রেজওয়ান তানিম
কফিন
মরে গেলে বেচে যায় অন্ধকার!
এই বিশ্বাস নিয়ে যতবার শুয়েছি কফিনে,
ততবার উঠে এসেছে মাংশল অসুখ,
জেগেছে নষ্ট বীজের নৈরাশ্য উৎসব!
প্রিয়ন্তিকার পোড়া ঠোঁট আজকাল যেন
মোহন মৃত্যুর আশ্বাস!
যে শকুন খুবলে খায় মরা লাশ,
তার মুখে হাসি ফোটে জরাথুস্ত্রের
নিন্দাবাদে।
ভুল বলেনি ছায়াপুরাণ
আজকাল শকুনেরাও মানুষ হতে চায়!
প্রতিধ্বনির গ্রীবায় লিখে রাখে
সবিস্তার, নিজস্ব ভ্রূণ নষ্ট করার
গল্প!
নষ্ট সময়
পচে যাওয়া সময়ের কালো বিছুটির সাথে
অন্ধ যে বালক, পেতেছিল কাল
বিবর্ণ বাসর; কেউ তারে
বলে যায়নি এসে- নগ্ন রাত আমাদের
উলঙ্গ করে আরো।
অন্ধকার মানে নষ্ট অতীতের ঘোর লাগা সঙ্গম!
নিয়তিবন্দী বালক
এখন একাকী ভীষণ, নিজে পোড়ে আর
সুখফড়িঙের পাখনা পোড়ায়,
পাখনা পোড়ায়!
আলেয়া
পালক উল্টে দেখি জিপসি মেয়েটা
সংসারে বুক ডুবিয়ে লিখছে মধ্যবিত্ত প্রেম!
সম্মোহনের মদ যার
থুতনির তিলে।
নির্দোষ অন্ধকার
মুকুট ও রক্তের যৌথ প্রতারণায়
নাম লিখল সংকটের ছায়াপথে!
অনামিকা ও আংটির উপাখ্যান খুঁজে
বেভুল রাখাল বালক;
পাথরের খাঁজে প্রেম খুঁজে খুঁজে হয়রান!
অথচ, সময়ের নেই কোন নিজস্ব আলো।
ভুলে যায় জন্মান্ধ মন...
এ জীবন বড্ড অসুখের!
চিবুকে চুমু হয়ে লেগে থাকে বিষাদ!
আমি
জলের কৌটো উল্টে যে তুলি মাখে সর্ষেরোদ
তার কানে একবার গুজেছিলে
কিছু মোমরঙ ঘুম, আর মুহূর্ত বিকেল!
হা বেদনার মলাট, বলেনি কেউ
হাতের রেখায় কবে, কোন সাপ লিখে গেছে
শর্তহীন অসুখ, নিম্ন বরফ গান।
মাঝে মাঝে নিঃশ্বাস ফেলি, দেরাজ খুলেই দেখি
থালাভর্তি আমদুধ, ঝাপি নিয়ে খেলছে
মায়ের ঠোঁট, বকুনি ও হাসি মিলাচ্ছে
ঈশ্বর!
এই কি কবিতাজন্ম গত সে প্রেমের?
পরাজয় লুকোব বলে মোমচুম্বন শেষে
করতলে সমুদ্র রাখি, আর জমে যায় লবনশ্মশান
হাঁপরে ছাপ ফেলে কয়েকটা দাগ
বুকপকেট টুকে রাখা কিছু গুড়োকাঁচ মন
কেবল বকে যাচ্ছে, পুরোনো আমিই ভাল ছিলাম।
মেঘমল্লার
উদিত রৌদ্রের রাগ,
বলতো কি করে পড়া যায় মেঘমন্ত্র, খুঁজে নেয়া যায়
মাতাল অসুখে ডুবে যাবার কাগুজে উচ্ছ্বাস ?
সম্ভাবনার বিকেল খুঁজে দেরি হয়ে গেল, নামল নোনতা রাত
ওর বুকে লুকাই তৃষ্ণার মদ! সকাল হলেই মাতাল হব, তার আগেই
জল নেমে গেল মেঘমল্লারে; হল না আর প্রাণের কম্পন!
আলো ফোটা আর্দ্র সকালে, স্পর্শের সংকেত ললাটে লিখে
নিয়ে
তোমার ভিতরে ডুবে লিখে দিতে চেয়েছি, বেদুইন প্রেমের আপেক্ষিক
কথামালা!
দূরাগত প্রতীকের সুরে ওরা চলে গেছে অস্তমিত সময়ের কাছে
যে শুধু দেখেছিল মৃত পাতাদের অসুখ ও মর্মরে ঘেরা যৌবন!
নিরাশ্রয় বায়ুরা জানে, কোন সে স্রোতহীন জলে তার
ঠোঁট কাঁপে
মিটিমিটি জোনাকি জানে, কেন স্মৃতির শালবনে একাকী
ময়ূর কাঁদে ?