অরুণিমা মন্ডল দাস
শুধু কবিতার জন্য
হ্যারিকেনের
উত্তাপে ভেঙে যাওয়া হৃদয় --
রেলগাড়িতে
পা ফসকে যাওয়া পিচ্ছিল প্রেম--
জেগে
উঠবে লাস্ট বাসরে
কবিতা
শুধু
তোমার জন্য--
কলকাতার
এলোমেলো গলি স্বাধীনতা দিবসে ফ্ল্যাট চত্বরে ঘুরবে--
বস্তির
মেয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার হবে---
কবিতা
শুধু
তোমার জন্য
আধোয়া
শালপাতা সোনার প্রসাদে ভরে যাবে---
গিরিগিটি
মনগুলো বিয়ে করবে---
সাপের
অসুখে ব্যাঙ ভালোবাসবে --
ছোটোবেলার
পড়া আলাদীন বলে দেবে
পরীক্ষায়
কেউ লিখে দেবে--জ্যামিতিতে পেনসিল কবিতা আঁাকবে--
কবিতা
শুধু
তোমার জন্য----
আবেগগুলো
পরকীয়া
দিব্যি
হেঁসেলের বাসন কোসন
বারবার
ঝনঝন শব্দ
বিশ্বাসঘাতক
মুচকি হাসি---
এক
কামরা বাড়ির পুরোনো সিমেন্ট
খসে
যাওয়া দুর্বলতার হুক----
জড়াজড়ি---টানাটানি---
ছেঁড়াছেঁড়ি আদর----
গরম
আবহাওয়া ---শান্তির ফ্যাকাশে দেহ পড়ে থাকে বিছানায়---
কবিতা
শুধু
তোমার জন্য---
ভাদ্রমাস
তালের
বড়ার সংগে নরম তালের পায়েশ
চারিদিকে
ঝিমানো রোদ্দুর
দুর্বল
গৃহবধুর জলের কলশী
মাঠে
ধানের চারা রোপন
মিড ডে
মিলের খাওয়ার পর স্কুলের শেষ ঘন্টা
চোখ
ভালোবাসা খুঁজছে---মন খাওয়ার
শরীর
চাহিদা --আহারে--গরিবের একি হাহাকার--?
সকালের
পান্তা ভাতে কঁাচালঙ্কা --চাষীদের ওষুধ
দুপুরে
মাছের ঝোল --সন্ধ্যে মুশুরী ডাল আর দুধ
স্কুলের
ব্ল্যাকবোর্ডে শেক্সপীয়ার--গণিতের আর্কিমিডিস
টিউশান
হীন আধা পড়ুয়া র মাথায় ঘোরে বড়ু চন্ডীদাস আর শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনের বিন---
হঠাৎ
রোদ্দুর হঠাৎ বৃষ্টি
কলকাতার
রেডপার্টি স্টার্ট-----
পেঁচায়
বাজায় বঁাশি --নাচে শালিখ আর চিল--¡
বাংলাদেশ
স্বাধীন
বাংলাদেশ
হে
বঙ্গবন্ধু!
রোদ্দুরে
ভেজা সোনার বাংলা
হিন্দু
রমনীর রূপোর তুলশী তলায়---
বাংলাদেশ
পায়ের
গোড়ালী গলা কাটা দেহের রক্তে রাঙানো স্বাধীন বাংলাদেশ
বঙ্গবন্ধু
প্রধানমন্ত্রীত্বের
বিদেশী পান খান নি
জয়
বাংলা র মন্ত্রে দীক্ষিত প্রান
সাত ই
মার্চের রক্তঝরা ভাষণে অনুপ্রাণিত
শহীদ
দল
বঙ্গবন্ধু!
শত শত
মাথার বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা
পাকিস্তানি
মিলিটারি শাসনে ঝরা পড়া সদ্য কৈশোর যৌবন ----
সাচ্চা
মুসলমানের চোখের জল
বঙ্গবন্ধু¡
পাকিস্তানি
দৌলতে পাওয়া স্বাধীন ঈদের মসজিদ
লুকানো ভেজা তুলশী পাতা আজও
মসজিদের
ইটের ফঁাকে কঁাদছে----
বোরখার
ভিতরে লাল সিঁদুরের কত জিজ্ঞাসা--কৌতূহল---নিশ্চলভাবে তাকিয়ে এক মুক্ত বোবা পাগল---¡
কবিতায় স্বাধীনতা
কবিতা
১৫ ই আগস্ট মানে না---
শ্রাবনের
বৃষ্টি কে বড্ড ভালোবেসে
ভাদ্রে
র পতাকায় রামধনু আঁাকে----
কবিতার
কোন দিবস নেই
বন্ধন
নেই
অহেতুক
রাজনীতির মিছিল নেই
সুপারিশের
কাক তাড়না নেই---
হাতখড়া
ঘাসের
আগাগোড়া হলুদে মুড়িয়ে
কবিতা
শুধুমাত্র মাঝের সবুজ রসেই
ডুবতে
চায়
অণুর
শিকলে বন্দী এক বিরাট নার্ভের স্নায়ু
স্বরবর্নের
চিৎকারে ব্যঞ্জনবর্নের হইচই
নেতাজীর
নিরুদ্দেশে বঙ্গভঙ্গের হুঙ্কার---
অহিংসার
সুপারি ভিজে ন্যাতানো জড়দা----
কবিতা
নামছে
---উঠছে ---বর্ন ,ভাবের সিমেন্টে ----প্লাস্টার ---
শব্দচয়নে
হাতুড়ি র ঘা---
কখনও
বমি, কখনও কল্পনা,
কখনও পেটখারাপ----
তবু
স্বাধীনতা র জলসা---
কবিতায়
পত্রিকায়
বিরাট বিরাট অক্ষরে ছাপা নাম
কালো
কালো হাসি
দঁাতগুলো
সাজানো
মুখগুলো
অনেক বছর থেকে কবিতা পাঠের আসরে ঘুরছে
পাঞ্জাবী
সার্ট শাড়ি জিনসের চেনা ঘামের দাগগুলো মিলিয়ে যাচ্ছে
পরিষ্কার
খসখসে অচেনা ঘায়ে----
ঠিক
কিভাবে দঁাড়াতে হতো প্রথম কবিতায়---
তা আজ
নজরুলের মনে নেই---
বিদ্রোহী
আত্মাগুলো একবার মানুষ হয়ে গেলে
আর
ফিরে আসে না সোনার বাংলায় --মুক্তিযুদ্ধে-- কারগিলের অনামা মৃত সৈনিক চেতনায়----