তৈমুর খান
চিহ্ন
______
একটা খেজুর গাছ দাঁড়িয়ে আছে
বিকেল এসে বসেছে মাথায়
সেদিকেই চেয়ে আছি আমি
ক্রুশবিদ্ধ
যিশু
অদৃশ্য ছায়ার ক্রুশকাঠে বধ্যভূমিতে
আটকে আছি
নন্দিনীদের কাজললতা চোখে
একফোঁটা
অশ্রু নেই
করুণার বাক্স ফাঁকা
সহানুভূতির বাক্যে কোনও বই লেখা হয়নি আজও
বিকেল নেমেছে
রাত্রির নরম মাংসের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে
রোদের শৃগাল
আমার রক্ত গড়ে গড়ে পড়ছে মাটিতে
আর এক একটা চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে সভ্যতার
যুদ্ধ জয় করতে পারি নাকো
________________________
ঘর-উঠোনে মা-বাবার দীর্ঘশ্বাস
চলাফেরা করে
আমাকে দেখে যায়
যুদ্ধ করতে পারি নাকো আর
তবু যুদ্ধক্ষেত্রেই থাকি
আমার হাতে এখনও চকচক করে
বাবার তলোয়ার
তলোয়ার আসলে এক সহিষ্ণু বিস্ময়
সংকটের কাছে নিজেকে উৎসর্গ করা
অথবা আকাশের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
যত ইচ্ছা নিজেকে প্রসারিত করা
দুয়ারে ঝাঁটা হাতে মায়ের সকাল
নিহত বসন্তকালে নিশ্চুপ কোকিল
এখনও অমৃতের সন্ধান করে
আমি ঝড় , দুর্বার সংযোগে
বেরিয়ে পড়ি প্রতিটি সকালে
ফিরে আসব বলে যাই বাবা ও মাকে...
ঘোড়া ছুটতে থাকে
___________________
এক একটি তলোয়ার হাতে বাহির হই
যদিও ধারণা মাত্র সবকিছু —
একটি তেজি ঘোড়ার পিঠে মনকে বসিয়ে দিই
মন বসে থাকে
আমি ঘোড়ার লাগাম ধরি না
কোন যুগ
?
কোন সভ্যতা ?
কোনও কৌতূহল নেই
জয়ের উল্লাস আমাকে ডাকে
ইতিহাস থেকে আর এক ইতিহাসের দিকে যেতে থাকি
ঘন সবুজ মেঘে রক্ত গড়ে আসে
এক একটি উন্মাদ লাশ ভেসে যায়
তলোয়ার হাসতে থাকে সভ্যতার রোদে
সব ক্ষীণ রাস্তায় মানুষের ভিড়
লক্ষ্যভ্রষ্ট ধর্মচিহ্নে কাতর প্রশ্রয়
তির্যক লতানো শরীরে
দুইহাত তুলে নক্ষত্রের চুম্বন চায়
নক্ষত্ররা আদিম যুগের নারী
ঘোড়া ছুটতে থাকে অক্লান্ত ভ্রমের ভেতর দিয়ে
তার
কোনও সত্য নেই , বিরতি নেই
দুর্বিনীত স্পর্ধায় আস্ফালন শুধু
....
আমাদের নির্বোধ সমন্বয়গুলি
___________________________
আমাদের নির্বোধ কিছু সমন্বয়ের গল্প
রোজ ইতিহাস লিখতে আসে
আমরা স্নান সেরে মিথ্যে ইতিহাসের ক্লাসে
উন্মুখ হয়ে বসি
আহত শালিকের ডাক
অথবা নিহত ঘুঘুর স্মৃতি
কার্যত বিমর্ষ রচনা করে
আর শিকার শিকারির দিন তমসার আড়ালে চলে যায়
বিচ্যুতির পর্দা উড়ে আসে
রঙিন বিস্ময়ে মেখলা পরা নাচ
উদ্গত স্বয়ংক্রিয়তায় শুধু তাকিয়ে থাকা
যতদূর দৃষ্টি যায়
অভিক্ষেপ নিবেদনে ডুবে যায় অর্জিত প্রত্যয়গুলি
সুর ছড়িয়ে পড়ে অভিষিক্ত কারুণ্যের ঝড়ে
নির্বোধ সমন্বয়গুলি নিবেদন লিখে
এক
একটি মহড়ার অনবদ্য তীর্থ নির্মাণ করে
তীর্থে কারুভাষের জাতক
স্বপ্নিল ফেনায় রং খুঁজে পায়
দোমড়ানো নীল আসমানে আমাদের চোখ ছলকে ওঠে
সব বিমর্ষ অন্ধ চোখগুলি
পুড়িবার সাধ
___________
দর্পিত আলোর কাছে
পতঙ্গের মতো উড়ে উড়ে আসি
নিজেকে পোড়াতে চাই
পুড়িবার সাধ
দুর্বোধ জীবনে ডানা
ডানায় ডানায় উড়ানের
বেঘোর প্রলাপ
প্রলাপ জীবনবোধ
ভাষা কহিবার
দুরন্ত ঘূর্ণির চোখে
মহাকাশ ঘুরতে থাকে অবলীলায়
নিচে উপলব্ধির জল
কল্লোলিত স্রোত
ধূসর প্রচ্ছায়া এঁকে
আত্মঅভিক্ষেপে নিগূঢ় উত্থান
পর্যটন চলতে থাকে
দুর্নিবার
পর্যটন এক