রত্নদীপা
দে ঘোষ
বাবাকে
ডাকতে ডাকতে
১
বাবা একটি পাখি
উড়ে যাওয়ার আগের মুহূর্তেও
ছড়িয়ে দিচ্ছে পালক
আমরা দুই বোনে কুড়িয়ে নিচ্ছি
গায়ে মেখে নিচ্ছি মায়ের আকাশ
পলক
২
বাবার রঙটুকু ধুয়ে গেলে
একদিন খুব চিৎকার স্বরে
ডাকবো বাবাকে
শুনতে পাবে আকাশ
শুনতে পাবে নদী মেঘ
অদৃশ্য সূর্যমুখীও শুনতে পাবে
সমস্ত ডাকাডাকির বাইরে
দুর্মূল্য প্রজাপতির মতো
রোদের ফাঁকে ফাঁকে
ঝিলমিল কোরে উঠবে 'বাবা'
ডাকটিকিট
ফেটে ছড়িয়ে পড়বে
একরাশ ডাকবাক্স
৩
আড়ি চলছে বাবার সাথে
বন্ধ আছে কথাও
বকবকমগুলি ভাগ করে নিতে পারছি না বোলে
কথাওকাকলী জ'মে জ'মে তৈরি হয়ে যাচ্ছে
এক কথাবলা মাঠ
আমার আর বাবার মাঝখানে
ঠিক চাঁদের মতই একটা চাঁদ
ঠিক নীলের মতই একটা দিগন্ত
কথার মতোই অন্য একটি কথা
উড়ছে
আকাশের শিসে মিশে যাবে বলে ...
৪
আজ বাবা খুব ভারী
খুব মেঘ হয়ে আছে
যেন একটু পরেই ওপরে উঠবে
মাটির সাইরেন বাজিয়ে
তারাদের রাস্তা ডিঙিয়ে
আরেকটু থেকে আরেকটু পেরিয়ে
আমাদের ছেড়ে
বাবা আরেকটু ওপরে ...
আর আমরা ময়ূরের মতো ...
বাবা ঠিক বর্ষা ছড়িয়ে দেবে
আমাদের জন্যে ...
আর আমরা ময়ূরের মতো খুঁটে খুঁটে
খাবো কদমের মনিহারি
৫
এখন ইচ্ছে করছে
বাবার ভেতর ভাসতে
বাবার আড়মোড়া ভেঙে
অহঙ্কার কোরতে ইচ্ছে করছে
বাবাকেই
ইচ্ছে করছে
বাবার হাসিতে ভাসিয়ে দিই নৌকো
বাবার পত্রচিঠিকে দিই নদী কোরে
বাবার লেখা কবিতা, বাবার পালতোলা গদ্য
ইচ্ছে করছে , মুক্তো আর চন্দনের
ধ্বনিতে
সাজিয়ে , রাঙিয়ে দিই শেষকৃত্য
ইচ্ছে করছে
বাবার গভীরে ডুব দিই
বাবার সাঁতারে মাথা তুলি , শ্বাস নিই
বাবার অবাকে আশ্চর্য মিশিয়ে
বাবার কানে কানে শোনাই
‘ আমি ঈশ্বর হ’তে চাই ‘