অলভ্য ঘোষ
ফুল যত দিন গাছে থাকে ততদিন য়ই জীবিত থাকে
এই পৃথিবীর শোভা বর্ধন করে।
ঝরে পড়া ফুলের বাগানে হয় নতুন চারা গাছের
জন্ম।মৃত্যু বন্ধন সেখানে সামান্য।
তাকে উপড়িয়ে এনে ফুলদানিতে রেখে গৃহ-সাজালে
তোমার গর্বে ফুল শুকিয়ে মরে।শুকনো মালা দেবতার
গলা থেকে আস্তাকুড়ে স্থান পায়।অথচ পৃথিবীর
গায়ে ফুটে থাকা ফুলে রোজ ঈশ্বর পূজা নেন।ভোমর
হয়ে ঘোরে ফুলের বাগিচায়।আমদের সৌন্দর্য বড়ো
ঠুনকো
মোটা দাগের প্রাণঘাতী।
ভাগারের কোনে ফেলে দেওয়া পুষ্পাঞ্জলির দেব
উচ্ছিষ্টে
কখনো কখনো ফুলের চারা গাছ জন্মায় ।তাতে অনিবার্য
ভাবে ফুলও
ফোটে।কদাচ সে ফুল চোখে পড়ে আমাদের।
ফুলের
সাজিতে সে ফুল তুলেনিতে সাহসে কুলায় না।
থাকে অশুচিতা অপবিত্রতা।অথচ শত-বিকশিত শোভার
রোজ নিষ্ঠুর অপমৃত্যু ঘটে ঘটক আমরাই।
আমাদেরই খাম খেয়ালি সৌন্দর্যের খেসারত দেয় ফুল
ভুল;ভুল এ সৌন্দর্য প্রীতি।
গাছের ফুল গাছেই শোভা-দেয়;বনের পাখি বনে;
অ্যকোরিয়ামের মাছে সমুদ্র খুঁজনা;ছলনায় মনে মনে।
ব্যবসা
আত্মিক সম্পত্তিই স্থায়ী সম্পত্তি।
প্রকৃতির দ্বন্দ্বের মধ্যে থেকে এই সম্পত্তি
ধীরে ধীরে অর্জন করাই ব্যবসা।
আর যারা ব্যবসা বলতে বোঝে অস্থায়ী উপাদান সংগ্রহ;
তাদের গীতা আর যাই বলুক সাধু বলে না।
কারণ সত্ত্ব গুণ সেটি নয় তম অথবা রজ গুণের অসৎ
মানুষই একাজে রত হয়।
প্রকৃত
ব্যবসা স্থায়ী সম্পত্তি বর্ধন।
অর্থশাস্ত্রের নিরিখেও ডেপ্রিসিয়েশন অ্যাসেটের
থেকে অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাসেট
লাভজনক।
যে সম্পত্তির ক্ষয় নেই তাইতো অ্যাপ্রিসিয়েশন
অ্যাসেট।
আত্মার চাইতে; দর্শনের চাইতে যুগযুগান্তর ধরে অক্ষত সম্পত্তি আর কিইবা হতে
পারে।
রবীন্দ্রনাথ,আইনস্টাইন,বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ এদের চাইতে বড়
ব্যবসায়ী কে?
সোঁদা গন্ধ
একটা সোঁদা গন্ধ বেরচ্ছে ।
দীর্ঘ তাপ-দাহের পর বৃষ্টি পড়ছে।
গন্ধটা মাটির ? এ-গন্ধ মানুষের চেনা ।
বৃষ্টি স্নাত গন্ধ বুকে নিয়ে কত কাল
ফানুস উড়িয়েছে মানুষ ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে।
এই যে বৃষ্টি এইযে কাক্ষিত ঝড় রোয়ানুর;
অ্যাসিড বৃষ্টি নয়তো।এই তাহা-রুশ ধর্ষণ খেলা
ঝড়ে মাঝখানে মা মাটি মানুষ।
স্বৈরাচারের স্নব আয়ু বাড়ে;
স্বেচ্ছাচারের মোচ্ছব লীলায়।
শরীরে মানসে সাজানো যে দেশ;
প্রমোটার সিন্ডিকেট।
সেকি তাসের দেশ?
স্বাধীনতার সোঁদা গন্ধ নিতে নিতে
ল্যান্সের ফোঁপরে ফোঁপরে ছত্রাক; নাকি তৃনমূল!
কজনে জানে সোঁদা গন্ধটা অসলে বীজ গুটি।
ব্যাকটেরিয়া অ্যাটিনোমাইসেটিস।
প্রজাপতি
রঙ্গিন ডানায় যেন
নিপুণ তুলির আঁচড় ।
একটা প্রজাপতি উড়েছিল
গৃহস্থের এ ঘর ও ঘর ।
ছোট্ট খোকা আহাল্লাদে
আত্মহারা ;
জঙ্গি বিমান বানাত সে
যদি এটাকে যেত ধরা ।
সানাইয়ের সুর অনুরণিত
দিদিমণির কানে ;
পল্লবিত যৌবন তার
কে জানে; মেতেছে কোন গানে ।
খোকার তাড়ায় পতঙ্গটা
দিদিমণির মাথায় বসে ।
অব্যক্ত খোলা বই টা
তিতকুটে হয়ে আসে ।
কোন জাদুকর চুপিসাড়ে
সাম্রাজ্য ফাঁদে মাথার ভেতরে ।
আবার খোকার তীব্রতা ;
প্রজাপতি টা আশ্রয় করে
লক্ষ্মীর ব্রতকথা ।
মা হেসে কুটি কুটি
দুই হাত তুলে প্রণাম করে ।
বলে; "
লক্ষ্মী এসেছে ঘরে
।"
হায়রে গ্রণ্হ লক্ষ্মী মাতার
টিকটিকিদের ঘর ;
ঝপকরে লাফ দিয়ে
স্বপ্নের ঐ চিরাগ টাকে
মাংসাশী এক ছুট দিল মুখে নিয়ে ।
মা রেগে বলে ;
"খেয়ে নিলো গা লক্ষ্মী ছাড়া
। "
বাবা বলে ;
"লক্ষ্মী খুঁজ না ও গিয়েছে
মারা । "
মা বলে ;
" যত সব অলুক্ষণে কথা ।
"
বাবা বলে ;
" গরিবের ধন জান কোথায় রাখা ? "
দিদি বলে ;
" সুইস ব্যাংকে । "
খোকা বলে ;
"গড়মিলের অঙ্কে ।"
মা বলে ;
" চুপ কর সব আন্নাহাজারে ।
"
বাবা বলে ;
" বছরে নটা গ্যাস এই
দুর্মূল্যের বাজারে ।
সাথে পুনর্বাসন; সস্তা রেশন আর কত প্রতিশ্রুতি ! "
মা বলে ;
" টিকটিকিদের ভোগ্য হয়েছে
প্রজাপতির জ্ঞাতি । "
রূপ
আয়নার রূপ নিবেদিত
প্রতিবিম্বেরা তাতে প্রতি মুহূর্তে প্রতিফলিত।
পারা আছে তার বুকে ;পাগল সে কেউ দেখে
না তাকে।
তার দিকে চেয়ে আসলে সকলে খুঁজছে আপনাকে।