তৈমুর খান
খড়
আমার উদ্দেশ্যগুলি খড় শুকিয়ে নেয়
বিকেলের মোহটান সূর্যাস্তে কাঁপে
আদিম কন্যারা ফিরে আসে
আবেগের স্রোতে রোজ নৌকা ভাসায়
ধানগুলি বেবাক শুভ্র গান
নিয়তির ফুলে ফুলে ভরে ওঠে বাগান
একাকী নিবিড় সরু পথে
দেখি আমারই চতুর ভ্রম যায়
শব্দেই আকৃষ্ট আমি
অসমাপ্তির বৈরাগ্য উঠোন
রোদের বিস্তার বুঝি
আর খড় শুকিয়ে নিই
আমার ঘরের চালে
বিমোহিনী লতাদের অমোঘ বিস্তার
একটি জন্মের বারান্দায়
_____________________
একটি জন্মের বারান্দায়
কতক্ষণ অপেক্ষা করব উদ্বেগ?
আর্তনাদ ছুটে আসছে
রক্তবনের ভেজা হলুদ
চাঁদ
নেমেছে
মাটিতে
এইখানে একটি হাতললাগা
চেয়ার
আমাকে বসিয়ে রাখে
দিনরাত
আমি কি জরার
বন্ধু?
মৃত্যুর
সংবাদ?
নিজস্ব মুখের দিকে চেয়ে আছি
বার্ধক্যের কুমারী এসে চা
দেয়
আমি তার কাঁপা
কাঁপা হাতে
ছুঁয়ে দেখি
আমাদের গার্হস্থ্য বিষাদ
কৌণিক বিন্দু
_______________
চোখ সরিয়ে নিলেও হাওয়া ঘুরবে
অজস্র শব্দে বন্ বন্ করে
ফিরে আসবে সাংঘাতিক প্রমা
উপমাহীন কোনও কিছু হয়?
তবুও কৌণিক বিন্দু বাহু প্রার্থনা করে
বাহুতে বাহুতে মাংস , লোমকূপ
স্পর্শ ও ইশারা চায়
সীমানার ভেতর সারারাত রতির বিলাপ
আর সামাজিক প্রচ্ছদের নীচে
নিষিদ্ধ সূচিপত্র
অদ্ভুত
খেলা তার
আপেল বাগান
________________
নরম অস্তিত্ব জুড়ে আপেল বাগান
আদিম গ্রন্থের সাপ উঠে এলে
তুমি আমি সেই বিকেলের কমলা ফুল
বিবাহ বহির্ভূত দিন যাওয়া আসা করে
যেমন সোনালি মূর্খ মাছ সূর্যাস্ত দ্যাখে
অথবা প্রণয়জল ভেদ করে উড়ে যায় হাঁস
কিছু ভাষা দুনিয়ার গাধাদের চোখে বসে থাকে
মৃত্যুদন্ড শোনার পরও আলো বেশ চকচকে
নীলাভ সৈনিকের তাড়নায় আর্কিমিডিসের
যুগ কাঁপে
অথবা গ্রীক হাম্বিরের চোখে লীলাময় অগ্নি
দুইহাতে শূন্যের বিস্তার হয়ে চলে
ইতিহাস ফসল ফলায় বেশ।
আপেলের গানে গানে সভ্যতা মোহিত হয়
সকাল সকাল কাক ভরে যায় উঠোনে...
পাগল
__________
দু একদিন ভালো থাকার পর
না-ভালো থাকাগুলো চলে আসে
হাওয়া কোন্ দিক থেকে কোন্ দিকে
তাদের উড়িয়ে আনে
কেউ জানে
না
দু একটা পাগলের সাথে আলাপ হয়
রাস্তায় পড়ে থাকা আপেল তারা কুড়িয়ে নেয়
আমার ভাঙা ইচ্ছাগুলো জোড়া দিতে পারি না
কুড়োতে পারি না পাগলের মতো কিছু
অথচ দু একদিন ভালো থাকার পর
আমিও পাগল হয়ে যাই
ধুলোর উপর শুয়ে থাকি
পড়ে থাকা আপেলের মতো।
ধুলো মাখি আর গান গাই
আর পায়ে পায়ে থেঁতলে যায়
সব সহ্যশক্তি আমার!