নুরুন্নাহার শিরীন
কার্তিকের জলছবি
******************
এক।।
একদা এখানে রোদমাখা
কণ্ঠস্বরে
মেঘরঙ কবিতার কথামালা
পড়ছিলো ঝরে।
তাহার দুচোখ হতে তুমুল
আলোক হেসে
লেছে আমাকে 'দেখো
কার্তিক এসেছে এদেশে।'
আমি অসীম আবেগে দুচোখের
জলে
হৃদয় ভাসিয়ে দিয়ে দেখি
কবিতাকাশ চরণতলে।
এই নাহলে এমন দেশটি
কোথাও কী আর পেতাম
যার এপারওপার জুড়ে জোছনা
খচিত গ্রাম।
যেথায় ঘুমোয় পাখি আর
নদীময় মাঠ ও মানুষ
ছায়াময় মায়াময় পিছুটানে
উসখুস।
দুবেলা দুমুঠা ভাতে
ভাতঘুম আসে ...
এমন দেশটি আহা বেঁধে
রাখি হৃদয়ের পাশে।
দুই।।
হয়তো কবিতা নয় অন্য কোনও
কথাদের সনে
কার্তিকের গন্ধে ঘুম
আসেনা উদাসী নীল বনে।
দুপুরবেলা কাহার তরে মন
ছমছম করে ...
সন্ধে বেলার ডাক মেঘের
মতোন ঝরে।
তখন কী আর জলের মতোন আর
কিছু সুর লাগে।
তখন গভীর দেশটাকে মায়ের
মতোন লাগে।
]
তিন।।
কী জানি কী গান
প্রাণ জুড়ে দেয়
টান।
হয়তো সে প্রেমের অধিক
গান।
তাহাকে আমি যে বলি
শিশুমতি পিছুটান।
আমার প্রাণের চেয়ে
প্রিয় তাহার মুখের পানে
সারাবেলা থাকি চেয়ে।
চার।।
চতুর্দশী দিঙদোলানো
দিনগুলি ধায়
গভীর রাতের গাঁয়ে
স্বপ্নস্বর্গ ভেসে যায়।
কেবল চাঁদের ছায়া চুরমার
ঘোলাটে বাতাসে
ঘুমহীন দেশজ কবিতা
আসে।
সে আসে শ্যামল পায়ে
মায়াবী রূপালি
নায়ে।
আকাশপাতাল এক করে
সে আসে পাতার 'পরে।
পাঁচ।।
অতঃপর আমার যত নিঃশেষিত
এষণা ঘুরে
হাজার কালের নেশা
উড়ে।
হাজার অলিগলির আলপিন
ফুঁড়ে
সুদূর আহত হাত শুশ্রূষু
জীবনের পথে উড়ে।
যে জীবনের অশেষ অজানিত
গান
আমাকে করেছে ঋণে আনচান।
কত কী ঝণের বোঝা বয়ে
যাই
তবুও হৃদয় হতে হৃদয়ের
গান গেয়ে যাই।