মৌ দাশগুপ্তা
স্বপ্ন
জ্যোৎস্নার
আঁচলপ্রান্তটুকু ছুঁয়ে ঘুমিয়ে আছে ,
হলুদপাখীর
বুকের ওমটুকু মেখে নিয়ে কুটুম কাটুম,ইষ্টিকুটুম...
বিনি
সুতোয় গাঁথা স্বপ্নেরা জ্যামিতিক নিয়ম না মেনেই
নির্বোধের
মতো ছড়িয়ে পড়ে নিষিদ্ধ ত্রিকোণের এ-কোণ থেকে ও-কোণ,
ঘুমলেপা
কাজলে কলঙ্কদাগ মেখে নেয় রহস্যময়ী তর্জনীতে।
রাতজাগা
তারারা স্বপ্নের নিয়ে এক-একটা গল্প বোনে,আর উড়িয়ে দেয় ।
উত্তর
থেকে পশ্চিমে, পশ্চিমেরটা দক্ষিনে।কখনো পূবে।
হলুদপাখী
স্বপ্নে উড়তে চেয়েও ফিরে আসে গর্ভবতীর বিষণ্ণতায়।
স্বপ্নের
শেষটা আমারও জানা নেই ,তুমি বরঞ্চ কাল এসো।
আনকোরা
নতুন আরেকটা স্বপ্নের কথা বলব তোমায়...
পরিচয়
সেদিন
আকাশে ঝড় ছিলনা ,আদিম ঝড় উঠেছিল মনের কোনে।
উচিত
অনুচিত, শ্লীল অশ্লীলের ভেদাভেদ মুছে ,
বৃষ্টির
ফোঁটায় ভিজে উঠেছিল দীর্ঘদিনের অনাবাদী জমি।
কর্ষিত
জমিতে বপন হয়েছিল অনাকাঙ্ক্ষিত বীজ।
সনাতন কূপমন্ডুকতা
বলেছিল
অনাকাঙ্ক্ষিত
অংকুরের দায় কৃষকের নয়,শুধু মাটির ,
তাকে
রাখা বা উপড়ে ফেলাও দৈনন্দিন কৃষিকাজের অংশবিশেষ।
তবু
আজো, রাতবিরাতে প্রথামত ঝড় উঠলে,
মাটি
বোঝে না অরণ্য,সাজানো বাগান,
নাকি
ফসলভরা ক্ষেত, কি তার পরিচয়!
বসন্ত
অনেকগুলো
পাতাঝরা দিন আর আগুন-পোহানো রাত পড়ে রয়েছে পিছনে....
সামনে
সাদা বালি-বালি রোদেরঢেউতোলা পথ অথবা রাতচরা রেশমী রাস্তা
তারপরেই
সবুজের স্বপ্ন চোখে মেখে শবরীর মত প্রতীক্ষায় যে ঋতুমতী বিকেল
তার
খোলাবুকেই নি:শর্ত আত্মসমর্পন!!!
লজ্জায়
লাল তখন শেষসূর্যের আলোও...
আকাশে
বাতাসে কানাকানি...গাছে ঘাসে ফিসফিসানি..বন্য গুঞ্জন
ইঁট
কাঠের শহর জুড়ে অঙ্কুরোদ্গম উল্লাস
"বসন্ত
এসে গেছে..."
ধুলিজন্ম
এভাবেই
শহর জুড়ে হঠাত্ ওঠে বেহিসাবি ধুলিঝড়...
হোর্ডিং
থেকে বহুতলের কাঁচের জানলা .,তারপর নদীচ্ছায়া প্রতিবিম্ব...
মিহি
মিহি ধুলোর রেণু হয়ে অভিমানী পরাগ উড়িয়ে যায় দমকা হাওয়া...
নদীজন্মের
রহস্য ভুলে এ পুরুষ শহর বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ...
আরো
সুখ ..আরো ভোগ.. আরো অসম্ভবের নেশায় মাতাল হয় শহর...
সবটুকু
লাবণ্যময় দিন আর লাস্য়ময়ী রাতের পরে
শহরের
অলিগলি রাজপথহাত ধরাধরি করে হেঁটে যায়
নির্জন
পার্ক..মৃত ল্যাম্পপোস্ট পেরিয়ে আরো ধুলি অববাহিকায়..
সেখানেই
নারীবেলার আলোটুকু গায়ে মেখে আঁচল পাতে যে পোয়াতী নদী....
শহরের
সব রতিসুখ, উন্মুখ হয়ে থাকে আরেক ধুলিজন্মের আসন্ন সম্ভাবনায়...
কর্ষণ
গ্রহণ
লেগেছে,ফুরিয়ে যাচ্ছে সুর্য্যমুখী দিন।
নক্ষত্রের
ঘ্রাণ মেখে আকাশ চেয়ে আছে অনিঃশেষ,
মুছে
যাচ্ছে চার দেয়ালের যতি—
নিভে
যায় দৃশ্য, দৃশ্যের অপর পারে নিভে আসে মানুষের চোখ।
রাহু
কেতু নয়,সূর্য্যকে ঢেকে রাখে নিভন্ত চোখের নদীপথ ক্লান্তি।
নদীপথ
ফুরালেই আদিম অরণ্য কথা বলে,
অন্তহীন
কথকতা,বুকে তার অনির্বাণ অতৃপ্ত দাবানল।
দিগন্তে
বয়ে যায় কর্ষিতা পৃথিবীর অজানিত দীর্ঘশ্বাস।
নিরাকার
চোখে আকাশ নদী অরণ্যের এইসব দৃশ্য ভ্রম হতে থাকে।