সুমনা পাল ভট্টাচার্য্য
ধোঁয়ার ওপারে রোদ্দুর
খুব খুব কাছে আসতেই বুঝি
তোমার চশমার কাচ কেমন আবছা
ঘোলাটে কাচের ওপাশে তোমার আবিষ্ট মন
কেমন এক্স-রে মেশিনের মত আমার সবটুকু শুষছে
তোমার নিশ্বাসের ঘনত্ব আমার ঠোঁটের ছাদে
ইকিরবিকির কাটা বুদবুদে সংলাপ
আমি ক্রমশই জমাট থেকে তরল
বয়েলিংপয়েন্টে তোমার নিজস্ব আঙুল-ছাপ
এখন আমার ঘরময় হিমেল ধোঁয়া
আর
তোমার চশমার কাচে ঝকঝকে নিষিদ্ধ রোদ্দুর..
**----------------**
আজকাল
তোমার জামার বুকপকেটে
সাবান জলে ভেজা রাতের ঘাম
আমার চোখের কোল বেয়ে গড়িয়ে পড়া সময়
এখন মারমুখী সূর্যের গায়ে মড়মড়ে কোজাগরী
ঢঙী পায়রাদের পায়ে মল পরা নিশ্চুপ দুপুরগুলো
তোমার রিংটোনের অপেক্ষায় কেমন থমথমে
ওবাড়ির ছাদে হেলে পড়া গাছের ছায়ায়
কালকের চিরকূটে সংলাপ
আমার করতলে বয়ে যাওয়া নিয়তির গায়ে
এক কুহেলি নিশিডাক
রাত ভোর
ভোর রাত।।
*********----*********
খিদে
-----
কি-প্যাডে ঝড় তোলা তোর আঙুলগুলি
বুকের ক্যানভাসে এক অরণ্য এঁকেছিল
এখনও প্যালেটে গোলা রয়েছে
কিছুটা লাল, কিছুটা হলুদ
বুকের ভিতর আগুন জ্বললে বুঝি
রঙ ঢালা দেওয়ালের বড় খিদে আজ....
রোজ রাতে তাই চাঁদের কাজল আঁকি চোখে
আর গিলে খাই এক আকাশ জ্যোৎস্না ।।
******---------******
যাপিত জন্মান্তর
আকাশে একটি শুকতারা পুষেছি
পূর্বজন্মের ইতিহাস এখন কাগজের নৌকো
রাত পোহালেই চাঁদ ডুববে ভেজা টিপে
উঠান জুড়ে বাঁধভাঙা জল আর জল
আমি এঁটো হাতে ভাসিয়ে দেবো
আধপোড়া রাত্রিযাপন....
স্বপ্নের বালিশে মুখ গুঁজে দেখি
আকাশ আর মাটির একাত্মতা, সহবাস
আমার চোখে ঝিলিক খেলে
ঠোঁটে চুঁইয়ে পড়ে মদ
কে বলে জন্ম একটিই?
কোষ থেকে কোষান্তরে ব্যপ্ত হই প্রতি রাতে
তোর বুকের ঘাস মেখে চুপিচুপি
জন্মান্তরের জন্মদাগে...
*******-------*******
রাখালিয়া
শব্দের খোলোশে কাঁকরের কিড়কিড়ে আঙুল
এক ঝটকায় দামাল হলে
ঝমঝমে অকাল বর্ষণ
অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিতে মুঠো সুখ ভরে
ঘুমের ক্যানভাসে এঁকে চলি
মেঠো রাখালের ছবি
তার ঘোর লাগা বাঁশির সুর
আমার বুকের তেপান্তরে দিগন্ত ফসল বোনে
জলছাপ ঠোঁটে
লুকিয়ে রাখি সবুজে সংলাপ
আর..
বেপরোয়া আঙুলে
একটা বানভাসি ভোর।
********---------********