শাহানারা ঝরনা
অনুভব
ক, একটা
গাছে সবুজ পাতা অন্যটা যে খালি
তারই পাশে নেশার ঘোরে ঘুমোয় বনমালী
ভাল্লাগে না আর ,
বোধ হারালে কেউ ফিরে তা পায় কি পুনর্বার ?
খ, বন
দেবিকার পায়ের নিচে পিষ্ট হোল ফুল
একবারও সে দেখল না তা , নয় কি এ তার ভুল ?
হয়তো সেই ই ঠিক
তাইতো এমন অসংগতি চলছে চারিদিক
!
গ , মন
আকাশে নিত্য জ্বলে স্বপ্নেরই শুকতারা
ওসব দেখার পাইনে সময় চলছি দিশেহারা
পুড়ছে মেধার ঘর
নষ্ট বোধের ক্ষরণ নিয়েই ছুটছি নিরন্তর ।
ঘ , হৃদয়
পাড়ার পাঠশালাতে কে পাঠাল চিঠি ?
চিঠির পাতায় একখানি মুখ হাসছে
মিটি মিটি
বলি তারে শোন ,
তুই কি আমার বিবেক , নাকি গণতন্ত্রের বোন ?
ঙ , একটা
জীবন চলছে কেমন সবই কি আর বুঝি ?
বুঝতে গিয়েই হাজার রকম মোহরদানা খুঁজি
খুঁজেও কি সব পাই ?
পেলেও দেখি হারিয়ে গেছে , আমার কাছে নাই !
যদি পারো
যদি পারো জল রঙ বার্তা
পাঠিয়ো
ইদানীং মেঘ বালিকাও ভাল
নেই
সে স্বপ্নের মন্দিরে যায় , নৈবেদ্য সাজায় , পূজায় মন বসে
না ।
পাখিদেরও একই অবস্থা
মলুয়া মহুয়ার দেশে যায় , কত কি বলতে চায়, বলতে পারে না
মঙ্গার উজানি ঢলে ভিজে
একাকার ওদের মেধার বৃন্দাবন ।
আমিও দ্বিধার পাহাড়ে একাকী
হাঁটি
সঙ্গপ্রিয় মানুষদের
সান্নিধ্য ছেড়েছি
নাদনিক ভাবনা ভুলে চমকপ্রদ
বিজ্ঞাপনের দিকে চোখ রাখি ।
নীরবতার নির্জন অধিবেশনে
বসে যান্ত্রিক জীবনের নোটিফিকেশন পড়ি
লাইক দেই , কমেন্ট করি
উত্তর আসে না
যখন ইথারীয় আবেশ ঘনীভূত হয়
তোমার জন্যই পুঞ্জিভূত হয়
গভীর অভিমান
ভালবাসার সুতন্বী ফন্টে
সেগুলো কম্পোজ করে
সযত্নে সেভ করে রাখি হৃদয়
মেমোরিতে ।
আমার এখন হাজারো কাজ ,
নিত্যদিনের মন কথার
অনুভূতিও তোমার দেয়ালে
ট্যাগ করার সময় পাই না ,
পারলে তুমিইবার্তা দিয়ো
কেননা ভালবাসার অফারটা
তুমিই আমাকে প্রথম
দিয়েছিলে !
কেন বলো ভালবাসি
কখনো আকাশ মুগ্ধতা নিয়ে
দেখে আমাদের হাসি
বড় অসময় তবু কেন বলো
ভালবাসি ভালবাসি !
চলে যায় কত নাগ পঞ্চমী
আকুতির জলে ভিজে
পদ-পঙ্কজে আলতা রাঙিয়ে
বুঝি না তো করি কিযে
লীলা চপলার সুনীতি প্রবাহে
, আসে যায় কত
বেলা
ডিজিটাল মনে ময়ূরী আবহ করে
লুকোচুরি খেলা
নদী পুড়ে যায় দখলের তাপে
মালাবতী বাঁধে সেতু
দেবিকার সাজে চলে ফুল্লরা , ঘরে কাঁদে
কালকেতু
পরিযায়ি দিন শুচিতায় কাটে
আশা নিয়ে রাশি রাশি
বৈরি বলয়ে বসে তবু তুমি , কেন বলো
ভালবাসি !
বালুকাবেলায় বারনারী ছোটে
মায়াময়ী অভিসারে
বাঁশরি বালক ভাঙা বাঁশি
হাতে কেঁদে ফিরে চুপিসারে
কুল-বালিকারা যায় না তো
ঘাটে নূপুরের সুরে সুরে
খনার বচনে সুফলা সুদিন চলে
গেছে আহা দূরে
ঠাকুমা বলেনা রূপকথা আর
জড়োয়া জোছনা রাতে
মইষালি দিন আহত এখন ইথারীয়
পদাঘাতে
তীর্থ করি না তবু তীর্থের
জলে ডুবি আর ভাসি
অনুভবে রাঙা পথে বসে তবু কেন বলো ভালবাসি !
পাল্টে যায়
তুমি আমাকে দিয়ো আয়না
বিকেলের খোঁজ
চাই না কৃত্রিম বিলাস , চাই ঘুঘু ডাকা
মায়াবী দুপুর
মাছেদের জল খেলা , শাপলার গন্ধ
ভরা পানকৌড়ি পুকুর ।
নাব্যতার স্বীকারোক্তি
নিয়ে নদী কাঁদে
বয়সী সময়ের মন গলে না
আমুদে মানুষগুলো ডিজিটাল
প্রেমের নতুন শিকারি ।
ভেবে অবাক হই
তুমিও কত সহজেই পাল্টে
ফেললে শুকতারা হৃদয়ের রীতিনীতি !
আমার ইচ্ছের জোছনা ঋতুতে
তুমি মরুচারি নাবিক হয়ে
হারিয়ে গেলে
হৃদয়ের রাজপ্রাসাদে রইল
পড়ে তোমার
অসম প্রেমের রাজ্যপাট ।
সোনা বউ
ও সোনা বউ নায়র যাবি চল
করে নে সাজ
আমি আছি , তবু এত ভয় কেন
তোর আজ ?
কপালে তুই টিকলি পরিস আলতা
রাঙাস পায়
দুই চোখেতে কাজল আঁকিস
শালটা জড়াস গায়
হাতে পরিস রেশমি চুরি
গলায় সীতাহার
পায়ে যেন নূপুর তোলে
মেহুলি ঝংকার !
ও সোনা বউ ভাল করে ঘোমটা
টেনে নিস
বাঁকা চোখে কেউ তাকালে
আমায় ছুঁয়ে দিস
কি ভাবছিস ! লাল হোল মুখ , লজ্জা পেলি, এই !
পাগলি ওরে ! আমার ভুবন তুই
ছাড়া কেউ নেই
দিব্যি করে বলছি তোকে , তুই ই আমার সব
তোকে ছাড়া দিন কাটানো
সত্যি অসম্ভব !
ও সোনা বউ যাসনে দূরে
একলা অবেলায়
তোর শরীরের গন্ধ যেন আর
কেহ না পায়
সারা জীবন দিসরে ছায়া তোর
আঁচলের তল
কষ্ট পেলে দিসরে মুছে আমার
চোখের জল
দিনের শেষে সূর্য যখন
পশ্চিমে দেয় ডুব
জানিস কি তুই তোর কথাটিই
ভাবি আমি খুব
উষ্ণ উতল প্রহরগুলো মোহেই
কেটে যায়
ও সোনা বউ,তুই ছাড়া যে , আমি নিরুপায় !
উত্তরা , ঢাকা । বাংলাদেশ ,