কাব্য
একটা ভিড় বাসের পাদানি তে আমার কবিতাকে দেখতে
পেলাম।
কন্ঠার হাড় ফুটে উঠেছে ঘোর কৃষ্ণ চামড়ার নীচে
থেকে
কোথাও চামড়া আর চওড়া হাড় ছাড়া বাড়তি কিছু দেখা
যায়না।
উস্কোখুস্কো চুলগুলো শস্তার ক্লিপ দিয়ে তুলে
কায়দার খোঁপা করার চেস্টাটা কার্যকরী হয়নি।
এলো মেলো চুলগুলো ঘাড়ে ঝুলছে।
কাঁখে ততোধিক রোগা কংকাল সার ঘুমন্ত মেয়েটা
আঁকড়ে রয়েছে মাকে
আর মা খিমচে ধরে রয়েছে
সামনে দাঁড়ানো পুরুষ টির নোংরা স্যান্ডো গেঞ্জি
লোকটি অবাংগালি।কালিঝুলি মাখা এক গাল দাড়ি।
মাঝবয়সের ক্লান্তি সারা গায়ে।
মেয়েটির পরনে অজস্র শস্তার জরি মাখামাখি টকটকে
লাল একটা শাড়ি।
অমন শাড়ি দেখলে আমরা হ্যাক থু বলি
কিন্তু বাস থেকে তাকে নামাচ্ছে তার আদমি যেন সে
আর ওই হাড় জিরজিরে বাচ্ছাটা
কোহিনুর হিরে মানিক
কি নির্ভরতা সংসারের সব রং মাখিয়ে দিয়েছে ধারালো
কাল মুখ খানায়।
আমি অবাক হয়ে দেখলাম বিশ্বসংসারএর সব চেয়ে উজ্জ্বল
রোমান্স তেরো নম্বর বাসের
সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে গেলো।
ঘ্রাণ
আমি খুঁজতে যাচ্ছিলাম আমার মনেরমত শব্দ
কিছু মিষ্টি কিছু টক ঝাল এদিকে ওদিকে পড়ে থেকে থাকে যদি
চানাচুর ঝাল মুড়ির মত টুকরো আদরের কুচি
চিকচিক করে জ্বলে ওঠে নিখাদ হীরের
ফোটা
হেমন্তের ধূসর গোধূলি মেঘ ছায়া নিয়ে নামে
বাতাসে সুরের গন্ধ অনুরোধ আসরের গান
ছুঁয়ে আসে ছোট বেলা।
সন্ধ্যে নামা শাঁখের আওয়াজ ঘরে ধূপ আরামের ঘ্রাণ ফিরে আসি এসো রেশ
এসো প্রাণ পাপড়ি মেলে বোসো পেতে রেখে
দিয়েছি রিদয়
শিশু প্রাণ স্থির হবে বলে।জিরোই দু
দন্ড আজ
ভালবাসা চাদরের নাম।
সংগী
যদি চলে যাই পথে
শ্যাম চলে সাথে সাথে চরণে চরণ ঠেকাইয়ে
আমার সাথে সাথে চলে গো
ছোট বেলায় বড়রা তার ভরসায় রেখে কাজে গেছেন রোজ
শিশু কৈশোর কাল পেরিয়ে প্রেম অজান্তে হাত ধরলে এসে
প্রেম বুঝি?
হবে তাই
আমি শুধু পথে পথে দেখি পায়ে পায়ে জড়িয়ে রয়েছে
শ্যামলা নূপুর পড়া আরামের দাগ
সংসার ঢেউয়ের তালে তালেবর
স্কুবা প্যারা গ্লাইডার ডিপ সি ডাইভিং
দড়ি হাতে বসে আছে সাথে সাথে চলা
বন্ধুরা আড্ডায় কেউ নাস্তিক কেউ বা অস্তিতে
আমি চুপটি হয়ে থাকি
জানিনা তো আমি কোন দিকে
শুধু রাস্তা পার হতে টের পাই
পায়ে পায়ে বাজে
ছবি বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলা
চরণে চরণ ছুঁয়ে ছুঁই।
যোগক্ষেম
প্রজাপতিদের দেখলে
এত ধুলো ধোঁয়ার কলকাতাতেও
ফুলেদের কথা মনে পড়ে ।
অন্ধকার পাহাড়ের বরফে
আলোর স্কেচপেন একটু একটু করে বর্ডার আঁকে
রঙ ভরে
পাহাড় জঙ্গলের বাঁকে একলা চলা মনকে
সাহস জোগায়
আর অনন্ত সমুদ্রের গভীর থেকে
আদিত্যবর্ণ তুমি
পাঞ্চজন্যে ফুঁ দিয়ে বল
হাত পেতে রেডি থাকো
আমি ব্রেকফাস্টে অমৃত পাঠাচ্ছি কিন্তু।