মনিকা আহমেদ
নিশিকাব্য
_________
কিছু কিছু প্রেম,অপ্রেম হয়ে ওঠে,সময়ে
কিছু মুখ,ঝপসা হয়ে যায়, অবেলায় ছায়া পড়ে।
একলা দুপুরবেলা,শরতের কাশ বনে
উড়ে
যায় মেঘ
হঠাৎ গভীর ঘুম ভেঙে আছড়ে পড়ে
নোঙর ফেলা
আবেগ।
বুকভাঙ্গা কান্নায় ভিজে যায় রাত
চলেছ একেলা তুমি,ছেড়ে দিয়ে হাত!
হয়ত ভালোই
যাবে উদাস দুপুরগুলো
আমার না হয়
থাক নীরবতার আলো
একলা রাতের সবকটি
নক্ষত্র
আমায় ডাকে, আয় আয় আয়
আদিও অন্ত থেকে
গভীরতর এই অন্ধকার কাছে টেনে নেয়;
শীতের দেশে তুমি ওম খুঁজে নিও,
আমি না হয় মিশে যাই
রাতের শানিত আধাঁরে.....
১০ই অক্টোবর'১৬
এসো নয়ানজুলি
_________________
কাছে থাকার কালে মনে হত
আহা রয়েছি'ই তো কত!
আমরা দূরবাসী
হলাম
বেড়ে গেল ব্যাধি,অসীম ক্ষত
ঘুণ
পোকা খেয়ে ফেলে বুক;
জোৎস্না রাতেও
অমাবস্যায় জেগে ওঠে,থৈ থৈ কুপ।
দূরত্ব হয়ে গ্যাছে,সেই ৬৭০দিন হয়ত
অন্ধ হল চোখ
ছিঁড়েছি কত চিরকুট,উন্মাদ শোক
রিহার্সাল করে ডাকে অস্থির ডাহুক;
হারিয়েছ আমারে_,
এখন নদীর বুকে অসুখ?
এখানে হেমন্তও এসে গেল_
কাঁচা ধানের গন্ধম বেঁটে
আয়না
খুলে দেখ্যো
শীতের আগে খোলস
খুলে ফেলো
মানুষ যেমন
জলের রেখায়
গহীন কথা বলে,
তুমি সাহস
করে জলের কাছেই সত্যি বলে ফেল!
এসো আবার
নয়ানজুলি,
এসো কোকিল
প্রহর খুঁজি
শাওন রাতে
চাঁদের রঙে ভিজি
শীতের শেষে
বসন্ত স্নাণে ডুব সাঁতারে ডুবি?
এত দিনের বিরহ
যত
সব ভুলে যাই, ভুলি!
রোদ্রবসনী ও প্রণয় কাব্য
_______________________
(১)
_____
তোমার সাথে আলাপ ছিল গত জন্মে_
এ জন্ম তো অবাধ্য, গন্ধমাদল।
ভেবেছিলে, সেই ভূবন মনোমহিনী হয়ে দৌঁড়ে যাব?
সেই রোদ্রবসনী নই গো সে আর আমি
কিছু কিছু কষ্টবোধ মনে পড়ে গেলে, থামি!
(২)
______
শ্রাবণের বরিষণে প্রেম ছিল মনে মনে,
শরৎ এ উড়িল পবন ঐ জলে, বাতাসে
হেমন্তের হলদে রোদে পুড়ে পুড়ে সোনা
বসন্তে
সবার নাকি প্রেম বাড়ে,
আমার তো বাড়ে না!
শীত রাতে খিড়কীতে
কাঁপে মন,
জানোনা
গ্রীষ্মঋতু নিঃশব্দে শ্বাস ফেলে
তার
শুধু বহু রূপী বায়না
আমার ছয় ঋতু যায় আসে;
প্রণয় হানা দেয় না
কালসমুদ্র
______________
দূরে থাকা যায়!
পাতায় পাতায় দেখি তোমায়
বললেই হল? বন্ধ করো গান!
আমার প্রাণ চায় প্রাণ,
শ্রাবণ ভাদ্র চলে গেছে__,
প্রদীপের আলোয় সময় নাচে।
ধ্রুপদী বেহালা শুনে ভিজে যায় চোখ
শীষ দিয়ে যায় কেউ,পাতাদের শোক
ওদিকে দেখি নান্দনিক, আনন্দলোক
সুখেরকাঁটায়
কেমন
গেঁথে আছ.....!
তরুনী চোখ
___________
একদিন জানালায় উকিঁ দিতো ফাল্গুনী চাঁদ,
জোছনা ছড়ায়ে হাসতো নটবর।
মোহনীয় কুঁঞ্চিত
ভুরু তুলে চোখ মেলে তাকালেই মনে মনে বলতাম,
তুমি কি জারুল বনের সবুজ পাতার একটুখানি সুগন্ধ ছড়াতে এলে!
নাকি নিয়ে এলে অমরাবতীর মুকুল?
হয়ত তখন গাছেরা ঢেউ হয়ে যেত
নাচত নক্ষত্র খানিক
চোখের তারায়।
আমার কথারা হারাত..,
আমি কিছুই বলিনি তোমায়।
শুধু চোখের তারার ক্যানভাসে জল রং ছবি এঁকেছি কত।
সুদূর অতীতের ছায়া গুলো ধূলো হয়ে উড়ে গেছে কবেই...,
কাছে যাওয়া হয়নি কোনদিন
সীমানাও মাপা ছিল না কোথাও তোমাতে আমাতে;
ধূসরিত প্রবল বিচ্ছিন্নতা....
এটা ঠিক মনে আছে,
নকশীকাঁথায় মুড়ি দিয়ে
তরুনী দুচোখ সূদূরে হারাতো কি বহ্বলতায়....আহা!
তখন স্বপ্ন বুঝত,
হদয়ঙ্গম হত কত কিছু,
বুনো মেঘ উড়ত চুলে।
খিল খিল হাসি তোমার সমুদ্রে__
মৃত্যুর হুইসেল ছাড়া সব শব্দ শুনত বুকের অচিন পাখি,
তখন চোখ বন্ধ করলেই মৌসুমী ঝড়ো বাতাস
বুকের ভেতরটায় উথালপাথাল কেন যে!
আজ শরতের বেহালায় বাজলো বৈরাগী তান
খোলা চুল উড়ল লেলুয়া বাতাসে_
কিছু উড়ো চিঠি নিয়ে এলো বাসন্তি রং
দিনের নিঃস্তব্ধতা ভেঙে,
চকিতেই_,চকিতেই_ হারালো
কি অপূর্ব গোধূলী অথবা হেঁয়ালী অন্ধকার।
আর লুকোচুরি হয়না চাঁদ কিংবা সবুজ পাতাতে
রাজকুমারের অভয় বাণী শোনা না পাখি,
বৈরাগী মন
পৌষের বাতাসই এমন!