সুমিত্রা পাল
এই লাল রং
গাঢ় রক্তিম ছিল মুখমন্ডল
অঞ্জলি ভরে রক্তগোলাপ
বুকের মাঝে রক্তে লেখা নাম
জেনেছিলাম ভালোবাসার বর্ণ লাল।
লাল রং এর আলো-আঁধারিতে একটু এসে দাঁড়াই।
ছুঁয়ে থাকা আগুনের রং এ ম্লান হয়না
ধূসর ঊষর দূ্রত্বের জড়তা,
সফলতার উত্তাল নীলেও আলাদা
একাকীত্বের বিষণ্ণ শূণ্যতা।
জীবনের পর্বগুলিতে লাল রং এর অসমাপ্ত রঙ্গিন কথা।
আরও কতদূরে গন্তব্য, জানিনা
মাঝখানে নানা রং এর
উপহার
আর বুকের মাঝখানটা জুড়ে
শুধু শুকিয়ে যাওয়া লাল রং এর ভার।
গভীরের সূচনা
মাঝে মাঝে ঘন
অন্ধকারে
চুঁইয়ে পড়া
আলোরশ্মি
অমৃতময়
ব্যঞ্জনার সংস্থাপক হয়ে ওঠে।
সমস্ত
লক্ষণরেখা জুড়ে ফুটে ওঠে
গভীর সংবেদনশীলতা
প্রগার
অনুভূতিতে
বলে উঠি নতুন কথা
নতুন দৃষ্টিভঙ্গীতে ;
দেখি, আমার প্রোথিত
শিকড়ে গভীর অরণ্যের সূচনা।
----------------------
সন্ধিক্ষণে নীরবে
অলীক ভাবনার
স্ফূরন হঠাৎ হঠাৎ
উৎসাহিত করে
বিমর্ষ তন্ত্রীগুলিকে
গাম্ভীর্যের
আড়াল ভেদ করে
চারিদিকে
স্বতঃস্ফূর্ত জীবনের প্রতিভাস
মাদলের দ্রিমি
দ্রিমি বাজনা
অথবা রণভেরীর
দামামা
অথবা ঝড়ো হাওয়া
একটু একটু করে
পালাবদলের নৈপথ্য কাহিনি রচনা করে
গতানুগতিগতায়
যোগ হয় আরও কিছু স্ফুলিঙ্গ মুহূর্ত...
অপূর্ব এক
সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়াই
জাগরী হৃদয়ের
কথামালা নিয়ে।
----------------
পদ্মপাতায় জলবিন্দু
নাড়ীতে আমার
স্বপ্নসংহিতা
হৃদয়ে
পদ্মবিলাসিতা
মস্তিষ্কে
সময়ের গ্রন্থনার নীরব বার্তা।
নাড়ীবাহিত
স্বপ্ন যতই বিছিয়ে দিতে চায় স্বর্গোদ্যান
একমুঠো রোদ্দুর
দিয়ে যায় কর্মের ঘ্রাণ।
ভূ-আকর্ষণের
বির্পরীতে উড়িয়ে দিয়ে উরন্ত যান
যখনই বলতে যাই-
এই রোদ ঝড় বৃষ্টি
তপ্ত বালুকারাশি
জীবনসংঘর্ষ
অশুভ গ্রহ
সবরকমের মনখারাপ
অসন্তুষ্ট আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু
অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি ...
এবার বিদায় !
মস্তিষ্ক বলে
উঠে
জাগো,
চোখ খোল
দেখো, পদ্মপাতায়
জলবিন্দুর স্থায়িত্ব ক্ষণকাল।
সমুদ্রলিপি
বালুকাবেলায়
নিমগ্ন রাত্রিকে
সামুদ্রিক
উচ্ছ্বাস তরল করে যায়
বারে বারে ;
নিবিড় ঝাউপাতায়
লোনাগন্ধের
সান্নিধ্য যখন গাঢ় হয়
পরিত্যক্ত
ঝিনুকের খালি কোলে
ক্ষয়াটে চাঁদ
লিখে রাখে আত্মলিপি,
হ্রাস-বৃদ্ধির
টানাপোড়েন
শুভ-অশুভ সব
ইঙ্গিত ...
শুধু সম্ভাবনাময় প্রতিটি মুহূর্ত
কথা
জানিয়ে যায় অদূরের আলোকবর্তিকা।