বিশ্বজিত
ফিতাকৃমিগুচ্ছ
১
এই শহরে ভেসে
আসছে গোঙানি
শেষপাতে একটু
চাটনি আর ফুটপাতে
চন্দ্রমল্লিকা
নামে কোন মেয়ে জন্মায়নি
যা ছিল ওই খসখসে
শব্দ বিরতিহীন
ভাইরাসে মুগ্ধ
তবুও কেন অসাড় শরীর
তোমার জন্য বন্য, বলো দেখি!
ব্রিফকেস নিয়ে
ব্যস্ততার ফাঁকে যৌনতার উঁকি
বাটি হাতে মাটি
ঘষা পোশাকে
পায়নি তো কোন
স্বস্তি...
কি আছে বলো
এই বেঁচে থাকা
পর্দা সরিয়ে নীল মুভি
পরজীবী বাতাসে
থাকে আর্তি আর মেনে নেওয়া...
ফিতাকৃমিগুচ্ছ
২
অফিসে বসের টেবিলে সুন্দরীর ছবিসহ ক্যালেণ্ডার
আমাকে উৎসমুখী করে তোলে
জ্বলজ্বলে নোটিসে এরচেয়ে বেশি পুড়েছি
পোড়ামুখ নিয়ে ছুটে গেছি ঠাণ্ডাঘরে
শৌচালয় নির্দিষ্ট করতে আমি
অক্ষম বাড়তি হাসাহাসি করি, কাজের অর্থ
খুঁজি
দেখি বস্ আসক্ত বিউটিতে
আমি বলি অদৃশ্য ছবিতে কোন গান ছিল না
বুঝিয়ে-সুঝিয়ে আমার বৌবাচ্চার খাবার আদায় করি
আমি নেই মিলিত উৎসবের সেলফিতে...
ফিতাকৃমিগুচ্ছ
৩
এখন আমার কোন সভাসদ নেই বলে
আমি নিজেই বিভিন্ন ভূমিকায় অভিনয় করি
চোরের শাস্তি বিধান করতে গিয়ে
হয়ে যাই তারই বন্ধু বলি সম্পর্ক এইরকম মিনিংলেস
তবে যদি কখনো
পাখিদের সঙ্গে নিজেকে কোরাসে মেশাতে পারি
সেদিন আমি হবো সত্যিকারের পরী
পুরুষের এই আসক্তি বড় ভালো নয়
এইসব অগামার্কা কথা দিয়ে জব্দ করতে পারবে না
আমি কিন্তু ফাদার্স ডেও করি!
ফিতাকৃমিগুচ্ছ
৪
সদ্যবিবাহিত জীবনে কিছুটা ব্যালকনি প্রয়োজন
বলেই ফাঁকফোকরে আলাপ সারি, লাজুক
দুজনেই অল্পবিস্তর বুঝে নিচ্ছি কোথায় কোথায়
থামতে হবে কোথায় এগোতে হবে আর কোথায়
সমঝোতা...
একঝলক পেরিয়ে বিছানায় টেবিল কিংবা টয়লেটে
রাখছি নির্ভরযোগ্য অনিচ্ছা, দুজনেই
বলো রিলেশন কি এমন করে গড়ে ওঠে
যেখানে প্রতি পদক্ষেপে রয়ে যায় ঈর্ষা ও
আকাঙ্ক্ষা
যেন লতিয়ে উঠছে মধুরে মধুরে খিঁচানো দাঁত...
ফিতাকৃমিগুচ্ছ
৫
বালিশের ওয়াড়ে কিছুটা ঈর্ষা চেপে রেখে
খোলামেলা দূরত্বে এঁকে ফেলি সহজমূর্তি
বাকি ঘুমের আড়ালে সংসার ডুবিয়ে
তবলার আওয়াজ তুলি ঘুরেফিরে এমনই
এক সন্ধ্যায় ঠেকে বসে এ্যাডিক্ট হই
নিজস্ব উদ্ধৃতি হারিয়ে, অন্যের আলার্মে
আমি যে হয়তো আমারই ছায়া
লিখছি নিউক্লাসিক মুডে...