কচি রেজা
জলেশ্বরী
এক
এক একদিন নীরবতা চঞ্চল হয়ে ওঠে , ধ্বনি আর দৃশ্যের
অভূতপূর্বতা নিয়ে ! নদীর পাড়ে সন্ধ্যার ছায়া কিভাবে নেমে আসে ! সেইসব অচেনা
অন্ধকার চেতনা কেড়ে নেয় ! রাতের ঘ্রাণে অনুভব করি দিনের উদ্ভাস , ফলে আমাকে অনুবাদ করতে হয় নিজের ব্যাক্তিত্বের !
আর কো্ন স্বপ্ন আছে যেখানে আমি যেতে পারি ! নাহয় পিছন ফিরে ছুঁয়ে দিয়েছি
তৈজসপত্র ! তবু মেনে নিতে গিয়ে দেখি , মেনে নিতে পারিনি নিজের
ঘোড়ার পাথর হবার তীব্র চিৎকার !
দুই
আমার পরাজয়ের ভঙ্গী হরিণের মত , তিরবিদ্ধ সঙ্গীতের মত ! কেউ
প্রণাম করলে একটি বৃক্ষ বেঁচে ওঠে , এক অপরাভব সেলাই যুক্ত হয়
নদীর সাথে ! কতদিক থেকে ছুটে আসা তির আমি এভাবেই রুখে দিই কীর্তনের ভঙ্গীতে !
তিন
আমাকে আমার ব্যর্থতা দেখতে দাও ! পরাজয় কিভাবে চোখের নীচে কালি হয় , দেখতে দাও ! গাছের কাছে শিখেছি আস্তিন পেতে রাখা ! যেন উড়ে
এসে বসতে পারে পাখি ! বিষন্নতা শিখেছি রাস্তার ল্যাম্প পোষ্টগুলোর কাছে ! আবার
ব্যর্থ হতে চাই আমি আর চাই চোখের নীচে অনিদ্রা জমে থাকুক বাতিগুলোর কালির মতো !
চার
পুরানো কথার সামনে তুমি তো স্থির থাকতে পারো ! সেদিনের দুপুরটি মনে করো , তোমার সামনেই পাথর হচ্ছে তোমার ঘোড়া ! আজ ডুবি যদি , কেউ কি শুনতে পাবে জোড়া পাঁজরের কথা ! বার্চ জঙ্গলের ভিতর
থেকে উঠে আসছে নগ্ন শীত ! আর পাহাড় ডিঙচ্ছে যে অন্ধকার তাতে কি প্রমাণ করতে পারব
নির্জনতা ! অসঙ্খ্য অপ্রমাণিত দহনের মত অন্ধকার ও প্রমাণ করতে পারিনি আমরা ! আঘাত
করে জেনেছ তো পাথর ভাঙার প্রক্রিয়া ! এবার আমাকে ভাঙো ! আবার ভাঙো !
পাঁচ
বালিহাঁস নেমে আসছে , আমি ফুঁপিয়ে উঠে খানিকটা
সন্ধ্যা ছিঁড়ে নিচ্ছি দাঁত দিয়ে ! জলে হাঁস ছেড়ে ঘরে ফিরে গেছে মা ! পার হয়ে শাপলা
, পানি ফল আর কাচের মাঞ্জা ! সেইযে বাঁশি শুনে
বেরিয়ে পড়েছিল নীরজা আর ফিরে যায়নি ভাঙা খিলানের নীচে দাঁড়ানো মেয়েটির কাছে ! কত
সূর্যাস্ত ঝরলো , গাল রাঙালো কত নীলকন্ঠ
ফুলের আভা ! তারপর , আজ বোধ হয় মৃত্যুর পঞ্চম
দিন ! ফিরে আসি যদি তুমি এড়িয়ে যেয়ো এক অচেনা মানুষ ভেবে ! সমস্ত সম্ভাবনা পালটে
এই অসুখ জন্মের উপর বিছিয়ে দিও একটি পাতা ঝরা পথ !