বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬

রিয়া রিয়া



রিয়া রিয়া

তারপর? বল তারপর

মাঝে মাঝে একলা সময়ে
মেঘের আড়ালে লুকোয় চাঁদ।
বেঁচে থাকার তাগিদে বুঝে নিই
হাওয়াদের এলোমেলো হাত।

তারপর?

পায়ের নিচের নোনা জল
ধুয়ে দেয় তারাখসা রঙ।
অনেকটা ক্লান্ত হয় ভোর
শ্রান্ত হয় মিঞা কি সারং।

তারপর?

সবুজ যত গাছ জল ছাঁচে
পাড় ভাঙে মনের উঠোন
আজও নির্ঘুম একলা রাত
সাথে নিয়ে বাখ, বেঠোফেন।

তারপর?

ধীর ধীরে অশান্ত হয় মন
চোখের কোলে টলটলে নদী।
অভিমানে বে-আব্রু সঙ্কোচ।
সাগর হতে পারতাম যদি!

তারপর?

কুয়াশায় ঢেকেছে আকাশ
লুকিয়ে রাখে ঘর ছাড়ার গল্প
রোদের সুরে অবিশ্বাসের রেশ
মেঘ মল্লার শুনছি অল্প অল্প।




কাল যাপন

ভালো লাগার ঠিকানা আজ হারিয়ে গেছে ভেসে
ভালো থাকার গন্ধ টুকু আবছা হাওয়ায় মেশে।

একলা আমার চলা, সাথে একলা ইচ্ছেরথ
এবড়ো খেবড়ো উঁচু নীচু অচীন পুরের পথ  ।

নদী জলে ছলাৎ ছলাৎ, একলা নদী চলে
একটা সাঁকো আধেক গড়া, আধেক কথা বলে।

আমি জানি আমার মন, আমিই জানি আমায়
অচেনা রং যখন তখন মন খারাপে রাঙায়।

সিঁধেল চোর মাঝে মাঝেই সিঁধ কাটতে আসে
হালকা কথায় মন ভোলাতে মিথ্যে ভালোবাসে।

জীবন নদীর এপার ওপার অলীক ছবি দেখি
চলতে চলতে চমকে থেমে কত কিছুই শিখি।

মেঘের পরে মেঘ জমে,ঘনিয়ে আসুক আজ
বৃষ্টি নামুক মন উঠোনে, সকাল কিংবা সাঁঝ।

ছোট বেলার কাগজ নাও ভাসুক জমা জলে
ইচ্ছেনদী পেরিয়ে সে নাও সাগর পানে চলে।

ঝড় বাদলের দিনের পরে, সোনালি দিন দেখো
ভালোবাসার অন্য খাতে আমায় তুমি রেখো।



রক্ত মৃত্যু রসায়ন

অব্যক্ত ঘৃণার স্ট্রাটোস্ফিয়ারে
বিধ্বস্ত তুলতুলে হৃদয়।
গামা রশ্মির শিকারে আহত
আত্মরক্ষায় অপটু মন।
পথের প্রান্তে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা
আগাছার দুঃস্বপ্নে দিন কাটে
কখন কি হয়।
মাউনাকিয়ায় চুপটি করে বসে থাকা
দূরবীন ও জানে না,
নত্রাদামের ধুসর পাথরের কথা।
যুগের পর যুগ বরফের আস্তরনে
ডুবে থাকা দিন রাত ও ভয়
পায় লাভা উদগীরণের।
পৃথিবীর শূন্য থেকে যাত্রা
শূন্যতেই বুঝি শেষ।
চিন্তায় টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া,
স্থান, কাল ও বন্য সমাজকে
ডিঙিয়ে যেতে গিয়ে,
ক্ষত বিক্ষত বিষাক্ত কাঁটায়।
নিত্য অনিত্যের ভিড়ে, পুরাণের
কাহিনী ও মিথ্যে হয়ে যায়।
ক্ষত স্থান থেকে চুইয়ে পড়া
রক্তের স্বাদে শুদ্ধ হয়েছে ক্যাকটাস।
শুকনো রুটির টুকরোর সাথে
মৃত্যু মিলেমিশে একাকার।
স্থবির জীবনকে আয়োনোস্ফিয়ার
গ্রাস করতে চেয়েছে বারবার।



হ্যালো শুনছ

হ্যালো শুনতে পাচ্ছ
হ্যাঁ আমি তোমাকেই বলছি!
জানো, আমি জন্ম নিয়েছিলাম
মাটির গভীরে, সমাধির নীচে
অবহেলায় বেড়ে ওঠা এক আগাছা।
হ্যালো এই শোনো,
আমি তোমাকেই বলছি!
তুমি যদি না থাকতে
অন্ধকারের জঠর থেকে
আমার আর বেরোনোই হতো না,
কোন এক বসন্ত-নদীতে
ভাসমান শব হয়ে বয়ে যেতাম।
হ্যালো, আমি তোমার সাথেই
শুধু কথা বলছি!
জানো, তোমার ভালবাসায়
এখন আমার আয়ু বাড়ে ঘন্টায়;
কিন্তু দেখো, একদিন নিজের
স্বপ্নগুলোকে দুহাতে খুন করে
কত রক্ত মেখেছি আমি!
হ্যালো! শুনছো, আর একবার শোনো তুমি!
জানো, আজ আমি শুধু তোমাকেই চিনি
এখন আমার সবকিছুই ভালো লাগে -
ঝিরিঝিরি বৃষ্টির গান,ফুলেদের খিলখিল হাসি,
আর ভালো লাগে আমার চোখের আলোয়
তোমার ছায়া।
জান, আমি
ভালবেসেছি শুধুই তোমাকে,
ভালবাসবো শুধুমাত্র তোমাকেই।
হ্যালো! এই শুনছো আমি তোমাকেই বলছি…..!
হ্যালো!...




ইচ্ছেমত ইচ্ছে

মাঝে মাঝে
ইচ্ছে করে
বৃষ্টি হয়ে
ঝরে পড়ি
সবুজ ঘাসে।
হলদে পাখির
ডানায় চড়ে
ছুঁয়ে আসি
বনপলাশী
এক নিমেষে।
ফাল্গুনী এই
অবুঝ বেলায়
গান গেয়ে যায়
একলা চাতক
মন উদাসী।
শুকনো পাতা
ঝরার বেলায়
হেসে বলে
গাছকে ডেকে
এবার আসি।