মামনি দত্ত
সম্পর্ক যাপন
সেলাই করা সম্পর্ক।
ওষুধের গন্ধ থেকে নেমে আসে
অসুখের অনুবাদ।
আবহমানকাল আমরা বয়ে চলি
একে অপরকে না ছুঁয়ে।
তুমি যদি এই নিঃশব্দ প্রহর কে প্রেম বলো
তাহলে আমি সম্পর্কের ক্ষত কে
কেমন করে ভালবাসা না বলি?
--------------
কাল্পনিকচরিত্র
কাল্পনিক বার্তালাপ প্রেমিক হয়ে উঠলে
নিকষ অন্ধকার শরীরময় লতাগুল্ম...
দুরন্ত আবেগ ছিড়ে ফেলে সৌজন্য চৌকাঠ
নিশিডাকের মতো এ আহ্বান...
তৃষাতুরা মাঠে তুমি রক্তিম চরণরেণু ফেলে গেলে
শালিকের মতো খুঁটে খাই দানাপানি।
সমস্ত পৃথিবী থেকে লুকিয়ে একাকী বিষাদে
আমার গর্ভে জন্ম নেয় সোনাঝুরি কান্না
যাকে আমি ভালবেসে হলুদ চিঠি লিখে উড়িয়ে দিই
পাখিদের রচিত অদৃশ্য পথে।
--------------
পিতৃসম
তারপর তুমি উদাসীন দুপুর আঙুলে মাখিয়ে
জানালায় দৃষ্টি ভাসিয়ে রাখো আজও...
বুকের ভেতর অবাধ্য বাঁশী সুর ছড়িয়ে তেপান্তর,
অসুখগুলো বেড়ালের মতো আঁচড় কাটে...
নখের আয়নায় নির্মম কারুকার্য
বৈকালিক মেঘ আঁকে,
আবরণ ছিঁড়ে তোমার!
এসো, সঙ্গী বিহীন এই নদীতটে....
প্রাচীন বৃক্ষ ভিক্ষুকের মতো শিকড় ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে
আছে
সমস্ত অসুখ ওই বৃক্ষতলেই দান করো...
বৃক্ষের প্রকৃত ধর্মে পিতার অস্তিত্ব গোপন আছে।
--------
বিচ্ছেদব্যথা
সমস্ত জলভূমি ভেঙে উঠে আসি পুনরায়
আমায় ঘিরে উত্তাল তানপুরার মিষ্টি তরঙ্গ।
তুমি দূর থেকে দেখেও
না
দেখার ছলনায় নিজেই ডুবে যাও...
আমার পরিধিরেখা বিষাক্ত নিঃশ্বাস
তাইতো তোমায় ছুঁয়ে দেবার আগে
পৌত্তলিক হয়ে উঠি।
আমি ডুবে যাব আবার জলের প্রাঙ্গণে
যেমন তুমিও প্রতিবার ডুবে যাও
কুঁচিহীন ছলনার একাঙ্ক নাটকে।
--------
অরণ্যবাস- ৫
শীতের হাওয়া গায়ে লাগলে
তুমি উদাস বাউল হয়ে যাও কেন অরণ্য?
সবুজ ভূখণ্ড বুকের ভেতর রোদ খোঁজে
আর আমি একতারা সুরে শিশির হয়ে ঝরে পড়ি...
তুমি নির্জনতাপ্রিয় পরিবেশ ভাসিয়ে দাও
আমার নুপুরের অহংকারে...
আমার স্থিরতা পায়।
আমাকে নিবেদন দেয়
শুধু তোমারই চাঁদ স্নান রূপেরমোহ।