প্রাকৃতিক ও রাজনৈতিক বিপর্যয়ের সময়ে জনমানুষের
জীবন রক্ষার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই হতে পারে না। কাঁটাতারে বিচ্ছিন্ন এই
বাংলার উভয় প্রান্তেই সাম্প্রতিক বন্যায় লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে যে প্রাকৃতিক
বিপর্যয় নেমে এসেছে, তার কতটা অংশ প্রকৃতিক আর কতটা অংশ রাজনৈতিক সে তর্কের সময়
এখন নয়। যদিও এই বিপর্যয়ের পেছনে রাষ্ট্রীয় অপদার্থতার ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত
নদীতে বাঁধ দেওয়ার অন্যতন যে উদ্দেশ্য, বন্যা নিয়ন্ত্রণ; সেটির বাস্তবায়ন নেহাতই
আকাশকুসুম কল্পনায় পর্যবসিত আজ। না হলে এই একবিংশ শতকে এসেও এইভাবে বিপর্যয়ের সম্মুখীন
হওয়ার কথা ছিল না জনমানুষের। এইরকম প্রকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে প্রথমেই যেটা দেখা
যায়, রাজনৈতিক দলগুলির ভোট দখলের রাজনীতি আর ত্রাণ নিয়ে ব্যাপক দূর্নীতি। যার
মধ্যে দিয়েই মানুষকে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার লড়াই করতে হয়।
নদীর জল নিয়ে প্রতিবেশী দেশের মধ্যে স্বার্থের টানাটানিতে
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ। প্রান্তবাসী জনসাধারণ। বাংলাদেশের
অবস্থানগত অসুবিধার কারণেই এই বিষয়ে ভারতবর্ষের নদী নীতির উপরেই নির্ভর করে
বাংলাদেশের নদীর জলপ্রবাহ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাও প্রায়
উনিশ বিশ। সবটাই ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির উপর নির্ভরশীল। দুঃখের বিষয়, নদীর
জলপ্রবাহ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দুটি দুই বাংলার হাতে নাই। আর
এইখানেই নির্ভর করতে হয় ভারতীয় নদী বিষয়ক পরিকল্পনাগুলির উপরেই। রাজনৈতিক
শক্তিগুলির উচিৎ এই বিষয় পারস্পরিক ভেদাভেদ ভুলে দুই বাংলার জনস্বার্থের কথা মাথায়
রেখেই ঐক্যমতের ভিত্তিতে ভারতীয় রাষ্ট্রশক্তির সাথে সদর্থক আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে
নদীর জলপ্রবাহ ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বিষয়গুলির সুষ্ঠ সমাধানের জন্যে সর্বাত্মক ভাবে
চেষ্টা করা। হ্যাঁ সেরকম প্রয়াস একেবারেই যে হয় নি, বিষয়টা তেমনও নয় আদৌ।
প্রচেষ্টা হয়েছে। তাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সদর্থক ফলও মিলেছে। কিন্তু সেটা
প্রয়োজনের তুলনায় যৎসামান্য মাত্র। আর সেইজন্যে এই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবনা
চিন্তা শুরু করা আশু প্রয়োজন। দেখতে হবে ঠিক কোন কোন জায়গাগুলিতে ফাঁকফোঁকর রয়ে যাচ্ছে
বিস্তর। যে কারণে জনমানুষের জীবনে বারবার নেমে আসছে এমন ভয়াবহ বিপর্যয়!
