মোকসেদুল ইসলাম
আসল প্রেমিক
'মুখরা রমণী বশীকরণ' এই মন্ত্র আমার জানা নেই
হারিয়ে ফেললে পুরুষ চুম্বন সহজেই মরে যায় ভালোবাসা
আমাদের নেশার শহর, যেখানে শূন্যতা
পোড়াতে গিয়ে
প্রেমিক ভুলে যায় সান্ধ্যকালীন যৌবন সুখ।
নিদ্রাফুল আমাকেও দিও উপহার
পেশাদার কারিগর হয়ে ফেরি করবো ভালোবাসার
রক্ত না ঝরলে ভালোবাসা খাঁটি হয় না-অনেকেই বলে
আমি ফুল ছিটিয়ে দিয়েছি জ্যামিতিক নকশায়
ঈর্ষার বারুদ পিছে ফেলে কতটা পথ এগুতে পারে
অভিজ্ঞতায় আটকে গেলে জীবন তার কোন দাম নেই
জলপুকুরে যার ছায়া ভাসে সেই নাকি আসল প্রেমিক
নিশিন্দা সুখে কাটিয়ে দেয় আজব জীবন।
দূরত্ব
ঈর্ষার বিপরীতে তিরস্কার করো আজ
যাযাবর পথ ভোলা নাবিককে অভিযুক্ত করো
তরতাজা অঙ্গুরীর স্পর্শ পেলে আমারও পুড়বার সাধ হয়
ভাবপরশে আগলে রাখি তখন সব সন্ধি প্রস্তাব।
পান্ডুলিপিতে আবদ্ধ থাকুক সেইসব শব্দজাল
যারা বের হয়ে আসতে পারেনি মায়ের উদর ছেড়ে
ফুল চন্দনে মুখরিত হোক তাদের অবসর সময়গুলো
শূন্য হৃদয় নিয়ে নিরুদ্দেশের গতিপথে হাঁটলেই মনে পড়ে
কিশোরী প্রেম, ফাল্গুন দিন, স্বমেহনে তপ্ত চুম্বন।
ইদানিং ভোর ভাঙ্গা ঘুমে ব্যস্ত ইচ্ছের ভেতর
বিনা নোটিশে ভাবনাগুলো এভাবেই ঢুকে পড়ে
যদিও তোমার আমার মাঝে এখন দূরত্ব নক্ষত্র পথ।
আয়না সুখ
দাম বাড়ছে ইট সুরকী পাথরের
বোধের আঙিনায় দাঁড়িয়ে যে মানুষ
তারও আকাশ ঢেকে গেছে পরাবাস্তব আঁধারে,
মন্দিরে বিশ্বাস নেই আমি মানুষ আরাধনা করি
যোগফল সব শূন্য দেখে ভুল শোধরাতে কেবল ক্ষয়ে যাচ্ছি
আলোর গভীরে যাত্রা যাদের তারাই ভাসে ধানসুখে।
শৈশবের দেয়াল ঘিরে যেসব অক্ষরহীন সংলাপের বাস
বিপরীত উচ্চারণে হারিয়ে গেছে সব মননের পাঠ্যসূচি থেকে
কিছুটা পাখিসুখ আমিও চেয়েছিলাম রোদে ভিজবো বলে
দূর পরবাসে যাদের যাত্রা বালিশ উল্টে গেলে তাদের সুখও উল্টে যায়
তারপরেও আমরা আয়নায় মুখ দেখে মেকি হাসি।
মুদ্রের
ঝুমঝুমি
................................
প্র্র্র্রতীক্ষা এবং দীর্ঘশ্বাসের ভীড়ে কাটছে যে জীবন
সেখানে নেই কোন সুখকর
দৃশ্যের অবতারণা
ব্যর্থতায় ক্লান্তি নেই
পরিচয়ও জানিনা তাঁর
অদ্ভুত ছায়ার পথে হাটছি
অনন্তকাল ধরে
শুধু মৃত্যুর পরিচয়টা নেবো
বলে এ পথে এসেছি।
আমি মহৎ নই, শুধু অন্ধকার ঘোঁচাবো বলে শান্তির পক্ষে গাইছি গান
টি-শার্টের গন্ধ পছন্দ হলে
যেমন মেয়েরা হাটে পিছু পিছু
সমুদ্র ডাকার আগেই আমিও
বুকের সবগুলো বোদাম খুলে রেখেছি
নতজানু প্রার্থনার মতো
বোধের উৎসবে ছড়িয়ে দেবো লোবানের ঘ্রাণ।
শরীরে শূন্যতা ভর করলে
মীনগন্ধে কাটে বাকিটা সময়
ক্ষুদ্রাকার আলোকের উৎস
খুঁজে ফিরি অপরাজেয় নীরব সমুদ্র ঝুমঝুমি।
বিশ্রামাগারে
ভাল নেই বাবা-মা
পাখির ঠোঁটে নতুন স্বপ্নবীজ বুনে নিমপাতা কলহ লিখে রাখত যে বালক বিকেল পর্ব শেষে
আমরা তাঁর কাছে ফিরে আসি
কিছু দুঃখ-শোক বিনিময় করবো বলে। আমাদের
ঘাসের সংসার, হাতের তালুর মতো চেনা মানুষগুলো রাত উড়ে আসলে সমুদ্র মন্থনে
ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তোমাদের
শ্রীমুখ দেখে শুধু কৌতুহলই বেড়েছে, আদি জননী ভুল
বলেনি অমৃত প্রাপ্ত হলে কেউ
কেউ নগ্ন সিঁড়ি বেয়ে হয়ে ওঠে রাক্ষসী। বিরল নিদ্রা
যাপনের সুযোগ নিয়ে এসেছে যে
আরাধ্য বিশ্রামশালা সেও দেবকন্যা নয়। ভালোবাসার
কতটুকু কমতি হলে কিংবা
মনুষ্যত্ত্ব কতমাত্রায় লোপ পেলে নিজের জন্মদাতাকে রেখে
আসে বিশ্রামাগারে সেটা
মাপার থার্মোমিটার আমার কাছে নেই বলে মানুষ আর পশুর
মধ্যে কোন পার্থক্য করতে
পারছি না। পললের ভাঁজে যারা রেখেছিল ভবিষ্যৎ শীতল
পাটির সুখ আঁধারের উষ্ণতায়
তারা আজ ভালো নেই, অপ্রাপ্তি
দীর্ঘশ্বাসে ভেসে যায় সব
উচ্ছ্বাসী সুখ।