ইন্দ্রাণী
বিশ্বাস মণ্ডল
বৈশাখী
ঝড় আসে
---------------------------
অপসৃয়মান সময়-মহাকাল
ফিসপ্লেটের ভাঁজে ভাঁজে রাখা আছে
পুরোনো ইতিহাস,
ধুধু পড়ে আছে শুধু, অম্বর পাহারায়।
জোনাকির আলো-ভেজা নিঃসীম
তেষ্টার জল পেল সাহারায়।
কাঁটা তোলা শরীরের বাষ্পমোচন
বিষে বিষে নীল হ'ল বেহুলাও।
আকাশে খবর পাঠায় বিদ্যুৎ
ধনুকের ছিলা ছিঁড়ে রাখে তূণ।
গলিয়ে তরল সোনা ইস্পাত
বৈশাখে ভেসে আসে আরবার।
রোদে ঢাকা পড়ে থাক সূর্য
কোষে কোষে বাঁধা আছে তর্ক।
নবারুণ ভেদ করে মহাকাল
ঝড়ে হাল ধরে রাখ্ বেসামাল।
---------------------------
দেওয়ালে
তোমার নাম
------------------------------
বাড়িয়ে তুলি
মিথ্য অভিমান
কুয়োর জলে
ভাসে বাঁকা চাঁদ
অনেক আছে
সাজানো কল্পনা
মিথ্যে ওসব
আমায় ভুলোনা।
একটু দাঁড়াও
অবুঝ মনে বাসা
খুল্লনা তাই
ভাত বাড়ে না আর।
একটি দু'টি পরাগ মাখা রেণু
চলকে ওঠে
তোমার শীর্ণ তনু।
ইচ্ছে স্বরে ডাকছে
বসে কাক
সংসার এখন
শুধুই যার যার।
-----------------
কেউ বলে
ফাল্গুন
-------------------------
ভেসে যাচ্ছে আদুরে নৌকো
নরম বাতাসের হাত ধরে
সবুজ ঘাসে,
একটি দুটি শুকনো পাতা
তোমার ঠোঁটে গালে
সাহসী সূর্যাস্তের লাল আবির তোমার
সর্বাঙ্গে।
যাদের পাওয়া থেমে গেছে
মাধ্যাকাশে
ভালোবাসা ঘুরে ফেরে
তাদেরই আশেপাশে।
--------------------------------
স্রোতপথে
---------------
ভাটার টান চলছে গো নদীতে।
সমুদ্র কেড়ে নিচ্ছে সব কিছু
আলো, ফুল, মালা, কাঠামো
সবই চাই তার।
একদিন জোয়ার ছিল
ছলাৎ ঘাটে আলতা পরা রাঙাপা।
জলে ডুবিয়ে ঝিনুকদের
ঈর্ষা কাড়তো।
গহন জলেও নদীর বুকে
মেঘের ছায়া,
পাল্লাভারি হাসিখুশী
মাঝ আকাশে সূর্য কেমন
তাকিয়ে দেখে নীরব মায়ায়।
জলের কাঁপন আলোর ভেলায়,
ঝাঁপ নদীতে সাঁতার দেওয়া
প্রেমিক সুখে।
আজকে নদীর চিত্তে অসুখ
ভাঁটার টানে চলছে দুঃখে
সাগর যেথায় চিতা সাজায়
ভয়াল জলে নিঃস্ব দুপুর।
--------------------------------
সময়
গড়িয়ে বিকেল: বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে
----------------------------
আজ ভালো কিছু করলেও
খুশি তুমি আর হও না।
সুরাপাত্রে সুরা ঢাললেও
সুরাতুর তুমি হও না।
কাঠবেড়ালিরা আজও আসে যায়
অনুভব তুমি করোনা।
আজও বেশ মানি অতি অভিমানী
মান ভাঙা খেলা চলেনা।
পাখি খাঁচাটায় ডানা ঝাপটায়
ওড়া হবে কিনা জানেনা।
--------------------------------