বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭

অরুণিমা মন্ডল দাস





অরুণিমা মন্ডল দাস


কবিতা লিখব না আবার লিখবই

রক্তাক্ত ছুরিতে তান্ত্রিক চুম্বন
অসহায় মাষ্টার্স ডিগ্রির সার্টিফিকেটের কান্না--আলুকাবলির লাস্ট শশা
চোখ বন্ধ করতেই ---বিরাট প্রাসাদ--পরীদের মায়েদের আদর--প্রচুর আনন্দ--সুখ সমৃদ্ধি -ভালোবাসা
লিখতে গিয়ে কঠোর বাস্তবের হিমালয়
দুমুখো সাপের বিন বাজানো
কোন বধূ নির্যাতনের শেষ গোঙানি স্টেজের রবীন্দ্র -রোমান্সকে ধিক্কার জানাচ্ছে
প্রতিটি নিরুপমা আজ ও মূর্ছা যায় পুলিশের জেরায়--
নিরুত্তর সমাজ
চারশ বছরেও মৃত নয় রবীন্দ্র বদনের সবুজ গাড় উক্তি--?




মৃত্যু  -২

চোখের উপর মশার কামড়ঠোঁটের উপর ললিপপ ক্যাটবেরী              ফলের রস-- হৃতপিন্ডটা টেনে ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছে কোন অস্থির ক্ষুদার্থ দানব--
বুকের উপর কলকল ধ্বনি ,মনেতে বিশাল জগদ্দল
অগোছালো বেনুনী শাড়ির আঁচলের আঘাতে চোখের চারিদিক অন্ধকার,        প্রথম চুম্বনপ্রথম সন্তানের ডাক, হাসিমায়ের কোলফেলে যাওয়া স্বপ্ন, আবছা আবছাভাবে প্রকৃতিতে ভাসছে--
অনেক জলের পোকা বাছতে বাছতে সে ক্লান্ত দুর্বল হতাশ --
বরফে মুখ দেখলে আঁতকে উঠে--থার্মোমিটার ও ম্যাড়ম্যাড়ে সংসারের মায়ায় বদ্ধ ঘোলা জলের ডেঙ্গু- প্রাণ যায় যায় -- সকালের চায়ের কাপ খুঁজবে
তাঁকে ---
রেনুদিদি আর আসবে না লুডো খেলতে পাকা চুল বাছতে-- একটু পরে শ্মশানে সোনায় মোড়া দেহ সব শেষ--?

দুপুরের রোদটি রেগে আছে -- মুখে ভ্যানওয়ালাদের চিৎকার --বাঁচতে দাও,“ বাঁচতে দাও”--একটুখানি নাতির আদর মুক্ত অক্সিজেন ---
বালিশ সোনা হীরের শখ সব চলে যাবে,ফেসবুকের ছবি পুরস্কার
কেউ সংগে যাবে না
ছেলে নাতি নাতনী র মুখ দেখে কান্না আদর খেয়ে সুখের  মরন হয় কজনার -?
টাকার চাকর টাকা ই বোঝে- --- বুকের যন্ত্রণায় টাকাই খোঁজে--?
গাছ বেল পড়ার সংগেসংগেই চোখ উল্টে জিভ বেরিয়ে আরশোলার পোকা ধরা ,সাপের ব্যাঙ ধরার ছলে   হঠাৎ আত্মা বেরিয়ে মৃত শরীর?




রূপসী বাংলা

নোংরা চুলে ,উকুনভর্তি মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে যে মেয়েটি
ডাগর চোখে ঝর্ণার ধারা,
রুগ্ন হতাশ কঁাচের ভাঙা চুড়ির দিকে তাকিয়ে
তঁার কাজল আগুনে পুড়ে গেছে ,শুধু আছে শরীরে হাড়ের  উষ্ণতা?
#
মেয়েটি হঠাৎ কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে গেল,
পরীক্ষার কয়টা নোট ও দিয়ে গেল,
রাস্তায় যেতে যেতে লতাকন্ঠী গানে খই ছড়িয়ে গেল¡
কিন্তু নিজের জন্য একটা পাউরুটি চাইল না,
একটা ফ্ল্যাট চাইল না,
একটা গাড়ি ও চাইল না,
নিরবে হাজার হাজার বাচ্চার জন্য একমুঠো ভাত চাইল
ছেঁড়া শাড়ির আঁচলভরা মুড়ি চাইল¡
হাতের তালুভর্তি কাদার অধিকার চাইল¡
এক বোতল অক্সিজেনের স্বাধীনতা চাইল¡
তাঁকে কেউ বুঝল না?
জাগাল না¡
চোখের জল মুছিয়ে দিল না¡
ভিখারী পাগলিনী ভেবে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল?
সেই আমার রূপসী বাংলা¡
জনম দুঃখী মা¡
উনুনের পাশে বসে ফোটা ভাতের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে?




নগ্নতা ও প্রেম

১)

স্কুলের ফার্স্ট বেঞ্চের সেই পুরোনো লাল দাগ,লিপস্টিকের আঘাতে হরমোনের প্রথম কান্না-----
মাধ্যমিকের কোচিনে সাদা আধা ছিঁড়ে চিঠির চোখ থেকে বেরোনো ফার্স্ট নগ্নতার অনুভূতি , কলমের অত্যাচারে মাথা নোয়ানো প্রেম পরাগ ----
পেনের দুদিকেই বিস্তর নদী , সব্যসাচী নাবিক লতানো লজ্জাবতী লতা ,----
উঠতেই হবে সাগরের তীরে, মিশতেই হবে মোহনায়?
ঠোঁটের সামনে প্রেম, পিছনে অস্থিরতা, চোখে নগ্নতা ,হৃদয়ে অতৃপ্ততা ,
ছোট আশা, গান্ডীব ধরা আঙুল , তীর মারতেই উলঙ্গ দেহ পবিত্র বাসর--?

২)

যে ফুলটি নিছক বন্ধুত্বের ----তা আজ কন্টকের যন্ত্রণা, দুঃখের স্বস্তি, অমর চুম্বনের তলোয়ার ,আঁকড়ে ধরা সফল স্মৃতি ¡
যে মুখটি ভুল বলে অস্বীকৃত----- তা আজ হৃদয়ের বালিয়াড়িতে স্মৃতিসৌধ, শরীরের রক্তে মেশা গন্ধ, ঠোঁটের প্রথম বৃষ্টির আহ্বান ,বিরহের কলশীর ফোঁটা ফোঁটা চোখের জলের জল, বিছানার চরম ঘুম, বালিশের আলিঙ্গন, ঋতুস্রাবের  জড়িয়ে থাকা প্রেমিকের প্রথম স্বপ্ন¡
যে আবেদন অমান্য, কুৎসিত ,অলৌকিক,------- -তা আজ মাথার তাজ ,কানে শোনা শ্রেষ্ঠ বাক্যের অলঙ্কার ,ক্যান্টিনের প্রথম হাতে হাত রাখা শক্ত ব্রেসলেটের ছোঁয়া, হালকা চিবুকের ঘড়ির ছোঁয়া, সিনেমা দেখার ফার্স্ট বোতামে লেগে থাকা বডি স্প্রেতে রোমান্সের ছটফটানি , রাতের দাম্পত্য ঘুম, টাইটানিকের কাতর  জলের কাছে না পাওয়ার যন্ত্রণা?
#