বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬

শর্মিষ্ঠা গুপ্ত




 শর্মিষ্ঠা গুপ্ত


ফেরা
 কোনো এক প্রত্যুষে
 অথবা কোনো প্রদোষে
 মেঘমালায় ছড়িয়ে পড়ে
 অপূর্ব রঙীন আলো
 ছায়া ফেলে প্রাণের জলাশয়ে
 সমস্ত উচিত - অনুচিতের দ্বন্দ্বকে দেয় ঢেকে
 লেখা  হয় নাম
 চারিদিকে কত না দ্বিধা  জীবনের জটিলতা
 অন্ধকার থেকে ফিরতে চায় আলোয়
 সারাদিনের সঞ্চয় বুকে নিয়ে
 যেভাবে পাখীরা ফেরে কুলায়
 সেই দুরন্ত চিলের ডানায় ভর করে
 মন বেড়িয়ে পড়ে ঘরছেড়ে সূর্যোদয়ের পথে
 ঘরের স্বপ্নে বিভোর হয়ে ফিরে আসে সূর্যাস্তে।





 বিস্ময়
 ভারী বিস্ময়  এ জীবন
 অনন্ত জল
 পূর্ণিমার চাঁদ পড়ে থাকে যেখানে
 কুয়ো নয়, সাগর
 আমি ভেসে থাকি সেই স্রোতে
 অমাবস্যার রাতে
 জোছনাকে বুকে করে
 অপেক্ষা করি আরো এক পূর্ণিমার
 একটা গোটা শুক্লপক্ষ  ধরে।





 সৌরভ
 পুষ্প গালিচায় সুরভিত নয়
 এ জীবন -পথ
 তাতে কি কিছুই এসে যায়?
 দেখোনি শিউলি ঝরে পড়তে থাকে
 কাদা সব মেখে নেবে বলে-

 আমার পথেও তো তুমি
 রোজ রেখে যাও তোমাকে
 আঁজলা ভরে নি তুলে
 জীবনের সুঘ্রাণে।

 মূলস্রোতে বহমান নয় মন
 আবহমান ব্যথাই সম্বল
 আমার বিষের দায় নেবে তুমি
 এতটাই চাও আমায়?
 অর্থহীন এ জীবনে এসেছিলে বলে
 জন্ম-জন্মান্তরের সখা তুমি হয়ে গেলে

 তোমাকে তাই হারিয়ে ব্যথা পাই
 তবুও হারাই বারে বারে।





 ধরে রাখা
 ভালোবাসা- কুমোরের চাক
 মনের বহর বেয়ে চলে ওঠানামা
 অপূর্ব কারুকলা যত গড়ে ওঠে তারা
 সেই চাক এ
 কি দারুণ মমতায় ধরে রাখা
 একতাল মাটির মন্ড নাকি
 কিছুটা মাটির পিন্ড.........???
 শরীরের প্রতিটি খাঁজ আকার পায়
 তুমি ধরে রাখো আমায়

 আর আলতো আলতো ছোঁয়ায়
 তৈরী হয় লাবন্যবিভা।





 প্রত্যাবর্তন
 সমুদ্র  তোর জলের ভাষা
 ডুব দিয়েও  তল খোঁজা কি যায়?
 শুধুই তাই ভেসে থাকা
 শুধু ছুঁয়ে থাকা
 আমি তো আছি থাকবোই
 বন্দর যায় না কোথাও
 নাবিকই তাকে যায় ছেড়ে
 তরীতে বন্দরে হবে ছলাত ছলাত কথা
 সমুদ্র শুধু শুনবে
 আর সমুদ্রই বুঝবে
 সূর্যডোবা আর সন্ধ্যাতারার উঁকিঝুঁকি
 অবিশ্বাস্য এই সংযোগ
 ঐ পশ্চিম আকাশের দিকে তাকাও
 দেখো তার ঠিক  নীচেই আছি আমি
 বিশ্বপ্রকৃতির  নির্ঘন্টে আমার শরীর জুড়ে
 চলে আলোছায়ার খেলা
 আর জীবনের ছায়াপথ চিনে চিনে
 ক্রমশ দূরে আরো বহুদূরে

 নাবিক তুমি মিলিয়ে যেতে থাকো
 নতুন কোনো ব্ন্দরের তরে।