সৈয়দ ওয়ালী
।। হয়ে উঠবার গল্প।।
বেশ কিছু অদ্ভুতুড়ে অভিজ্ঞতা অর্জিত হবার পর
আপনি টের পাবেন, যা খুঁজছিলেন তা কারো ভাঁড়েই
খুব বেশি নেই;
আপনি হতাশ হবেন, আপনি অবাক হবেন
এবং শিখে যাবেন, কি করে অমূল্য আয়ুর যথার্থ
মুল্য দিতে হয়।
অচিরেই ঝরে যাবে অকবির দল আপনার পাঠ্য তালিকা
থেকে।
আপনি নির্বাচনপটু পাঠক হয়ে উঠবেন।
কালক্রমে আপনার দু-চোখের মাঝখানে তৃতীয় চোখের
জন্ম হবে।
আপনি ক্রমশ হারাতে থাকবেন রম্যময় ভ্রমনের অতুল
সোয়াদ।
আপনি রসিক থেকে রূপান্তরিত হতে হতে হয়ে উঠবেন
খুঁতখুঁতে দর্পী।
শাপ-স্বরূপ আপনি স্বর্গ থেকে নিক্ষিপ্ত হবেন
নরকে এবং
ধীরে ধীরে হয়ে উঠবেন একজন ছিদ্রান্বেষী,...পুরোদস্তুর..।
...
।। ঐকান্তিক অভিলাষ ।।
ফেলে দেয়া দ্বেষ-চোখ নিয়ে
তর্কে
উৎসাহ নেই;
ওতে যার রুচি হয় হোক,
খুবলে খুবলে খাক আপন মলিন...;
সহজিয়া পুঁথিপাঠ কবিগান যাত্রা বেঁচে থাক
আয়ু পাক
দীর্ঘ...।
ফেলে দেয়া দ্বেষ-ছাঁচ নিয়ে
তর্কে
উৎসাহ নেই;
ওতে যার রুচি হয় হোক,
খুবলে খুবলে খাক বিদিত মলিন...;
আমাদের রসপান, মাতলামো তেষ্টা বেঁচে থাক
আয়ু পাক
দীর্ঘ...।
ফেলে দেয়া দ্বেষ-বাদ নিয়ে
তর্কে
উৎসাহ নেই;
ওতে যার রুচি হয় হোক,
খুবলে খুবলে খাক জগৎ মলিন...;
আমাদের হ্লাদ-রস সৃজনের চেষ্টা বেঁচে থাক
আয়ু পাক
দীর্ঘ...।
...
।। রমণসারথি ।।
যদি শৈশবে কৈশোরে
শুনে থাকে
পেয়ে থাকে
কেউ তার ডাক,
না পেয়েও সাক্ষাৎ, চারপাশ আঁতিপাঁতি খোঁজে,
ভুতে পাওয়া অশ্বের মত
যদি কেউ যৌবনে, দিশাহীন ছোটে;
যদি তারপরও সেই সে
তাল ঠুকে
সুর সাধে
চেতনে চেতনে,
অহর্নিশ গায় গান
প্রমোদ ও বিষাদের;
যদি তারপরও করে সে
রূপময় গহনের নিয়ত বেসাতি
ভেঙ্গে ঘর
ছেড়ে ধর
ডুবে গিয়ে বিস্ময়ে
মেনে নেয় বেদের নিয়তি;
যদি তারপরও থাকে বুঁদ
অজর বিভাব আর অধরা পিরিতে, হায় চালশের পরে
রসিকেরা বলে তারে,আহা সে যে কবি গো, ‘আমাদের রমণসারথি!’
...
।। যাপিত জীবন ।।
চেয়ার নয় সিংহাসন তো নয়ই
খেজুর পাতার পাটি ভালো লাগে খুব, আরো
ভালো লাগে ঘাস, তার নান্দনিক কোমল ফরাস;
পাদ প্রদীপের আলোর চেয়ে
কোমল ছায়ারা যেখানে নম্র শেফালির সাথে খুনসুটি
করে, তেমন
নিভৃত কোণ, তেমন অলখের
জীবন, ভালো লাগে আমার;
আমার, একক কোন বাতি নেই, না কোন মানুষ, না
তত্ত্ব; কারোই
কি থাকে? যে প্রেমিক, ফুলের রূপ আর
গন্ধ ভালোবাসে, ভালোবাসে
কুড়োতে নব ফুলের বীজ, দান্দিক নব্যের অভিজ্ঞান, তার
কি থাকে কোন একক বাতি?
মধ্যমণি হয়ে নয়, গলাগলি করে বাঁচি, লতা
যেমন জড়িয়ে বাঁচে অগণন প্রতিবেশী ..।
...
।। নিঃস্বের তর্ক ।।
খুব অল্পই চেনে তাকে, সত্তায়
পায় তার সত্ত্ব, অলৌকিক ন্যাস;
তবুও উচ্চস্বরে, নাহক
তর্ক করে, ফ্যাসাদ গড়ে নিঃস্বের দল!
...