রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৬

ইকবাল রাশেদীন



ইকবাল রাশেদীন
বিবর্তনবাদ
মনে করুন প্রতিটি স্প্যান আলাদা
ব্রিজ তৈরি করবার সময় এগুলিকে একসাথে
ভাববার দরকার নেই
ইট, পাথর, বালি- এগুলিও

পিলারগুলো তৈরি হচ্ছে আলাদা আলাদা

কর্মব্যস্ত মানুষগুলি, তাদের হাসাহাসি, বিশ্রাম
মেশিনের শব্দ
সব একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন

শুধু কিছুদিন বাদে বাদে নিবিড় দৃষ্টি রাখুন


নপুংসক
সরফরাজ পড়ে আছে রাস্তায়
রক্তাক্ত, এফোঁড় ওফোঁড় করেছি তীরধনুকে
হ্যাঁ, একটু আগে আমিই তাকে খুন করেছি
মাননীয় আদালত- শুনানি চলুক

ছুরি হাতে নাস্তার টেবিলে একটি লাল আপেল দ্বিখণ্ডিত হল এই মাত্র
আমি তবে রুটি মাখন রুটি মাখন রুটি মাখন

রক্ত নাচে দ্বন্দ্বে, সঙ্গমে, প্রতিশোধে-আমার রক্ত তবে নীল
আহা নাস্তার টেবিল 



অনুনাদ
ঝাপসা চোখে আমি তখন ছবি দেখছিলাম, মানে আর্ট

বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জের লাল হুইস্কি মৃদু হেসে বলল-তুমি আজ শাওয়ার নিয়েছ ? বই মেলায় গিয়েছিলে বুঝি ? জাগরণ মঞ্চের আওয়াজ এখানে দেয়াল ভেদ করে আসে না-তুমি নিশ্চিন্তে পান করো কবি

সুচতুর আনাজ বণিকেরা কোন এক ফেস্টিভ্যাল নিয়ে আলোচনা করছিলো । বাইরে পুড়ছে স্বদেশ। ককটেলের শব্দে দুলে উঠলো শীতল জলের কারিকুরি গ্লাস । সমবেত সভা আবার নির্ভয়ে কথা শুরু করলো, আমি কেঁপে উঠলাম

নিয়মিত নিঃশ্বাসের পাশাপাশি মাঝে মাঝে দূরবর্তী দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছিলাম কুহক বনে বসে
আর আমার মধ্যবিত্ত হাতবদল মোবাইল সাইলেন্ট মোডে রাখবার পরও ঠা ঠা শব্দে ক্রমাগত বেজে উঠছিল-এখনো অপ্রস্তুত নাবিক


নকশীকাঁথায় লাল সুতার ব্যবহারবিধি

ফোনটা তখনই এলো-মানে আসতেই হলো
আমার যোনিপথে তখন শিশ্নের দাবানল
ঢেঁকির আঘাতে ভাঙ্গে মৌরিদানা ধানের বাকল

হ্যাঁ বলো, এইতো আমি বাবুকে খাওয়াচ্ছি

কি লিখছ শান্ত তুমি উত্তরাধুনিক ? আধুনিক বোঝো ?
সময়কে তুলে আনো নিরপেক্ষ তুলির আঁচরে-যেন তুমি ঈশ্বর
বেশ্যালয় থেকে ফিরে এসে ফুল হাতে, আহ আস্তে
না তোমাকে বলছিনা
অন্ধকার ঘরে একটা ইঁদুর... ঐ খানে মূষিক
একটু তবু আধুনিক

কামের সময় মানুষ এতো কথা কয় !



তার বা আমার ইচ্ছামতো কবিতা তৈরি হতে থাকে অথবা আমাদের
যৌথখামারের কথা
আমি যখন মূর্তি বানাই
কাদামাটি হাতে নিয়ে তাকে প্রশ্ন করি
তুমি কী হতে চাও ? ঈশ্বর
মানুষ, পাত্র বা পাখি
সে আমাকে আনন্দ ও বেদনার কথা
দম্ভ আর বিনয়ের কথা বলতে বলতে
আমার চোখে কম্পিত চোখ রাখে তার

কাদামাটি বুকে নিয়ে আমি তখন বিমলানন্দে
চেতন-অবচেতন খেলা শুরু করি


“প্রথম পাঠ”
আমার স্ত্রী পুত্রকে পড়াচ্ছিলেন  অক্ষরগুলোর উপর
ছাতার মতো এমনভাবে হ্রস্ব-ইকার ও দীর্ঘ-ইকার দেবে
যেন অক্ষর বৃষ্টিতে ভিজে না যায়, রোদ্রে পুড়ে না যায়

আমার পুত্র সুন্দর করে তার
বর্ণমালা বাঁচাবার কসরত করছিলো
কাঠপেন্সিলের সীস ভেঙ্গে ভেঙ্গে

আমি অসহিষ্ণু অপেক্ষা করছিলাম
এরপরদেশ বিষয়ে কী বলবে
আমার প্রিয়তমা স্ত্রী আমাদের উত্তরপুরুষকে