রীনা
তালুকদার
আইফেল
টাওয়ার
দেখা হলে জ্বলে উঠি।
ফোরফট্টি ভোল্টেজ
ছুঁয়ে দ্যাখো বিদ্যুৎ
উৎপাদিত হচ্ছে
হৃদয়ের নিউক্লিয়াস
জালানি চক্রে পারমাণবিক রিএ্যাক্টর
স্পর্শতাই ‘র’ ম্যাটেরিয়ালস
তারপর বিক্রিয়ার ইয়েলো
কেক চোখা চোখিতে
রূপান্তরিত হচ্ছে
ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইডে
করতল কাঁপে পরশে আবেগের
আবীর সমৃদ্ধ সেন্টিফিউজ
দু:খের দুর্বলতার
ডিপ্লিটেড অংশ বাদ রেখে
তৈরী হতে থাকে
মিশ্রণ
মাইনিং ও মিলিং, কনভারশন, সমৃদ্ধকরণ, দ-
ফেব্রিকেশন
আর রিএ্যাক্টর কোরে
ফিশান তারপর বার্ণআপ ...
একবার তাপলে পার করে
চল্লিশ বছর
রাখবে কোথায় কোন
কেনিষ্টারে ?
কৌটা ভরে ভেবে দ্যাখো
চল্লিশ পেরিয়ে আসা
ষ্টেশন
পঞ্চাশের কৈলাসে ধাবমান
যতই দেখা ততোই একরোখা
কোকিলের বাহারি তান
ড্যাবডেবে ডুমুরের ফল
রংধনু রঙে
পরিপক্ক বৃক্ষের জমকালো
দিন
পাছে ট্র্যাফিক জ্যাম
মোড়ে মোড়ে রেড সিগনাল
ছুটছে ল্যান্ড ক্রুইজার
বেপরোয়া গতি
সার্জেণ্ট বেহাল, বাঁশির
সাইরেণ
লক্ষ্য একটাই আইফেল
টাওয়ার।
ফটোগ্রাফার
তুমি একজনই ফটোগ্রাফার
যে আমার হৃদয়ের ছবিটা
ঠিক ঠাক তুলছে পেরেছো
আর অন্যরা কেবল সাইট ঠিক
করতে করতে
বছরকে বছর নষ্ট করেছে
অহেতুক।
শতাব্দীর
শঙ্খ দুয়ার
সব পরিপূর্ণতার ভেতরও
থাকে
অপূর্ণতার কিঞ্চিত ছায়া
না হলে কেন পারেনি মন
রুখে যেতে
কেন তবে সার্বজনীনকে
নিলো
কোমল হৃদয়ে তুলে
যার প্রয়োজন নেই
না এ ঘরে না ও ঘরে
কোলাহল মুখর বিশ্ব
সংসারে
সকল নির্মল সুরের ভেতর
দিয়ে
মূর্তমান হয়ে ওঠে বিমল
আরতি
ব্রীড়া বিসর্জন দেয়
মুক্ত বিভু
মাঙ্গলিক সৌহার্দ্যের
দেবালয়ে
শঙ্কর লৌল্য রাখে সংযম
খুলে দিয়েছে শতাব্দীর
শঙ্খ দুয়ার
শনৈ: শনৈ: দৃষ্টি রাখে
শর্ব
শাহানা রাগে বিচঞ্চল
কাঁচুলি
ভেষজ পঞ্চলিকায় নোনতা
পান্ডব
ধীরোদাত্ত ঠমকে ছোঁবল
হানে
নিশুতি জোছনার রঙিন
চোখে।
অবাধ
অনলের আঁচে
অবশেষে করনি বিশ্বাস
তুমিও
খেলছো অনর্থক দাবাড়– খেলা
প্রয়োজন ছিলনা আর্মন্ড
ট্যাঙ্ক আচরণ
ভালোবেসে তোমার সাথে কি
তবে
এই ছিল চির চেনা চোখের
ভাষা
ভাগ্য বিশ্বাস করিনি
কোনোদিন
ভেবেছিলাম ভবজগতে কর্মই
মানুষকে
নিয়ে যায় সুদূরের বর্ণিল
ইতিহাসে
আই লেজার রশ্মিতে
রোমান্টিক ব্যাধির আক্রমন
বিভীষণ ঝড়ের গতিমুখ মন
বোঝেনি
প্রতিদিন ক্লান্ত
বিকেলের আকাশ
প্রভাত সূর্য সিঁদুর পরে
আড়াল হয়
ঘূণপোকা আগুন এতটা
পুড়েছিল কবে
-লোলিত পাঁজরের মুক্ত বারান্দা
কত কাছাকাছি থেকেও টের
পাইনি বিন্দু বিসর্গও
মধ্যরাতের স্বপ্নরা
বিকলাঙ্গ পায়ে হেঁটে যায়
হতভাগ্য বিশ্বাস
চৌরাস্তার মোড়ে ভ্রুকুটি হানে
ভালোবাসা অবাধ অনলের
আঁচে
কেন তিল তিল পুড়ে মারো
অনন্ত পোড়া হৃদয়কে
সেইতো তবে ভাল
দাও এই জিভে তুলে হেমলক।
চোখ
রাতের নির্জনতা একটু
একটু করে
এগিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার
গহবরে
সোডিয়ামের আলোতে অসহ্য
সুন্দর
তোমার ময়না পাখি দু’চোখ
ঋজু ভঙ্গিতে;
আমার উজ্জ্বল হাসির
মুখোমুখি
মোটরগাড়ি গুলি মালিকদের
অক্লান্ত সেবা দিতে দিতে
এখন জমি চষা ষাঁড়ের
ক্লান্তি নিয়ে গ্যারেজে ঝিমোচ্ছে
ও চোখ এত সুন্দর সেদিন
মোটা ফ্রেমের চশমাটা
না খুললে অদেখাই থেকে
যেতো
পথের কোলাহলে স্থানীয়
লোক ভিড়হীন
অলস হাঁটা হাঁটি কেউ
চেনে না কাউকে
কেবল তুমি আমিই চিনি
দুজন দুজনকে নিবিড়ভাবে
তবু তোমার সুদূর গন্তব্য
নিয়ে যায়
এ স্টেশন ছেড়ে শেষ
স্টেশনে ...
তাকিয়ে দেখি যতদূর দেখা
যায় দূরে ....
সূতোহীন বন্ধন চোখের
পলকহীন সীমানায়।
সুখের
খোঁজে
অসীম দুঃখে বুক ভাঙলেও
এখন আর রা করি না
জানি তুমি একজন আছো
সমুখে
নির্ভর আঁচল পেতে দুঃখ
নিতে ;
যত ঝড় ঝঞ্ঝা আসে আসুক
নির্ভয়ে দুর্গম পথ চলি
দুঃখরা যায় ধূসর মেঘের
দেশে
পেঁজা তুলোয় হাওয়ায় ভেসে
ভেসে
রাত্রিভেজা ঘাসের উপর
শিশির হয়ে ঝরে পড়ে
অতল জলের নীল কষ্টরা
অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয়ে
নামে সবুজ ধানের শীষে
নদীর জলে মিশে মিশে
বাষ্প হয়ে উড়ে গিয়ে
ফিরে আসে বৈশাখী গান
গেয়ে
পাপড়ি ভেজা চোখের তারায়
নোনা জলের পদ্য লিখে
গদ্য হয়ে দিচ্ছে ধরা
তোমার নক্শী আঁচল ভাঁজে
দুঃখ আমার তোমার বুকে
সুখের বাসর খোঁজে।