রঞ্জনা রায়
খেলা
খেলবো বলে তোর সঙ্গে
মেতেছি খেলায়
স্বচ্ছ বর্ণালী ছায়ায়
তুই রূপসী ইছামতী
ছুটে বেড়াস যেন নিঃশব্দ ছন্দের উপমা।
সাগর নিভৃতে অপেক্ষায়
ক্রান্তিকাল -
স্ফুটনাঙ্কে চঞ্চল মোহময়
দ্রাক্ষামধু
তোর কলাবতী রূপের কথা
শোনায় ।
এখনো আসেনি জাদুকরী বর্ষা
ঋতু
গত বর্ষার বিগত মেঘেরা
জানিয়েছে
তাদের সংগোপন বালুচর
ব্রতকথা ।
তোর বৃষ্টি হয়ে ওঠার
খেয়ালী খেলায়
কৃষ্ণচূড়া কুট্টিনি বেসে আবির ছড়ায়
জুঁই ছড়ায় কৃষ্ণ মিলনের
গুপ্ত সুবাস ।
আমি ও সাজাই একান্ত
আমারই ঘর্মকলি
খেলা শেষের খেলায় আজ
বাজে হংসধ্বনি
স্যাণ্ডেল
প্রতি পদক্ষেপে হোঁচট
খাই
সেফটিপিন টা হারিয়ে গেছে
স্যান্ডেলের স্ট্রাপে
এবড়ো খেবড়ো রাস্তা, হাটতে
হবে বহুদূর
বলেছিলে ছায়া হবে লাল
পাথরের আশ্রয়ে
বলেছিলে শিউলি ফোটাবে
শাড়ির ভাঁজে
তেপান্তরের ওপারে ছবির
মত বাসর ঘর
আজ ও আঁকা চিড় ধরা মনের ফাটলে
স্বপ্নেরা হারিয়ে যায়
পেঁজা মেঘ পেঁজা তুলো
হাঁটতে হয় রোদে ক্ষত আর
রক্তের বুনিয়াদে
জানি তুমি ধরবে না হাত
এখন আমার হাতে নেই
মহুয়ার মাদক সুবাস
ছেড়া ফাটা জোড়ভাঙ্গা
বিবর্ন স্যান্ডেল আমি
রাস্তার বুকে লিখেছি
আমার ক্ষয়ের ইতিহাস
মেঘ স্বপ্ন
মেঘ মেঘ স্বপ্ন কুড়িয়ে
নিল ভোরের আলো
পাতাবাহারে ঝলমলে রোদ
মুছে দিল রাতের কালো
জোনাকিরা ঘুরে বেড়ায়
এঁটোপাতের অন্ধকারে
রাতের চোখে জোয়ার এলো
নষ্ট চাঁদের অভিসারে
মাইলফলক ক্রমান্বয়ে লিখে
চলে দূরত্বের হিসেব
চেনা অচেনার মাঝের
দরোজায় বসে রাত্পাহারা
ক্ষণকালের কৌটায় জীবনের
অবাক জলপান
বহ্নি সে তো বন্ধু, মাটি
অন্তিমতার নরম
প্রশ্রয়
মনের খবর
নিষেধ গুলো জমিয়ে রাখি
খিল তোলা এক বন্ধ ঘরে
ওড়ার নেশায় মনের রাখি
পরিয়ে দিলাম নদীর চরে
লক্ষ টাকার হিরের কলস
যখের ধন মায়ার খোলস
ছাড়বো সব পথের খোঁজে
বিদায় বাঁশি উঠছে বেজে
একলা দুপুর রোদের ঢেউ
মনের খবর রাখে না কেউ
শরীর জুড়ে চৈত্র বাতাস
বসন্ত আজ নীরব উদাস
উদাসী মন
তোমার সুর বাজে এই
সেতারে
তখন ও চাঁদ ওঠে নি
সিন্ধুপারে
তবু বাতাস হলো এলোমেলো
বললো এসে দরজা খোলো
আঁচল আমার উড়লো হওয়ায়
সেই মুহূর্তের নিবিড়
পাওয়ায়!
পাওয়ার মাঝেই সব হারালো
আগুন নেশাই রাতের আলো
দিনের খেয়ায় বাজছে সানাই
বন্ধু তোমায় আদর জানাই
ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ উঠেছে
পূর্ন আলোয় চাঁদ সেজেছে
একুল ওকুল দুকূল জুড়ে
জোয়ার আসে হৃদয় পুরে ।
ঘরের মাঝেই ঘরের তলাস
বন্ধু বিনা মন হয়েছে
উদাস।