মোঃ সরোয়ার জাহান
লুট
-----
মধ্যরাতের লাজুক তন্দ্রায়
এসো নারী
উন্মক্ত করে হৃদয় !
এসো লুট করি
লুট করি অপরূপ ভোর
পাখিদের গান,বাঁচার স্বাদ !
এসো সুখ লুটে লুটে
প্রণয়ের আনন্দে জ্বলি পুড়ি !
===================
ফাগুনের
আগুন বুকে
----------------
ফাগুনের আগুন বুকে
তার অগ্নি-ঘৃণায়
বাঁধনহীন জ্বলে পুড়ে
দাড়িয়েছি বাংলা একাডেমীর চত্বরে,
নবজাতক বৃষ্টির উঠান বুকে ধরে!
পরিশুদ্ধ বৃষ্টি-ধারায়
ছাইভস্ম দেহ খানি
আধারের চক্র ভেঙ্গে
দেখেছো কি?
কবি চেতনার বহ্নিশিখা
জাতি গঠনের অনুপ্রেরণায়,
শিরায় শিরায় উচ্চারিত
স্বর্গীয় কন্ঠের মতো
তোমার স্তব্ধতায়…!
জানোত,একুশ মানে?
একুশ মানে,
মাথা উচু করে বাঁচা…!
=====================
জৈব
উত্তাপ
----------------
চোখের জল পেরিয়ে ,ভর্ৎসনা ছাড়িয়ে
অতিক্রম করে ক্রোধ!
বিচূর্ণ হৃদপিন্ডু থেকে
উচ্ছুসিত জলস্রোতে,
অনির্বাণ যখন
একফোঁটা
মানবিক আলো,
নক্ষত্রময়ী শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে
বসন্তের নবপত্রের অনিঃশেষ বিকাশে
মধ্য-রাতে ঢাকা’র রাজপথ জুরে
ধুম বৃষ্টিতে
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গনে
ভিজে থরথর বইগুলোর কষ্টে !
উধাও সুখেরা যখন
শুধু ধুলো-হীন পথ
তখন,তোমার দূর প্রান্ত থেকে
পড়ুক না সুদুর্লভ তেজদীপ্ত
আলোক রেখা,চিবুক থেকে
রূপালি ঘামের কুচির মতো,
বেদনার দানার মতো
রোমকূপে উঠুক ঢেউ
সোনালি চুম্বনের,
উল্লাসের সমগ্রতায়
বৃষ্টি নামিয়ে দু’চোখের কোনে
নিরবে ভাসিয়ে সৃষ্টি
আমি মহাশূন্যে ভাসমান,
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে চলছি
আর সেই চলাও যুগযুগান্তর
চুম্বকের মত শরীরে,হৃদয়ে…
দেবী,
অফুরান ভান্ডার থেকে
দাও একমুঠো জৈব উত্তাপ
ভিক্ষাদাও,দেবী স্পর্শে ,এক বিন্দু ক্ষমা…!
==============================
হেমন্তনিশীথের
মেলাশেষে
----------------
খুব স্বাধীনভাবে দুই দিকে
চলে যাওয়া দুইটি হৃদয়ে
তৃষ্ণা বিমূঢ় হয়ে বসে আছে
দমবন্ধ স্বপ্নে হৃদয়ের আলোড়নে
গভীর গূঢ় বেদনা বহুকালব্যাপী
ক্রাচে ভর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে
তাৎপর্যহীন শূন্য হাঁড়ির গহ্বরে!
ছলকে উঠা রক্তে দুরন্ত ক্রোধে
চনমনে যৌবনে
জাপটে ধরে তন্দ্রাহীনতার
ক্ষিপ্ত কুয়াশারে
প্রাণোৎসর্গে সুনিবিড় মৃত্তিকায়
তোমার দেওয়া কুসুম-কুসুম-গন্ধ
ছড়িয়ে আছে হেমন্তনিশীথের মেলাশেষেও
কবিতার নীরব ভাষায় শান্ত ঘুমন্ত সুখে!
===============================
শেষবার
-------
শেষবার যখন চোখ খুলবো, আমি যেন দেখতে
পাই
আমার হারিয়ে যাওয়া মুহূর্ত গুলো
ধীরে ধীরে ভবিষ্যৎ হয়ে উঠছে
খুঁজে যেন পাই তোমাকে,
শুদ্ধ হয়ে
তোমার কালো চুলের
অতল নীল তরঙ্গে তরঙ্গে
কিম্বা আমি যেন আকাশ ভরে
ছড়িয়ে যাই তোমার নীল কুটিল শিরায় শিরায় !
আমি যেন ফিরে পাই স্ব-প্রাণ মুহূর্তের কোন চঞ্চল বাতাসে
শেষ পর্যন্ত যেন স্বর্গে ও মর্ত্যে বাঁধতে পারি শব্দময় ঘর
তোমার বুকের কাছে নীল জল ছলচ্ছল সীমাহীন মায়ার উপর !