শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭

পৃথা রায় চৌধুরী



পৃথা রায় চৌধুরী

পিছুডাক

তোকে অনেক কথা বলার ছিলো
প্রচুর কাদা মেখেছিস সারা গায়ে
সামনে ঘুরেছিস বেপরোয়া
ভেবেছি আটকাই, বলি স্নান করে হ' পরিষ্কার
দেখ, তোর কাদায় মেরুদণ্ড সোজা নেই আমার|


এখন বিকেলের গলায় ভীষণ কষ্ট
শরীর জুড়ে কাঁপ
শহরের বন্ধ ঘেরাটোপে সমুদ্র|


তুই আজও একবার পেছনে দেখলি না?
দেখলি না, তোর ফেলে যাওয়া গেটে
তেলচিট কপালের নিচে ধেবড়ে যাওয়া কাজল
মাখামাখি ঘামে ভেজা চুলের রাশে;


তোর নেমে যাওয়া সিঁড়ি ধরে
দরজায় পৌঁছাবার রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি
আগুন ওগরানো অন্ধকারের জ্বর...
প্লীজ, একবার পৌঁছে দে...!




হিংসুটে

কেন ঘুমোলি? ঘুমিয়েছিস কেন না বলে?
চৌকাঠের এপারে বসে থাকি
খেয়াল থাকে না তোর?


কতো খারাপ খারাপ কথা বললি...
কেন বললি? অতই খারাপ বুঝি?


গরমে হাওয়া নেই তোর ছাদে
এপারেও দমবন্ধ...
ওপরে নাকি তিন থাক পলি
ব্যস, চোখ পাকানোর অজুহাত!


ওই দরজার ওপারে যাবি না
গণ্ডি পেরিয়ে তোর ঘুমের পাশে যেতে পারি না,
তবু তোর ঘুম হোক নির্লজ্জ নিষিদ্ধমুখো|


পাগলি সারারাত একাই বকে বকে ভোর এনে দিলো
তাও জাগিস নি, পাখিরা হতবাক;
রোববার... তোর সাথে ফাটাফাটির দিন!


কেন ঘুমোলি বল, না বলে?
বল কেন স্বার্থপরের মতো স্বপ্নগুলো একা দেখলি?




সেভাবেই থাক...

এখান যা, ওখান দেখ
আতশকাচের পর্দায় রাখ আকাশ
শেষের সেদিন ছায়া
সাঁঝবাতিতে ভেসেই যাবে বাতাস।


তোর কয়েক পায়ে সব
চিনি তোকে বকাঝকায় তোর
চুল্লি খুঁজিস উড়ো খই?
তোকে গা ঘিনঘিন ভালোবাসি ঘোর।





ক্রমাগত স্বর্গীয়

ঠিক এমনি করেই একদিন
অবধারিত মেনে মেনে জঘন্য হবো,
সমস্ত চেনা মুহূর্ত চোখের পাতায়
গাঢ় কাজল হয়ে হঠাৎ বয়ে যাবে
সামান্য গায়ে পড়া কালো সমুদ্রে।


কিছু ডাকাবুকো ওমনি ছিলাম
গুলমোহরের হলুদে মিশে একাকার;
জেগে নামে ছায়ানট ধরে
আলগোছ শিখে নেবার সুখ সুখ
উড়ে যাওয়া বিচ্ছু খই।


দেখো জাহান্নাম, কেমন
আমি টুকরো কুড়িয়ে
নাগাড়ে বিসর্জন দিয়েছি...
ভোরডোবা মরুঝড়ে,
অচেনা, তোমার সন্ধানী।




একান্ত

বদ্ধ দুপুরে খামখেয়ালি,
পলাশ সাজিয়ে ডাক দিয়ে
বলেছিলে, ঝড় চাও, নাকি চাও
দমকা হাওয়া? উত্তরে শুধু
তোমাকে চেয়েছি বারবার;


তোমার সব এলোমেলোয়
নিজেকে ভাঙতে বসেছি,
শেষবার...


শোন কোকিল, তোর কুহুতে
সব পাঁচকান করিস না।