সঙ্গীতা দাশগুপ্তরায়
গ্রীষ্ম
কালবৈশাখী, মেঘবৃষ্টি, রামধনু
সিন্ডারেলার জুতো, স্নোহাইটের আপেল
লালকমল নীলকমলের বিষাক্ত তীর
আমের বৌলের মিঠে সুবাস
সব সামলে উঠে দেখি
রাজপুত্র মন্ত্রীপুত্র নয়
রাজবাড়ির পদ্মপুকুরটিই শুধু আমার ...
পুকুরে চোখের ছায়া ভাসে
আর ফটকের পাশের আমলকী গাছের ছায়ায়
এসে থামে তোমার পায়ের শব্দ...
অপেক্ষার অবসান
বর্ষা
মেঘেরা দ্রুত ছড়ায় কথার মত
জুটিভাঙ্গা শালিখের মনমরা ঠোঁটে একফোঁটা জল পড়ে
অন্যটি খুঁটে খেতে খেতে পথ হারিয়েছে ...
ব্রীজের ওপর থেকে ছুঁড়ে দেওয়া কাগজের নৌকো
জল না ছুঁয়ে উড়ে যায়
বর্ষার আনন্দে মাছওয়ালি বাজারের দোকান থেকে
টুপুটুপু মালপো কিনে ফেরে
মেঘ, ভাসতে ভাসতে একবার মাথা
নামিয়ে দেখে নেয়
ভেজানোর মত সম্পর্কগুলো পথে নেমেছে তো!
শরৎ
মাথা উঁচু করে গড়িয়ে যাচ্ছে সূর্যাস্ত
ছিটকে উঠছে আলতার আভা, পাখীর ডানার
সিল্যুট
দেবদারুর দম্ভ আড়াআড়ি পাহাড়ের খাদে
তুমি নীল জ্যাকেট গায়ে পাথর ভেঙে
নেমে আসছ শুকনো পাতা মাড়িয়ে...
ঠিক এই মুহুর্তে ঝর্ণা খরস্রোতা হোক
অথবা ভেঙ্গে পড়ুক বাঁশের সাঁকোটা ...
... তোমার আমার মাঝের ব্যবধান বড় জরুরী
নইলে জীবন নেহাত গন্তব্যহীন
শীত
ডার্লিং,
কাল সারাদিন শুধু কফি খাব আর টিভি দেখব
পরশু বাড়িতে ফোন করতেও পারি, নাও পারি
সোমবার গ্রসারি, কাস্টমার
সার্ভিসে ধর্ণা
মঙ্গলবার বানাব বীটের কাটলেট বাদাম মটরশুঁটি দিয়ে
বুধবার বইয়ের আলমারি ঘাঁটব, অনেকদিন ডিউ আছে
বৃহস্পতিবার মিছিমিছি রাস্তা হারিয়ে ঘুরব খানিক্ষন
শুক্রবার দেখব পুরোনো ছবির অ্যালবাম
.....এত ব্যস্ততার মধ্যে তোমাকে মনে করার সময় পাব না...
তুমি প্লিজ মাঝে মাঝে মিস কোরো আমাকে, কেমন?
ইতি...
বসন্ত
এ পাড়া আমার অচেনা
শিমূলের সমারোহ, শান্ত সকাল, বেচাকেনা
ছোট পার্ক, উঁচু গেট, ভোরে স্কুলবাস সারি সারি
মুখরা সব্জীওয়ালী.... মোড় ঘুরে আমাদের বাড়ি ...
মুখোমুখি ব্যালকনি , রোদ্দুর
ভাগাভাগি দিনে
বিকেল আগুন ঢালে পলাশের রং-রেখা চিনে
এর মাঝে চোখে চোখ ...
একাকিনী জাগে নিশি ভোর
আবার হবে কি দেখা পথচারী নওলকিশোর?