ফিরোজ
আহমেদ
জ্যামিতি
============================
নারী বললো, 'ইতিহাস ভালোবাসো'?
আমি বললাম, 'না'।
নারী বললো, 'ভূগোল ভালোবাসো'?
আমি বললাম, 'কিছুটা'।
আমি বললাম-- আমি
জ্যামিতি ভালোবাসি
স্তনবৃন্ত আর
নাভিমূলের সমবায়ে এঁকে দিতে পারি
সমদ্বিবাহু
ত্রিভুজ,
বাঁকা নদীর
বাঁকে আঙুলের নোঙর হলে
আমিও হয়ে উঠি
আবহাওয়াবিদ,
বলে দিতে পারি
ঝড়ের গতিবেগ।
আদিম কৃষকের
উত্তর পুরুষ, জমা রাখে নাই লাঙলের ফলা
কলা-বিদ্যা
সাজানো থাকে মগজ পাড়ার ঘরে
বর্ষার কাঁচা
মাঠে মেনেছে লাঙল ধরা মানা
জ্যামিতির খেলা
তবু, আঁকা চলে মাঠের ক্যানভাসে।
দ্বিতীয়
মৃত্যুর পর
==================================
দ্বিতীয় মৃত্যুর
পর ভালো লাগে পুরাতন নদী
খেলা শেষ হলে
খেলাহীন মিহিঘামে হেমন্ত-বাতাস
মনে হয় মিঠে নদী, ঢেউহীন ভাটির টানে মানুষ কচুরিপানা।
আজ তার মনে হলো
পবিত্র ভূতের মতো
সুখ এক অধরা
মায়াবী পাখি
ডানার পালক রেখে
চলে গ্যাছে খাঁচার যাদুমন্ত্র ভালোবেসে।
উত্তেজিত চরম
স্খলিত রাত্রির শেষে
সুখগুলো শুয়ে
থাকে স্মৃতির শুকনো উঠানে,
না লেখা কবিতারা
মাকড়সা হয়ে বুনে চলে মসলিন জাল।
দেখো রাত, এইসব কঠিন সত্য ভালোবেসে--
আলাপের দীর্ঘ
সময় জীবনের থাকে না,
চাষের মৌসুম
শেষে ফসলের ঘ্রাণ ছাড়া থাকে না মাটির কথকতা।
দ্বিতীয় মৃত্যুর
পর তাকে আমি পাঠ করি চেনা কবিতার মতো
চক্রের এই খেলা
থেমে যাবার আগে ভাবি, শুরুটা কোথায়?
খনন
স্বভাব
===========================
শ্যাওলার ভাঁজের
ইতিহাস জানে মাছের সাঁতার
চোখের আয়নায়
ভাসে শিশিরের পতন দৃশ্য
গিটারের তার
ছিঁড়ে গেলে রিদমের মাতাল স্রোতের কালে
হঠাৎ নামতা ভুলে
ভেসে যায় বৈঠা ছাড়া হিজল গলুই।
আবার শিশির জমে
কার্তিকের নরম সকালে
ঘুম ভাঙা কৃষক
জানে মাঠের স্বভাব, আর
লাঙলের খনন
স্বভাব জানে মাটির গহ্বর।
অথচ
ঈশ্বর
======================
এক জোড়া পিঁপড়ে
কী খায়?
কীভাবে খায়?
কার সাথে
শুয়েছিলো গতরাতে ?
কার টেনে আনা
শস্যদানা চুরি করেছিলো কে?
তুমি আমি জানি
না।
আমাদের চিনির
বয়ামে প্রবেশের অপরাধে
খুঁড়ি নাই
হিটলারের মরণ-চুল্লি ।
মহাবিশ্বের খবর
জানা হলে
দেখা যায়
মানুষের ক্ষুদ্রতার ইতিহাস,
অথচ ঈশ্বর-----
।। জীবনের পদাবলী - ২৭ ।।
এইসব ধূলিঝড় সময়
পেরোলে
আদর্শিক যুদ্ধের
দিন জমা রেখে বকুল ফুলের কাছে
জীবনের স্বাদ
নেবো আমরাও হিসেববিহীন,
পাটিগণিত ভুলে
যাবো, আর
ছিড়ে যাবে গোলাপ
বাগানের বেড়ে যাওয়া দেবদারুর পাতা।
পাতা ঝরা দিন
আসে সকল বৃক্ষের
এবার অকালে এলো
শীত
আমার উদোম শরীর
সমাগত কোনো
বসন্ত নেই।
তাই হোক, যা হবে বলেই ভেবেছে সময়
সমুদ্রে সাঁতার
মিছে, বরং ভেসে থাকি
নিজেকে জলের
শত্রু না ভেবে, শূন্য হয়ে যাই।