বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

শীলা বিশ্বাস



শীলা বিশ্বাস

না মানুষ জন্ম
                               

         তীব্র দহনে যদি হারিয়ে ফেলি মানুষজন্ম
 সরোবর আর পরিযায়ী সুখ খুঁজে নেব
 জলের গভীর থেকে খুঁজে আনবো লিপ্তপদ
 হাঁসজন্ম বেছে নেব

গভীর খননের পর যদি বন্ধ হয় গুহামুখ
মাটির নীচে বালিঘর খুঁজে নেব
পৃথিবীর বুক থেকে জল সিঞ্চন করে
ক্ষণজন্মা ফল্গুনদী হব

দীর্ঘ সন্তাপে যদি নিজেকেই হারিয়ে ফেলি
পাথরের বুকে চিরহরিৎ গাছ হব
পাথরচাপা কষ্টের ডালপালা মেলে দেব
         আকাশের ঘন নীলে




অগ্রন্থিত

কি অনায়াসে মাকু ঠেলে সুতো বুনে যাচ্ছ নিপুনতায় নিজস্ব তাঁতে
ফুটিয়ে তুলছো অক্ষরমালা অপরূপ অভিনব কারুছন্দ বিন্যাসে
মৃত্তিকাভুক কেঁচোর মতো চাষের যোগ্য করে তুলছো বন্ধ্যা পৃথিবী
বৃক্ষসম  বিষাক্ত বায়ু টেনে নিয়ে মেলে দিচ্ছ দুঃখভুক শাখাপ্রশাখা
আনন্দবীজ ছড়াও অবিরত সঙ্ঘমায়ায় অঙ্কুরিত জ্ঞানগর্ভ থেকে
তাই তো আজ মহাকাল ইজারা নিয়েছে  অগ্রন্থিত লেখা প্রকাশের


     

বুমেরাং

পথের দুপাশে অপমান ছড়াতে ছড়াতে
বৃত্তাকার পথের এতদূর চলে এলাম
অপমানগুলো চাঁদমারি ঢিবির মতো
দেহরক্ষী হয়ে নিশ্ছিদ্র পাহারায়
তোমাদের হাতে তৈরি ঢাল ভেদ করে
এখন অপমান করতে আসতে হবে এপারে
ব্যর্থ হয়ে নতুন উপায় রপ্ত করেছো
সোজা উপরে ছুঁড়েছ জ্যামিতিক কোনে
কি করে মেঘেরাও টের পেয়ে গেল
তারাও শৃঙ্খলাবদ্ধ পাহারায় একজোট
কঠিন শিলা ভেদ করতে অপারগ
বুমেরাং হয়ে ফিরে গেছে সকল আয়ুধ
শীঘ্র অবস্থান থেকে সরে এসো বন্ধু নইলে....




ভিনগ্রহী

আনসোসাল নেটওয়ার্কে  সিগন্যাল দেখে
অপস্রিয়মাণ মায়াকে ধরে নেমে যাচ্ছি খাদের ভিতর ,
ভিনগ্রহী এসে আমায় তুলে ধরলো
দর্জি পাখীর মতো কথা বুনে
গেঁথে দেয় নিজস্ব মাটিতে বীজ
কথার মাদকাতার মিঠে বাতাস বয়ে যায়
অন্ধকার ছুঁয়ে ভৈরব জাগে প্রভাতী সঙ্গীতে
আলোর দানা খুঁটে খায় ডাহুক
উড়ন্ত সব স্বপ্নবাড়িগুলো উপুর করে দিয়েছে
যাচাই করে দেখি স্বপ্নগুলো মিথ্যে ছিল না মোটে ।





কথাপ্রসবিনী

কি ভীষণ ইচ্ছা বুকে চেপে
দূর থেকে ফিরে যায় অভিমানিনী

বুদ্ধমূর্তিগুলো স্বপ্নে আসে পুরনো আবর্তে
রঙগুলো আগের মতই উজ্জ্বল
যে কথাগুলো স্বপ্ন আর ইচ্ছাকে মিলিয়েছিল
তারা এখন শামুকের খোলের ভিতর

ও ঘাটে এখন অন্য কেউ জল নেয় বুঝি
কান্নাও ঝরায় না আর শুষ্কগ্রন্থি
যন্ত্রণা পেতে দাও ওকে, ও যে কথাপ্রসবিনী
সাদা ছেঁড়া পাতার আঁচলে
উজার করে ভূমিষ্ঠ হোক হাজার বীণাপাণি