পৌরুষ !
অতঃপর পথে পা রাখে নারী…………….
শরীরে জরিয়ে নেয় আলতো ভাবে
…………….তোয়ালেটা নিদ্রাচ্ছিন্নের মতো……!

দেখলাম নারীর ইচ্ছের কি বিচিত্র নমুনা
নারী তখন একে একে শেখাতে শুরু করে
কি ভাবে ছুঁইতে হয়
সেই তরঙ্গায়িত ধবল দেহত্বকে
ভালোবাসা কেমন ভালো-বাসে
উঠোন-ময় আনত দেহ মধুময় করিডোরে,
আঁধারের দেয়াল বরাবর হেঁটে ছোট ছোট দম নিয়ে  !

===================================