জ্যোতির্ময় রায়
পথ
সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে আকাশ ছুঁয়েছে
প্রতিনিয়ত মাড়িয়ে যাওয়া কিছু দূর্বা ঘাসও।
এদিকে ছিঁড়ে কাঁথায় রাজপ্রসাদ স্বপ্ন হয় রোজ,
হোঁচট খেতে খেতে গিরিখাত।।''কই ঘুম ভাঙেনি তখনও"।।
একটা
রোদ ঝলমলে সকালে তখনও গভীর রাত।।
সময়ও ঠিক চলেছে বেয়ে,দূরে হতে হতে এক আকাশ ওই দূরে।
প্রাচীর ডিঙিয়ে যদি হয় পারাপার।
শব্দবিহীন শব্দ দূষণে মুখোশ খুলেছে আবার।।
অন্য কোনো গানে কিংবা অন্য কোনো নামে তখন
অল্প করে বাঁচে তবুও জীবন্ত কিছু লাশ।
ব্যস্ত সময়ে ইচ্ছেরা বন্দি রোজই,মুক্তির অবকাশ।।
মিথ্যে
জানি আজও কিছু বৃষ্টি ছুঁয়েছে তোমার আঁচল,
জানি আজও কান্না কিনেছে ফুটো টিনের চালে
গড়িয়ে পড়া জল।।
আমিও সেলফোনে ওপারে স্বপ্নকে করছি রোজ
সস্তায় বিক্রি।
জ্বরের শরীরে তুমিও তখন "মা" বলছো
এই "তো বেশ আছি"।।
হয়তো আজ রাতেও আধ পেটে শুকায়নি তোমার
হাসিমুখ।
হয়তো আজও গিয়েছো দিন মুজুরের কাজে,হোক না যতই অসুখ।।
আমিও তখন
ভিড়ের মিছিলে একটা মুক্ত পৃথিবীর
জন্য হাঁটছি।
ফোস্কা হাতে তুমি মাঠে গিয়েছো ফের
"মা",বলছো "এই
তো বেশ আছি "।।
ঘর
প্রতিটি ইট সিমেন্টে স্বপ্ন গুলো পুরনো
আলমারির থাকে সাজানো।
কিছু লাল নীল আবিরের আলপনাতে আঁকা দেওয়ালে
কিছু ভালো থাকার অভিনয় যত্নে সাজানো।।
ততদিনে পশ্চিমের জানালা যায় খুলে গল্প হবে
বলে।।
রোজ ভাত শূন্য হাঁড়ি আঁচলে আগলে রাখে কান্না।
ওদিকে রোজের অফিস ফেরত বাস ট্রামের ভিড়ে
এগিয়ে
যায় আরও কিছু স্বপ্ন,আরো কিছু
কথা হয় দশ ফুট বাই
দশ ফুটের একটা দেশ,একটা
পৃথিবী সাজে ভালো থাকার নামে।।
তোমায়_ভেবে
হয়তো প্রতীক্ষারা বৃষ্টিতে ধুঁয়ে গেছে
পুরোনো দেওয়াল লিখনে।
ভিড় ট্রেনের ব্যস্ততায় রোজের অফিস ফেরত
ক্লান্তি গুলো
জলকাদা পেরিয়ে রাস্তা ঠিক মেপেছে একপা দুপা
করে ফের।
মন খারাপের বিজ্ঞাপনে স্বপ্ন সাজিয়েছে ভাল
লাগার মেঠোপথে।।
ইলেকশন হয়তো শেষ,শেষ দলাদলি ভোটাভুটি ।
দাঁড়িপাল্লায় মেপে নেওয়া মনের ওজন,
অন্যপথ খুঁজেতে গিয়ে চৌমাথা মোড়ে হঠাৎ দেখা।
ততদিনে ভেকধারী সাধুর মুখোশ গেছে খুলে।।
তবুও কিছু রক্তপাত হবে,তবুও
অপজিশনের কুৎসা
নিউজের হেডলাইন অথবা লম্বা চওড়া কিছু কাহিনী।
ওসব কথায় কি যায় আসে বলো ?
রোজ গোপনে একটু একটু করে জলছবিতে এঁকেছি
তোমায় আমি।।
তোমার_থেকে
আর একটু পর দিগন্ত রেখা মিশে যাবে সন্ধ্যার
আকাশে,
তখন ঝিঁঝির ডাকে ছায়াপথ বেঁয়ে পৃথিবীর বুকে
ঝরে পড়বে
কিছু উল্কাও।মেঘের ঘোমটা সরিয়ে হয়তো উঁকি দেবে চাঁদও
তখন।
আর আমি এপথ ধরেই রোজ হেঁটে গেছি তোমার দেশে,
বেনামী চিঠির মতো।।
এদিকে আমার শহরে দুর্ভিক্ষে তখন মহামারী,
ডেঙ্গুতে সাফ গ্রামের পর গ্রাম।
ছুটে চলা ট্রামের ব্যস্ততায় আত্মঘাতী ছেলেটা
একলাই কথা বলে সে আপন মনে,খোঁজ কেউ
রাখে না।
ঠিক একটু একটু করে চলে গেছি আমিও দূরে,
বালিতে মিশে গেছে চুমুর উষ্ণতা গুলো।
ঠোঁটের নিচের তিল সাক্ষী,
আমার শহরে ল্যাম্পপোস্ট আর জ্বলে না
প্রতীক্ষারা আটকে গেছে দেওয়াল লিখনে সস্তায়।।