বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
রোজলিপি
১
যেভাবে ছায়ায় বসে চিবিয়ে নিচ্ছি ঘুম
একে ঠিক বিশ্রাম বলেনা...।
এখন কি নীরবতা !
কথাগুলো মিশে আছে কোথাও হাতড়ে যাই
ঠোঁট নড়ছে না যদিও
মৌলভাব এই সময়ের প্রাত্যহিক জন্মগাথায়
প্রিয় দাগ তবু এই মায়াবী দুপুরে
কি লিখছি আলতু ফালতু মাথামুণ্ডু নেই...
এসব একান্ত আমার কথা, আমারই তো
রোজলিপি ?
ধুলোতেই লিখে রাখি লুপ্ত বিষাদ ।
এই চলমান ছায়া
রাস্তা রাস্তা ... খেলনাপাতি ... ক্ষণিকবিশ্রাম
মুঠো ভরতি বন্ধুনাম
নির্বাচিত সাদাপাতা ওড়ে
শিরা উপশিরা বেয়ে নেমে আসে ফেরমন
জন্মদিনের নীল সোয়েটার ঝুলির ভেতর
থেকে টেনে আনি
আহা শীত
কীভাবে মাপব এই দেহাতি উষ্ণতা ?
রঙের ভেতর রঙ
জ্যোৎস্না ডাঙা , অবেলা বয়স
নিয়ে ঠোঁটের আওতায় ঝুলে চাঁদ
পুড়ে যায় ধোঁয়ার অক্ষর ।
জমে ওঠে শব্দনীড়
বিক্রি করবো এই ধূপ
কাকে ?
কে আছো গন্ধভিখারি বলো , আজন্ম কাঙাল
চার প্যাকেট শব্দগন্ধে পাঁচ প্যাকেট ফ্রী ।
২
কেউ নেই ঝুলে থাকা চাঁদ বারান্দায় ।
ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে আমারই নিঃসৃত ব্যথা
উপসম সম্বিত ফেরানো
নীল পাখি ।
নাম ধরে ডাকি তাকে – শোনো।
বাতাসেই মিশে যায় শব্দগুচ্ছ...
জানি এই শব্দগুলো তরঙ্গেই আছে
হারায়নি, হারাবে না
কোনোদিন
আর তুমি
আগামীদিনের জলবায়ু
রোদ আর আকাশের থেকে পেড়ে আনবে কথাদের
বসাবে তোমারই মনে যদি ভালো লাগে ।
সুখ অসুখের ঘর
যে সুখটুকু আলগা ছায়ার মধ্যে জড়িয়ে
আছে
ঠিক ততদূর যাব
পা বাড়াচ্ছি
বাড়িয়ে দিচ্ছি হিসেবকলের তথ্যপঞ্জি
আর জ্যোতিষের বরাভয়
আমার সুখ অসুখের ঘর নির্বিকার
হেসে ওঠে ।
গোপন চাঁদের ক্ষত
মনখারাপের চাঁদ বুকপকেটে
হেসে উঠি বারবার
অভিনয়
বিষণ্ণ সিন্দুকে
আছে তোলপাড় স্মৃতি , পাথরের ঘোড়া
নিরুচ্চার শব্দগুলি উষ্ণতা পায়
খাতায়
পাতায়
বুকে
চিবুকে গোপন চাঁদক্ষত ...
চিত্র বিহ্বল দিন
লু বইছে , জ্বালা ঠোঁট
গোধূলির ফ্রেমবন্দী তাপ সন্দীপন
অযত্নের বিপর্যয় এসো
হেসে ওঠো অনভিপ্রেত
ঋজু প্রায় স্বপ্নদরজার পাশে
পাখিদের গানগল্পে এখনও দেশান্তরী হাওয়া
চিত্র বিহ্বল দিন
হেসে ওঠে তোমার বিদ্যুৎ ঠোঁটে
প্রতিরোধ হীন
তবু সাফল্যের ভয় ।
চশমা মুছলে অদৃশ্য ছবিগুলি হাঁটে ।
কুয়োতলি মেঘ
ঠিকানা হারানো ঘুম
পায়ে পায়ে কুয়োতলি মেঘ
ভৌতিক সুলুক কেউ জেনে গেছে আজ
উৎফুল্ল কুসুম দিন ফুটে ওঠে নিবিড় আশ্রয়ে
দেশছাড়া হই......
ঝিমানো মজলিশে গাই ঝুমুরের গান