সুবর্ণা
গোস্বামী
অবসরের
পাঠ্যসূচি
টুংটাং চলে
যাচ্ছে ভূতুরে সাইকেল
পথের আঁচল বেয়ে,
বিকেলের লাল আলো
পুড়িয়ে দিচ্ছে
অনেকগুলি
ঘর।
অন্যমনষ্ক
মেয়েটি তখনই দেখালো
কনিষ্ঠায় লেগে
আছে অপরাজেয় বিষণ্ণতা।
একটি কদমফুল
ঝাঁপ দিলো জলে,
হয়ত জন্মান্তরে
মিলবে বলে...
অন্ধকার
কালপুরুষের পাশেই হাঁটছিল
হঠাৎ ঝুপ করে
নেমে এলো
মাঝিবউ এর লবঙ্গ
নাকফুলে।
চর ছাপিয়ে অগনতি
ঢেউ...
একটি নাও কাফনে
হারালো।
আজকাল অবসরের
কুচক্রী উৎসব
এইসব অদৃশ্য
দৃশ্য নিয়ে আসে।
মনে আসে মৃত্যু
ও অনিমেষকে না বলা একটি কথা,
না বলে ললিত’র শ্রাবণে চলে যাওয়া...
কাকাতুয়ারা সব
কাক হয়ে দাঁড় টানে
খুকুদের নায়ে...
ভাবছি উৎসবের
ঘরে
অন্ধকার পুষবো
একজোড়া,
আজ থেকে।
মেঘবিলাসী
নদী
অমিয় কষ্টের এক
মেদুর আকাশ,
তোমার অপেক্ষা
মেখে নীল নির্জনে
তুমুল একটি
নদী......
জানি,দুঃখ ভালোবাসে জলে নীল প্রতিবিম্ব,
চেনাশোনা আকুল
ইচ্ছে আলোয়
না ছুঁয়েই
তোমাকে,পূর্ণ হই পূর্ণ সোহাগে।
একতারা গড়েছে
বাসর মূর্ছনা জুড়ে
পথের সরলরেখায়
ভেজা ক্লান্তিসুখ
অশ্রুর নরম
সহচর্যে,চন্দন চর্চিত নীল
শিহরিত
যন্ত্রণার পরমে।
অনন্তে ভেসে যায়
এই ভেসে যাওয়া
সুবর্ণরেখা নাম
নিয়ে।
এইভাবে সারাদিন,তুমি আমি আর নীল,
নরম রোদের ঝিলিক,মিশে থাকি দুজন
দুজনার পরম
গভীরে,
অস্পষ্ট আবহে
কান্নাও কখনও কখনও
হাসির মত শোনায়।
নও তুমি আমার?
নেই বিশ্বাস এই
ঐশী প্রলাপে
একটি রেখায়
বিচ্ছেদ তোমার এবং আমার
চাইলে পেরনো যায়
অতৃপ্তির নীল
সাত সাগর তো
নয়......
কখনও কখনও নাকি
নীল মেঘেও বৃষ্টি হয়
অথবা কে জানে,হয়ত কালো মেঘরাশি
সাজালে একের ‘পরে এক
সুগভীর নীল মনে
হয়।
তেপান্তরের
বর্ণমালা
পেরিয়েছি চৌকাঠ
প্রথমবার,
বন্দী রাজকন্যার
হাসি নেই মুখে জেনে
দিয়ে গেছো
হীরামন তোতা;
শোনায় সে অথই জল,ভাসায় সে অথই জল,
ডুবিয়ে অথই জলে
ছোটায় সে জলের নিচে-
ঘননীল পঙ্খিরাজ
ঘোড়া।
এতো গ্যালো
রূপকথা,চলোখেলি স্বপ্নের কাটাকুটি
খেলা,
বালিশে তৃষ্ণা
রেখে গ্যাছো বলে কতরাত ঘুমোতে পারিনা।
ধার করে চাঁদ
এনে দিয়ে গেলে
শোধ করি কি করে
যে আকাশের ঋণ!
সে চায় আমার
কাছে স্বচ্ছ জলের ফোঁটা,লবণের দ্বীপ।
বন্দী রাজকন্যার
হাসি নেই মুখে জেনে রেখে গেলে
এতো এতো ঝরে পড়া
পাতা!
এতো গ্যালো
চাঁদকথা,এসো লিখি অধরের আরাধনা,
শব্দ রেখে
গ্যাছো ঠোঁটে তাই আমি কথাটি বলিনা।
ক্ষরণ
স্মৃতির অফসেট
থেকে পৌরাণিক জ্বর...
দেখ সীমন্তিনী, খুব জ্বর এসেছে আমার!
নত করো মুখ,গভীর গালে হাত দাও,
ঠোঁট রাখো রিক্ত
উত্তরীয়ে।
অশ্রুর চূর্ণ
লবণও কিরকম বাদামী এখন!
প্রাচীনতর ধুলো
জমে জমে।
শাখারা কি বকুল
হয়েছিল!
তাই এত
অভ্যর্থনা শরীরের অন্তরীণ ভাঁজে।
নীল তোয়ালে মুছে
নিক তিথির যন্ত্রণা
অতিথি আরও কিছু
পালাগান হোক শৈত্যের।
তারপর যাবো
দৃশ্যত্তোর দৃশ্যে-
ধূলিকণা হব!
তারপর দেখো আমরা
ঠিক ধূলিকণা হবো
বিরান
প্রান্তরে।
নিমন্ত্রন
সমীপেষু
নিমন্ত্রন
পেয়েছি তোমার।
আমাকে ডেকেছ,
আমি-কে নয়।
পেতলের
পানপাত্রে ম্যুর পুরুষের মুখ
মাঝরাতে জ্বলে
ওঠে খুব,
বুকে! চকচক করে
ওঠে গোপন মদিরা।
এ কোন চুমু নয়,অনিকেত বৈঠাও নয়,
এ হাসি-শুধুই
শরীরের।
উড়ন্ত আমার ছাই
তোমার ডেরায় যাবে,
লুফে নেবে তাস,
বাজি তোমার মূলজ
থেকে,
তারপর রোঁয়া হয়ে
তোমার মখমলে-
তুমি সরাতে চাইবে,
সরবে না।নীল
সেলফি সংগ্রহে রাখতে নেই মুছে দিও।
বরং জন্ম
নিয়ন্ত্রক রাখো বাসনার শেল্ফে।