শোভন মণ্ডল
মেট্রো
ছাতা বন্ধ করে ব্যাগে
ঢুকিয়েছো
লম্বা লাইন, মেট্রোর কাউন্টার
দুরন্তগতি, পাঁচ
মিনিটে সাফ
তীব্র নিরাপত্তা, ব্যাগ
তল্লাশি
ছাতা, মানিব্যাগ, আর যা
যা থাকে আর কী!
সামনে সিঁড়ি আর এসকেলেটর
কীভাবে যাবে ভাবছো...
বন্ধু
অমিত আর আমি একসাথে কলেজে
যাই
কলেজ কেটে দু'জনে
ম্যাটিনি শো
একই খাবার ভালোবাসি খেতে
একটা সিগারেট ভাগ করে
খাই
আমাদের একটাই কষ্ট
আমাদের কোনো বন্ধু নেই
সস্তা
একটা মেলার ভেতর থেকে
হেঁটে যাওয়ার সময়
তেমন কিছু মনে ধরেনি
সেই পুরনো দোকান, মনিহারি
জিনিস
গ্রাম্য-খাবার আর
নাগরদোলা
তবে ফেরার সময় খুব
সস্তায় পেয়েগেলাম
একটা ভালোমানুষের
মুখোশ...
রাতের বেলা ছাদে
রাতের বেলা ছাদে পায়চারি
করার সময়
একটা রোগাসোগা কঙ্কাল
এসে হাজির
বললো, চিনতে
পারছো ?
আমি তোমার দেশবাড়ির
রামুকাকা
আমি বললাম, চিনতে
পারছিনা
মাথা নাড়তে নাড়তে মিলিয়ে
গ্যালো কঙ্কাল
পরেরদিনে আরেকটা কঙ্কাল
বললো, আমি তোমার বিষ্টুপুরের পিসেমশাই
আমি বললাম, কই চেনা যাচ্ছেনা তো !
প্রতিরাতে একজন করে
কঙ্কাল আসে
আমি চিনতে পারিনা
ওরা মাথা নেড়ে চলে যায়
এই ক'দিন
ধরে অনেক ভেবেছি
কিছুতেই মনে পড়েনা আমার
পুরনো গ্রাম পুরনো সম্পর্কগুলো...
যুগান্তর
তিনশো বার তোমার নাম জপতে জপতে একটা নদী, দুটো
হ্রদ, খানকয়েক পাহাড় পেরিয়ে যখন প্রবেশ করেছি এই শহরে তখন তুমি দ্যাখা দিয়েছো অচেনা
পোশাকে নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত ভঙ্গিতে বন্ধু-বেষ্টিত কফিকর্ণারের একান্ত নিঝুম
টেবিলে। মায়া-কাজল আছে অদৃশ্য মুকুট আছে, রাজকীয় চাহনি ধরা দ্যায় ও চোখে।
তোমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছি,
ভুলে গ্যাছো ,ভুলে গ্যাছো, সত্যি
ভুলে গ্যাছো সবই। কী করে বোঝাবো শকুন্তলা ! এ যুগের দুষ্মন্ত এসেছে তোমার কাছে...