সুমনা পাল ভট্টাচার্য্য
দর্দ সে
-------
অনুরণন আমার শিরায় শিরায়
এক বিন্দু বৃষ্টিতেই কেমন বুঁদ হয়ে থাকো তুমি
আমার ইনবক্সে এখন ঝাড় পোঁছ পড়ে না
তালা দেওয়া ঘরের মত ভ্যাপসা
দমবন্ধ নিশ্বাস
মাঝে মাঝে তালা খুলে দাঁড়ালেই
জলসাঘরের ঝাড়বাতিরা এক এক করে জ্বলে ওঠে
কত কত তুবড়ি যে এদিক ওদিক দিয়ে হুস হাস করে ফণা
তোলে...
আমি খানিক কেঁদে নিই সুখি সুখি অভ্যেসে
তারপর তালা দিয়ে চাবি টাঙিয়ে রাখি
জগজিৎ জীর গজলের গায়ে,
"দর্দ সে মেরে দামন ভর
দে.... "
----------------------------------------
আগুনী স্রোত
------------
সোনার বরণ পিদিমের মুখাগ্নি হল কিছু আগেই
দগদগে উষ্ণতা তার শরীরের শিরা বেয়ে ক্রমশ
এগোচ্ছে হৃৎপিন্ড ছুঁতে
আস্তে আস্তে আগুনী ফাগ তার অলিন্দ ভেদ করে
নিলয়মুখী
কালশিটে পরা চোখ এখনও গলছে
আলো নিভলে চলবে না যে..
পিদিমের তলার অন্ধকার গোছানো রইলো ওই আলোর বিপরীতে
আলো-আঁধারী সহবাস সেরে আবার জ্বলবে বুক
দাউ দাউ দাউ দাউ....
--------------------------------------------
এই অবেলায়
-------------
আমার ছাদের আকাশে এখন মেঘের শামিয়ানা
তোমার মনের সবটুকু অন্ধকার মাখিয়েছি তাতে
নরম আঙুলের ডগা দিয়ে এঁকেছি রক্ত আলপনা
ভীষণ সাবধানে
তোমার পাঁজরে লাগে না যেন -
আলতো ঠোঁটে চুমুক দিতেই কেঁপে উঠেছি
কি
তোলপাড়, কি তোলপাড়
সে ঢেউ আমার বুকে তুলেছে মরুঝড়
ধূলোর পাহাড় পেরিয়ে, নোনা সমুদ্র ডিঙিয়ে
দু-হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়েছি তোমার সীমা টানা চৌকাঠে
শরীরের শিরায় মারণকামড় আর চোখ ভর্তি বিষ
যদি একটিবার তুলে দাও আমার হাতে নি:শেষ স্পন্দন
তবে জেনো,
সব যন্ত্রণার বাক্স গুছিয়ে
এবার সাজাবো
শুধু এক আকাশ বৃষ্টি
এই অবেলায়
---------------------------------------------
বুদবুদ
--------
তোমার নতজানু নাব্যতায় মিশে ছিল
আমার ঈশ্বরী হবার অহংকার
উদভ্রান্ত ঝড়ের বুকে মুখ লুকিয়ে
এখন
একফালি ছাদের স্বপ্ন দেখি
উদ্বাস্তু লজ্জায় উপচে পড়া ভিক্ষের ঝুলি
কাঙালি খিদে ভোরের স্বপ্নের মতই বুদবুদে
তোমার আঙুল ছুঁলেই এখুনি সাতরঙা বলয়
শুধু ভাসবে আর ভাসবে নিরুদ্দেশে...
--------------------------------------------
একান্তে
-------
ঈশ্বরীর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
চেয়ে নেবো ভেবেছিলাম
আগামী এক বছরের জমা খরচ
নতুন জামার গন্ধে,
আর ক্যামেরার মেগা পিক্সেলে
কান্না গেলা উৎসবী ছাপ
পাড়ার মাইক থেমে যাবার পরও
কানের পর্দায় গুন গুন গুন
নি:সঙ্গ ল্যাম্পপোস্টের গায়ে আবার
মুঠো জোনাকির নিখোঁজের সন্ধান...