প্রণব
বসুরায়
বর্ণমালা
শীতের পাতার মতো ঝরে পড়ে কত সংলাপ
পেয়ালা থেকে পিরিচ সরে গিয়ে দূরে বসে
গরম পোষাক খুলে রাখবার হয়েছে সময়...
#
সে প্রকৌশল সকলেই জানে
কিভাবে এড়াতে হয় জুড়ে বসা মাছি,
উজানে যেতে লাগে কত অশ্ব-শক্তি...
#
' বেণুবন মর্মরে, দখিন বাতাসে'--
যে বালিকা ওড়ালো হাওয়ায়
তার জন্যে খুলে রাখি কোন সে দুয়ার?
#
শপথের বর্ণমালা অহেতুক লাগে
আমার খাতার পাতা তারই কাছে আছে
গূঢ় কথা
আমি জাগি জাগার নেশায়
যাক পুড়ে যাক রাত্রি খাক
শীতল পাটি বিছিয়ে রাখা
দরজা দু'টোয় অল্প ফাঁক
#
পঞ্চমীতে চাঁদ এসেছে
তোমায় রাখে অনেক দূর
হাল্কা করে বলতে গেলে
এরই জন্যে হৃদয় চূর
#
গূঢ় কথা আর পারি না
কক্ষণো কি পেরেছিলাম
জানে শুধু নিঝুম স্টেশন
মাচায় আমি শুয়েছিলাম
এই
মধুবেলা
অমোঘ অস্ত্র সব এইভাবে তুণীরে রাখলে
দুর্বল রাখালের জন্যে এত আয়োজন!
অথচ এ বসন্তদিনের শেষেও রঙিন বাতাস বহে যায়--
বসেছ আমার সামনে, আমিও তোমার মুখোমুখি
নিরুচ্চারে কেটে যায় এই মধুবেলা, উত্তাপবিহীন
#
মনে করি গিয়েছি সমুদ্রের কাছে, অতি দূর থেকে
মাছের নৌকো ভেসে আসছে ঢেউয়ের আদরে
পারে উদগ্রীব, চোখে সানগ্লাস আর ছোট দূরবীন
অপেক্ষায় আছি, আমি আহাম্মক...
#
নৌকোর সব মাছ নিয়ে যায় মহাজন এসে,
অথচ এ বসন্তদিনে রঙিন বাতাস বহে যায়
ফাগুনের
শেষ
যে তুলিতে একদিন এঁকেছি সূক্ষ্ম রেখা
তার লোম ঝরে যায়, পড়ে থাকে এদিক সেদিক
মাউন্ট করা ক্যানভাসে পাতলা ধুলো জমে...
সেতারের ছেঁড়া তার, মেঝেয় লুটোনো মেরজাই
কোন অববাহিকার ইঙ্গিত দেখাতে পারে নি...
#
দেহাতি যুবতীর চোখেও যে সারল্য মাখামাখি থাকে
তেজি ঘোড়ার সঙ্গে তার তুলনা করছি অনায়াসে
খেত থেকে উপড়ে নিচ্ছি আখ, পোকাহীন
টোকা মাথায় বৃষ্টিতে ভেজা অমলিন লাগে বলে
তোমার কাছে নিমন্ত্রণের চিঠি পাঠিয়ে দিলাম
#
ফাগুনের শেষ এলোমেলো করে দেয়
ফাগুনের শেষ মেরে ফেলে আবার বাঁচায়
বাহান্ন
ব্যঞ্জন
বুনিয়াদী চাষ ছেড়ে কাঠের লগের খবর
অনেক জরুরী । এর ওপরই বসবে টিনের চাল
নাট বল্টু জোগাড় করেছো? মিস্তিরি?
ইদানীং তোমাকে অন্যমনস্ক দেখছি খুব--
মাটির ঘর চেয়েছিলে বুঝি? ছবি এঁকে
ভরিয়ে রাখতে দেওয়াল ও উঠোন, ভেবেছিলে !
এদিকে আহাম্মক আমি
চাঁদের কিছুটা আলো আর হাওয়া কিনতে গিয়েছিলাম
সওদাগরের হাটে--
দেখি, সেখানে মানুষ বিক্কিরি হয়, হাত, পা, জঙ্ঘা
বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষিত ডিম ও বীর্যকণা-- তাও আছে...
ফিরে এলাম খানিকটা মেঘ সঙ্গে নিয়ে---
#
একশ কুড়ি সুতোর কাপড় বুনে রেখেছি
বাহান্ন ব্যঞ্জন দিয়ে খাবার তৈরীর দায়
তোমাকেই নিতে হবে, মাটির বা টিনের ঘরে