সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭

দেবব্রত তাঁতী



দেবব্রত তাঁতী

একা

দূরাবস্তা দূরপনেয় রাত্রির কলঙ্ক
যেখানে আগুন থাকার কথা আজ
সেখানে এক বহ্মপুত্র নদ

একা থেকে থেকে আরো একা হতে হতে
একাকিত্ব সঙ্গী হয়েছে

সোনালি সূর্য ঢাকাপড়ে
ধূসর , ক্লান্ত বিকেলে পায়ে হেঁটে কারা ফেরে

ঈস্পাতের বুকের ওপর ঘা দিয়ে দিয়ে
প্রথমে নরম শেষে পরিণত গিরিখাত

দিন দিনের মতো , রাত রাতের

আশেপাশে চেয়ে দেখো মিথ্যে হাসছে
খেলছে কথা বলছে ,

শেষ ট্রেন ফিরে গেছে ফাঁকা , সঙ্গীহীন
স্টেশনে আমি আজও একা ।






নিজেকে উৎসর্গ

দেখি কোন ঘাটে বাধা পড়ে মন
ঘুরে ঘুরে ফিরি

দেখি কতদূর জল এগোয়
সহ্য করতে পারি কই

বলি শোন দুঃখ কারোরএকার নয়

তুই সেই বোকা প্রেমিক যে কিনা
প্রেম হারানোর ভয়ে প্রেমিকাকে অন্যের
কাছে ভালোবাসতে হার মানায় ।

তাই তুই নিজেকে নিজের মতো ভেবে
নিজেকেই বোঝাস
উড়ে যাওয়া পাখি আর তার বাসার ভালোবাসা ।







অমাবস্যা

আজ আকাশ একলা । একটিও তারা নেই ।
যে তারা গুলো একসময় মিটিমিটি জ্বলত নিভত
খসে পড়েছে নাকি হারিয়ে গেছে অন্য আকাশে ।

এখন অমাবস্যার রাত , আলো ক্ষীণ হয়ে আসে
হয়তো এক দমকা হওয়া আসবে
প্রদীপের আলোটা নিভে যাবে ।

কাজ ফুরিয়েছে । নিজের বলতে কিছুই নেই
সব বিলিয়ে দিয়েছি ;
এবার ধীরে ধীরে সরে আসতে হবে
পথ শেষ প্রান্তে অপেক্ষারত মৃত্যু ।

যাই এবার , নিজের কবর নিজেই খুঁড়ে রাখি
শুয়ে পড়ি , ঘুম আসছে...







সংশয়

লুকিয়ে ছিলি বেশ ছিলি
হটাত কেন জেগে উঠলি ।

পাখি , তুই কেন ধরা দিলি
তোর জন্য কষ্ট বেশি ।

রাতের পরে রাত কেটে যায়
চোখে আমার ঘুম নাই ।

এই বুঝি তুই ফাঁকি দিলি
শিকল কেটে উড়ে গেলি !

কেন আমার এ সংশয়
আসলে তুই তো আমার আশ্রয় ।







হোক সর্বনাশ!

নেই মাথার সিঁদুর
নেই হাতে শাঁখাপোলা
তবুও জন্মের গর্জন আর সারাজীবন নেকামো কান্না

ঝুরিভাজা মেয়েটির সর্বনাশে
ফোঁটা ফোঁটা রক্ত ঝরে
সিঁড়িপথ বেয়ে

রাতের অন্ধকারে আলপনা এঁকেছে
হাতের ভিন্ন রংতুলিতে
তাতে বিঘ্ন আবার ঘটতে পারে

বিপদ এড়াতে ফিরিয়ে দাও তাকে
কে বুঝবে কার কাছে
কে আসবে

জানো যদি এগিয়ে এসো
নিয়ে যাও সুন্দরী কমলার গায়ের গন্ধ
নইলে আতরের গন্ধে বিভোর হয়ে ঘুমাও
আবার সর্বনাশ হোক !
হোক সর্বনাশ , নইলে যে
জীবন জীবনে ফিরে আসবেনা !