সত্যি কথা বলতে কি এইরকম বিপর্যয়ের সময়ে মাস দিন
ঘন্টা মিনিট মিলিয়ে মাসিক কবিতাপত্র প্রকাশ করা অনেকটা প্রায় রোম নগরীর পুড়তে
থাকার সময়ে নীরোর বেহালা বাদনের মতো মনে হয়। মানুষের ঘরবাড়ী জলে ভাসছে। নিত্য
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছাতে পারছে না সর্বত্র। প্রয়োজনীয় ত্রাণের অভাবে মানুষের
ঘরে ঘরে হাহাকার। অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের সংকটে দিশাহারা জনমানুষ। সেসময় কবিতার
সময় নয়। কবি লিখেছিলেন, “ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন,/ বেলা ব’য়ে যায়, খায়নি কো বাছা,
কচি পেটে তার জ্বলে আগুন”। বন্যা দুর্গত মানুষদের জন্যেও তেমন ত্রাণের বদলে
কবিতাপত্র প্রকাশ সেই একইরকম মর্মান্তিক বিষয় হয়ে ওঠে।
যদিও কবিতা তো জীবনের দূরবর্তী কোন শিল্প মাধ্যম
নয়। জীবনেরই শৈল্পিক উদ্ভাসনের অন্যতম দিগন্ত হল কবিতা। তাই কবিতায় সমাজবাস্তবতার
একটা দায় ও দায়িত্ব যেকোন কবিমানসের অস্থিমজ্জায় প্রচ্ছন্ন রয়েই যায়। সরাসরি কোন
প্রভাব পড়ুক আর নাই পড়ুক। আর সেই কারণেই কান্না হাসির দোল দোলানো পৌষ ফাগুনের
মালায় কবিতা শেষমেশ কিন্তু জীবনেরই দায় মেটায়। আর যাই হোক জীবন থেকে বিচ্যুতি কবিতা
নয় কখনোই। তাই জীবন বাস্তবতার পরতে পরতেই কবিতার চলাচল।
বিপদে ও সম্পদে তাই কবিতার একটা না একটা প্রচ্ছন্ন ভুমিকা রয়েই যায়, যাবেও।
তাই সময়ের নির্ঘন্ট মেনেই প্রকাশ হল কবিতাউৎসব
ভাদ্র ১৪২৪ দ্বিতীয় বর্ষ সপ্তম সংখ্যা। এইসংখ্যার বিশেষ আকর্ষণ তরুণ কবি ও সম্পাদক
শৌনক দত্তের সুদীর্ঘ সাক্ষাৎকার। সমাজ সংস্কৃতি সমকাল বিষয়ে তরুন প্রজন্মের
প্রতিনিধিত্বের একটি স্বরূপ খুঁজে পাবেন পাঠক শৌনকের বিশ্বাস ও চেতনার দিগন্তে।
তার সাহিত্যবোধ ও জীবনবোধের সংমিশ্রনের পরতে পরতে। অন্যান্য প্রতি সংখ্যার মতোই এবারেও কবিতাউৎসবের উপহার দুই
বাংলার শতাধিক কবিতার বিশাল সম্ভার। সারা মাস ব্যাপি কবিতায় থাকার কবিতার সাথে
থাকার একান্ত অবসর।
কবিতাউৎসবের ফেসবুক পেজ :
https://www.facebook.com/amaderkobitautsov/ কে লাইক করে ফেভারিট করে রাখলে কবিতাউৎসবের
যাবতীয় তথ্য ও বিজ্ঞপ্তি সরাসরি আপনার ফেসবুক ওয়ালেই দেখার সুযোগ ঘটবে। এই পেজেই
কবিতাউৎসবে প্রকাশিত কবিতাগুলিও নিয়মিত প্রচারিত হয় লিংকসহ।
এবং এরই সাথে কবিতাউৎসবের ফেসবুক গ্রুপ:
https://www.facebook.com/groups/kobitaautsov/# এ জয়েন রিকোয়েস্ট পাঠালে গ্রুপের সদস্য হিসাবে
গ্রুপের ওয়ালে আপনার কবিতা ও কবিতা বিষয়ক মূল্যবান মতামত সরাসরি পোস্ট করে সকল
সদস্যদের সাথে শেয়ার করেও নিতে পারবেন। গ্রুপের পিনপোস্টে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট
নির্দেশাবলীও দেওয়া আছে।
এছাড়াও কবিতাউৎসব গুগুল কমিউনিটি:
https://plus.google.com/u/0/communities/117144176931778027450 তে সরাসরি জয়েন করে একটি সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটের মতো সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।
এখানে আপানার কবিতা পোস্ট করার সুবিধা ছাড়াও আপনার নিজস্ব সাহিত্য ব্লগের লিংক
নিয়মিত ব্যবধানে প্রচারের সুবন্দোবস্ত ও অন্যান্য একাধিক বিভাগে আপনার যোগদানের
সুযোগ রয়েছে। রয়েছে সুস্পষ্ট নিয়মাবলীও।
***কবিতাউৎসবে লেখা পাঠানোর সাধারণ নিয়মাবলী:
১) স্বনির্বাচিত স্বরচিত ৫টি প্রিয়কবিতা পাঠাতে হবে
২) অভ্র বাংলা হরফে টাইপ করে একটি এমএস-ওয়ার্ড ফাইলে এটাচ করে
৩) কোনভাবেই পিডিএফ ফাইল ও বিজয় ফন্ট গ্রহণযোগ্য নয়
৪) একটি প্রফাইল চিত্র অতি অবশ্যই আবশ্যক
৬) পাঠানোর শেষ দিন প্রতি বাংলামাসের ১লা তারিখ
***কবিতাউৎসবে প্রকাশিত কবিতার স্বত্ত্ব লেখকের
নিজস্ব।
কবিতাউৎসব আপনার
সৃষ্টিশীলতার প্রতি ঐকান্তিক শ্রদ্ধাশীল থেকে সবরকমের সহযোগিতার বিষয়ে সাধ্যমত
অঙ্গীকারবদ্ধ। কবিতাউৎসবের সাথে থাকুন কবিতাউৎসব আপনার পাশে রয়েছে সবসময়।