বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

রুমা ঢ্যাং অধিকারী





রুমা ঢ্যাং অধিকারী
নীলচোখের কথা

এইখানে চাঁদ দণ্ডি কাটে, বেড়ায় মুড়ে
ব্যালকনির বাড়তি রং নিয়ে দাঁড়িয়ে 
        আজকের ভাদরমেঘের বৌ বৌ সাজ
কিন্তু একটা প্রতীয়মাণ পথে সন্ধেদাগ বসে যায় যখন
খুব বেশি নীলচোখের কথা মনে পড়ে
 তাই অনুভবে রোজ গোবর সার দিয়ে চলেছি
স্পর্শকাতর কালি মুছতে
এখন ব্লেড ও ইরেসারের মধ্যস্থিত ধ্রুবক
           কামানে চাপিয়ে রেখেছি
আপাতত ব্রিজগেট ছাড়িয়ে যেতে চাইছিলাম
ধোঁয়ালি শহরের মায়া অতটা আকর্ষক নয়
       বাতাবি লেবু যতটা মোহ দিতে পারে




শব্দ ছোপান গান

আমাদের পাড়া ব্লারড পোশাক পড়ে নিলে
       কানের ফুটো থেকে দুলদুটো দুলে ওঠে
আর দেহের অংশে জুড়ে যায়
                        সন্ধের  পাখিরালয়
তখনও জলের সহচরী হাওয়া পর্দা ঠেলে
                    বাজিয়ে চলেছে শব্দ ছোপান গান

পড়তে বসে মেয়েটি ক্রিয়ার ব্যকরণ ভুল করে
 তাকে ছুঁয়ে গড়ে ওঠে শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপন
  এবং হাঁটুমুড়ে বসে চালচুলোহীন দীর্ঘশ্বাসের প্রতীক্ষা

     


খামহীন অক্ষর

উড়োচিঠির কুঠুরি জুড়ে জুড়ে
                      গড়ে উঠছে একটা শরীর
শোনা কথার টানেল থেকে
     উঁকিঝুঁকি দিয়ে বেরিয়ে আসে যে রুমাল
              সেখানে বোঝাও একদিন ভারহীন হয়
কিন্তু খামহীন শব্দগুলো
              বাড়িয়ে দিচ্ছে আমার ওজন
নুয়ে পড়ছে চেনা মৃত্যুযোগ

 পাখি উড়ে গেছে
 তবু আমার খাঁচার অক্ষর এখনও হাইফেনে থেমে
ছোপ ছোপ সিরামে যোগফল বর্তমান
 যদিও আঙুল চিরকালীন অবাধ্য
যাকে চোখের সামনে ধরে থাকার কথা
             বলা হয়েছিল




হট্টগোলের শহর

 গলে গলে যে ঘর
          দেয়ালের ছায়াশরীর থেকে পড়ছে
তুমি সেই ঘ্রাণে  মাংসাশী হয়ে উঠছ
এবং মাছের পিঠে ঠাঁই পাতা কবরখানা
                       তোমায় তার শ্রমিক বানাচ্ছে
কিন্তু মৃত সাঁকোর পাশে
কাউকে আসন পেতে রাখতে দেখেছ !

গর্ভতলে জীবন পোঁতা হলে বোঝা যায়
           একটি জড়ুল দাগে পর্যাপ্ত নয় জোয়ার জল
যদিও সন্ধ্যা হলে নিকেতন ধূপ-সুবাসিনী হয়
        আর তৃতীয় কোন নয়নমণি ফোটে
দিনজাগা চাওয়াগুলো এখনও সরবতপান করতে চাইছে
আর আমি জলের গায়ে চাবুক মেরে
                          গভীরতার সন্ধান চালাচ্ছি
পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে হট্টগোলের শহর

নরকেশরীরা শাদা পাতায়
          দেখাচ্ছে কতটা মার্জারিন ঘরে ছিল
আদাজল খেয়ে তারা টাঙিয়ে দিচ্ছে
           হাতুড়ি পেটা পেরেক প্রদশর্নীর নখ, দাঁত...




ক্রিয়াজাত পতঙ্গকাল

বাগবিতণ্ডার নিচে
        ওৎ পেতে থাকে পুড়ন্ত দুপুর
তাকে অলিগলি কেটে এগোতে হয় না

কিছু প্ল্যাকার্ড স্তুপাকার নিলে দেখি
সিমেন্টের অরন্যে কেউ আগুন অবয়ব গড়ে
নিটোল প্রবাহে ঝোলাগুড় গলে পড়ে

রাতের বলয়ে বিষন্ন ঘুম
        ছায়াছবির সীমা লঙ্ঘন করতে পারে না
কিন্তু এই যাওয়া আসার বিষদ পথে
          মূর্খতা বাদামখোসার সন্ধ্যা ডাক দেয়

ঠিক কোন বিস্ফোরণে ঘুঙুর প্রদেশের ক্রশিং
     বিমর্ষকালের তা জানা নেই
সূচের ভেতরবাড়ি ছিল আমার
ফাঁকা হোল থেকে দেখা যাচ্ছে
                       ক্রিয়াজাত পতঙ্গকাল