মেঘ অদিতি
পাখি পুরাণ
১
পৃথিবীর একাংশে
গভীর প্রশান্তি নেমে এলে যদি তোমায় প্রশ্ন করি, অনন্ত বিশ্বাসের মাঝে দুলে যাওয়া ছায়াটিকে তুমি ঠিক
চিনেছিলে কি না? তোমার পায়ের কাছেও
ছিল নুনের সাগর। সমুদ্র বা চোখ কেউ জানেনি,
নুন ঠেলে কীভাবে এসেছিলাম তোমার কাছে। আজ
ছায়ার কথা মনে এলে তবু ভাবো পাখিদের অদেয় কিছু নেই..
দুটো জানলা
পাশাপাশি হলে চোখ। চোখ থেকে চোখে সংযোগ সিঁড়ি নেই বলে ফুল খুঁজতে গিয়ে সংযোগহীনতার
শুরু।
ভাবছি, এই অবেলায় আমি কি তবে পাখি আঁকব তোমার
জমিনে?
২
আরো একটু আলো এল
খিড়কি ছুঁয়ে
আরো একটু ঘুম
নামলো এলোমেলো
সময় সঙ্কট থেকে
সরে
লেবুপাতায় কে লিখল
শূন্যস্থান
কার্পাস তুলোর মত
হাওয়ায়
ডানা মেলে চোখ
ছুঁতে চাইছে ১৯২০...
৩
যে পরাস্ত নদীকে
নানা ছলে
ধরে রেখেছিলে
মন্ত্রপড়া করে
আজ তার শরীরগত সব
ধ্বনি
ঘাসের কান্নার মতো
মিলিয়ে যাচ্ছে
দূরে
ডুবে যাচ্ছে নদী
ঘুমহীনতার জলে
স্তব্ধ হবার আগে
অন্তত একবার চাই
আজ
পুতুলের সাথে
পুতুলের
বিবাহ হবার মতো
একটি পাখিজন্ম
আবার জন্মালে আমার
পাখিজন্ম চাই
৪
আলো ফুটছে এই
দুধকুসুমে। ভোর এলে যেমন ‘পাখি সব করে রব’, তেমন রবের দিকে
ঘুরে যাচ্ছে চাকা। তুমি ঘুমিয়ে তাই বলা হলো না পাহাড় থেকে উঠে আসছে ডাক। যেতে হবে
আমায়।
রাতের পর্দা সরে
গেল। চোখ হয় গেল অরণ্যপথ। এবার এই বিদায়ী ঋতুতে এনে দিতে পারি আমিও, প্রিয় সে স্মিত হাসি, হাড়ের মালা তোমার জন্য। ওমের তুলিতে যাকে রাখো অন্ধতার সূত্র মেনে তাকে
আমি আঁকতেও পারি এখন।
আলোর ভেতর ফোটে যে
অন্ধকার, তাকে কিন্তু তুমিও
চেনো।
৫
কেন ভোরের কাছে
এলে মনে পড়ে
এক একটা বন্ধন
পেরিয়ে আসার আগে
লিখে রাখছি মৃত্যু
ঠিকানা
যে স্মৃতিগুলো
ডানার আড়ালে
এতকাল রেখেছি
লোভির মতো
তারাও আজ
নিরুত্তাপ
বোবা অপেরা
পড়ে আছে শুধু পাখি
পুরাণ ব্যথা..