বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

পৃথা রায় চৌধুরী



পৃথা রায় চৌধুরী

অ-বলা
বড়ো জেদে বলো,
আবৃত্তি করো সেই দগদগে কাল;
কাগুজে অক্ষর ভাসিয়েছো তুফানে।


বিস্ফোরণের স্প্লিনটার উপড়েছো
নিরাময়ের পরেও নির্ঘুম চেয়ে থাকে
শিশুদাগ...


সুরের আশায় জলোচ্ছ্বাসী আসরমাত
গালের ভেজায় জড়িয়ে থাকে
ধোঁয়ার কাউন্টার... কড়া...
এপথ সেপথ বিপথ গেছ;


কালচে ক্ষরণ দেখেও বলেছো,
আমার স্থানু থাকার ধাপ ছিলো চলমান।



না-মানুষ
এসো, তোমায় বড্ড ভালোবাসি
এসো, বিষ দিই চুপিচুপি
হালকা থেকে জব্বর নীল...
রাত করে দিই শরীর তোমার?


- যখন ভ্যাপসা বারান্দা বলে দিলো
মোটে কৃষ্ণা নই,
খুশি খুশি রোদ রোদ
তোমার আয়নায় বর্তমান তখন।


তোমার ইতিহাসি আতঙ্ক
তোমায় মিছিমিছি ছায়া
তোমায় একটা ছেলেবেলা
আবার যাবো ফর্ম্যালিনের দেশে... যাবে?


- কাচের মরা আলোর বাঁধন
গন্ধক বুঝি? না না, তবে?
দেখো, ছুঁয়ে এসেছি একই থাকা
কবন্ধ, রাক্ষুসে হাঙর, শ্বেত পরি...
তোমার প্রিয় চার কেশরি।




তিলদণ্ড
কতশত ট্যারেন্টুলা চেটে চলে
বিকেলের করাত কার্নিশ
জন্মসঙ্কট শেষ চন্দনকাঠ গানে


যতেক নখ ফুটিয়ে আড়চাউনি
সাজো, ঘোমটা ফালিতে বারবৌ
স্ব-শ্বদন্তে জিভ কষ ফলিয়ে থাকে


মুখ তুলে চাও নষ্টজমিন
অহেতুক আকাশ গন্ধ প্রলয় ডাক
অজস্র, কাকে; আরও যেন কাকে?


পথ ধরা শালপাতার এঁটো
নিমরোদ কুড়িয়ে গঙ্গাজল ছিট ছিট
তবে অক্ষর কুটিকুটি যাক
হিঁচড়ে হিঁচড়ে ক্যাবারে নেচে খালাস
শেষ বিচারে।



একান্তর
চা, বিড়ি, এর মুণ্ডু ওর ধড়
চুপ! চুপ! বত্রিশ প্রদর্শনী এবার
খটখট রাস্তা পার।


কি ভালো মেয়ে, মা'র সাথে
ভোরবেলা স্কুল যায়, দুপুরবেলা ফেরে
এই শীতেও রোজ চান করে যাও?
কি ভালো মেয়ে!


থতমত কচি পিঠে ব্যাগ,
আঙ্গুল চেপে হন্তদন্ত জিন্স-কুর্তির
আশ্বাস পাশে।
ভালো আছেন? রোজ, দেখি
আপনি, আপনাদের।


চলে গেছে, সলিড...
ল্যাম্পপোস্ট ডান বাঁক, আড়াল
কাল থেকে ঘুরপথ কিছুদিন।



বৃত্তান্ত
হেঁটে যাচ্ছ অবাক চালচিত্র, ঘুরে
এক হাত তোমার আওয়াজে ফাঁকা
ডোরবেল বলেছে, আজ আড়ি।


বিসর্জন কুৎসিত ঈশ্বর ভাসে
খড় পুকুর কাঠামো , ভেজা
স্তুপে রোদ সেঁকে চেরা জিভ।


গুনে গুনে দুটো চড়ুই, একটা মাছরাঙা
ব্যস্ত সারা দুপুর, সাথে কটা চোর ছিপ,
উলুঝুলু সোনামানা খেসকুটে সোয়েটার।


ঝুলবারান্দা তুলসীমঞ্চে রোদ নামে
নেমে আসে নিয়ন চাঁদ,
বালিগঞ্জ ওভারব্রিজ বাড়ি ফেরে।