তৈমুর খান
জাগরণ সার
___________
ঘুমের ভেতরে কবে জাগরণ
এসে গেছে
এত অশ্রুর ফুল ফুটেছে
বিছানায়
কাকে দেখাব বেদনার তুলো
উড়ে যাচ্ছে বাতাসে !
সূর্য সকাল পাখি সব
আয়োজন মাঠ জুড়ে
পাহাড়ি রাস্তায় মেঘ
নেমেছে নীল ফ্রকে
দ্রুত সভ্যতার যান সাপের
ফণার মতো
এগিয়ে চলেছে কোথাও
কোনও উদ্দেশ্য জানি না
আমি
কারা কোন্ চাবি দিয়ে
বিকল্প দরজা খুলে
ভেতরে গেল
আমার শুধু জাগরণ সার
নবজাগরণ আজও এল না
ঘরে !
ইচ্ছার ভেতর জন্ম আমার
_______________________
আড়ালে আড়ালে চলে
যাচ্ছি
পরিচয় হল না, পায়ের
জুতো ছিঁড়ে গেল
এক হাতে ছাতা, সামনে
বৃষ্টি এল
বজ্রগর্ভ দিন, একটি
বর্ষাকাল
কোথায় চলে যাচ্ছি, জানি
না
রাস্তাগুলো তাকিয়ে আছে
নিবিড় আহ্বানে
আমার সঙ্গে কোনও মানুষ
নেই
হাওয়া যাচ্ছে সঙ্গে, শুধু হাওয়া
আমার আমি ভেঙে টুকরো
টুকরো
পতাকা হয়ে উড়ছি আকাশে
এইতো জীবনের জয় ঘোষণা !
ইচ্ছার ভেতর জন্ম আমার, বারবার
যাহা বলি
__________
এতসব আগুনের সর্প
আমি কথা বলতেই পারছি না
কোনওদিকে পালাতে পারছি
না
সব রাস্তাগুলিতেই নেমে
এসেছে কালো ছায়া
বৃক্ষগুলি রক্তবর্ণ
ধন্য ধন্য করছে সবাই
কারও কাছে গিয়ে দাঁড়াতে
পারছি না
সবাই সর্পমানব আর
সর্পমানবী
সভ্যতার গর্তে গর্তে
আগুন জ্বেলে জেগে আছে
ধ্বনি প্রতিধ্বনিময় সময়
ঘণ্টা বাজিয়ে যাচ্ছে
চৈতন্যে সবার
একটা কণ্টকিত বেদনার
সান্নিধ্য ছাড়া
কোথাও প্রশ্রয় নেই
পৃথিবীতে আমার
আলোর প্রতিমাকে
__________________
সামনে, যতদূর
সামনে যাওয়া যায়
যতদূর আলোরা প্রতিমা
বানিয়ে রাখে
ততদূর হেঁটে যাই একাকী
নৈঃশব্দ্যের তরবারি ঝলসে
ওঠে
খান খান ভেঙে পড়ে আদিম
হইহল্লারা
দুয়ার খুলে ডাক দেয়
স্তব্ধতার হাসি
তখন একবারও পেছন ফিরে
তাকাবার ইচ্ছা করে না
নিজেকে নতুন মনে হয়
কাগজের নৌকারা ভাসতে
থাকে
আর হালকা নরম মেজাজ
ভাসিয়ে দিই
আলোর প্রতিমাকে পদ্ম বলে
ডাকতে ইচ্ছা করে
জলের কলে গান থেমে আছে
হয়তো
________________________________
সম্ভব হচ্ছে না কিছু আর
দুপুর গড়াচ্ছে রোদ মেখে
পিপাসা লুকিয়ে রাখছে
নিদান শরীর
বাতাবরণ নেই কোথাও তেমন
তার
অংশত জানালাগুলি
অনুসন্ধানের মুখ
ক্রমশ হারাচ্ছে বিবর্ণ
উৎসবে
অযথা অযোগ্য সব
বিজ্ঞাপনের কলরবে
ছুঁড়ে দিচ্ছে জৌলুস
ধাঁধার ছায়ায় এসে মূর্খ
অভিলাষ
নিজেকেই পুড়িয়ে দিচ্ছে
উড়িয়ে দিচ্ছে সব মৃত
হাঁস
জলের কলে গান থেমে আছে
হয়তো
অযথা মিথ্যা প্রণয়ের
চূর্ণ উল্লাস