সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭

পৃথা রায় চৌধুরী




পৃথা রায় চৌধুরী

মিছিমিছি

কতগুলো ওড়া দেখেই খুশি ছুঁলে
আপাত বলতে বোঝার অবকাশ
ছিল, বস্তুত ছিল না;
ঠুলির ভেতরে মানা-না-মানা
পুষে রাখা আসলেই।


চশমার পাওয়ার চেক করিয়ে
ফিরে দেখো, পাখী?
চামচিকে? রক্তচোষা ভ্যাম্প...
তবে সমানে কেন দেখে যাই,
সারসার পিঁপড়ে ভেসে যায়
নির্বোধ চেতনা চিরে।


অণুবীক্ষণে দেখো, প্রত্যেকে
জোড়া ডানার ভারে শ্লথ এগিয়ে
চরম থামার অমোঘ টানে।





সাত পাক উত্তীর্ণ

আনমনে ঝুলছে "শুভ বিবাহ"
ইতিউতি ছড়ানো ছেটানো খাঁখাঁ
চেয়ার টেবিলের পরকীয়া চুপিসাড়ে
বুড়ি রজনীগন্ধারা রসালাপে ফিসফিস।


অনেক উলুধ্বনি এখন পরবাসে
দুয়োরে দুধ উথলিয়ে আলতা চন্দন
কাজললতা, চিনে নিতে চায়
হাতের মুঠোয় ছটফট
জ্যান্ত পাখনা, সাবধানী রুমাল চেপে।


ইনি পাড়াতুতো, উনি অমুক...
কোমর যেন বেশ ফ্লেক্সিব্‌ল থাকে
খানিক পরেই উচ্চারিত হবে,
"এখন থেকে তোমার
ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নিলাম।"


ব্যস, নিশ্চিন্ত যাপন
কাল পাতে পাতে
নতুন শাঁখার পরমান্ন।





রংচংসং

এতো ভাঙ্গাভাঙ্গির দরকার ছিল না
হলই তো সব খাক,
গোটাই না হয় চুল্লিতে সেঁধিয়ে
বলতে পারতাম,
তোর জন্য এও করতে পারি, দেখ
দেখ; দেখ না রে একবার।


সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেলো
কোন অপেরা, কোন অপেরা...
ধুস, কম সে কম নামটা তো বল!





পৌষালী

হ্যারিকেন জ্বলা সাবেকি রান্নাঘর পিঁড়িতে মেয়েটা,
দুই... তিন... চার... ষোলো...আঠেরো... একুশ...

গনগনে আঁচে এই বড়ো হাঁড়ি কাপড় চাপা,
সেদ্ধ পিঠে,
পেটে খোয়া, তিল, নারকেল।

চুপি চুপি নারকেল পুরের হাতসাফাই
জ্যেঠিমা, মা, কল্পনা পিসি...
দেখে নি, দেখে না।

লোডশেডিং শেষে, ফিনিশিং টাচ
ধোঁয়া চুমু দেয়াল, সরুচাকলির আবেশ
গুড়ের বয়েম হাজির... বালি বালি।

পরদিন বাসি, ভাজা, তেলা স্বাদ।

#
বয়ে আনার দায় থাকে কোনো এক লোকাল ট্রেনের
অচিন মায়ের স্নেহ...

"মা, অনেক দিন পরে তোমার হাত পেলাম
পাটিসাপটায় সংক্রান্তি।"




যা কিছু বাকি

সেখান থেকে শেষের শুরু করা ভালো
যেখানে বিদায় দেবার কথা কেউ বলি না
অহেতুক কানে আসে, ভালো থেকো তুমি।


ঠিক সেখানে ধর্মতলা থেকে বাস,
স্বপ্ন ভাঙতে ভাঙতে ছুট দেয়
কানেক্টারের বিধিসম্মত নিষিদ্ধতায়।


মনে করতেই হয় ছোট্ট চড়ুই বলেছিলো
একদিন সে দুষ্প্রাপ্য হবে
খেলার জাদুঘরেও তার অমিল বিঁধে যাবে,
বেয়োনেটের মতো।


হিংসুটে শান্তির জল মনে রেখে দেয়
জন্মদিনে নতুন গুড়ের পায়েস চেয়েছিলো কেউ।