প্রথম আলো
রঞ্জনা রায়
অনেক চড়াই
উৎরাই পেরিয়ে
পাকদণ্ডীর
বাঁকে ...
আমি
চেয়েছিলাম বিশ্বস্ত হতে
তোমার আমার
নিজস্ব অর্কিডের
বেগুনী আভায়
–
আকাশের
কাছাকাছি থেকেও
মাটির সবুজ
মখমলি চাদরে
রোদের
ছোঁয়ায় গুপ্তধন খোঁজে
মেঘময় ঋদ্ধ
মনন –
উৎসেই জাগে
সত্যের প্রথম আলো ...[কলেজ স্ট্রীট পত্রিকা ]
জীবন
রঞ্জনা রায়
অনেক কিছুই
সাজিয়ে রেখেছি দেয়ালে ,
তাকে , কাঁচের
আলমারির ভেতরে ,
অনেক কিছুই
জমিয়ে রেখেছি – ওয়াড্রোবে,সিন্দুকে , লকারে ।
জমাচ্ছি , সাজাচ্ছি – এক অজানা
শর্তকে সামনে রেখে ,
এক অলিখিত
নিয়মে।
ছোট ছোট
স্তূপ , মস্ত
পাহাড় হয়ে ওঠার আশায় –
ভবিষ্যৎ
স্বপ্ন বোনে ।
জমাতে , জমতে ধস
নামে পাহাড়ে
হারায় সবুজ
পাইন বন , প্রাচীন
গুম্ফা ;
ভেঙে পড়ে
সাজানো বাড়ি ।
সাজানো
হারানোর খেলায় ,
জীবন কি
অমূল্য কিছু পায় ?
[ট্রিগারে
ঠেকানো এক নির্দয় আঙুল] (প্রতিভাস)
ওরা –
দুজনে
রঞ্জনা রায়
সব অন্ধকার
রাতের পেছনেই –
কিছু নাটুকে
সন্ধ্যা খেলা করে ।
সেই সব লাল
পরী সন্ধ্যায় ,
অনেক পাকানো
সুতো জড়ো হয় ।
তাসের পর
তাস জোড়ে ,
তাসের
খেলাঘরে সাজায় বনসাই ।
সন্ধ্যার
ঢালু প্রান্ত দিয়ে –
তাসের
খেলাঘরে নেমে আসে রাত ,
নেভে আলো ।
তখনই
বসন্তের হঠাৎ উঁকিঝুঁকি ওদের খেলাঘরে !
লেপের ফাঁক
দিয়ে দেখে নেয় ,
দুরত্বের
এককে কত কাছাকাছি
দুজনে ওরা – এই খাটের
কোটরে ।
ওরা ঘুমায় – শুধু ওদের
অনুভূতি গুলো ,
ছবি এঁকে
যায় ঐ সাদা ক্যানভাসে ,
কখনো রঙিন – কখনো বা
তৃষ্ণার্ত ফ্যাকাসে ।
(কবিতা সীমান্ত)
সেই তীর
রঞ্জনা রায়
এক নির্জন
পাইন বনের সীমান্তে বসে আছি একা
স্বর্গীয়
রাত্রির মোহনায় ভেসে এলো ,
চাঁদেপূর্ণ ভেলা ।
দূরে জ্বলে
বিন্দু বিন্দু আলো ,
ঘরের স্বপ্নে বিভোর মন
চন্দ্রডিঙায়
একলা ।
বাঁশিতে
বাজলো বাগেশ্রী বিস্তার ,
সাতনরী এক জ্যোৎস্না হার !
শ্যাম্পেনে ভরপুর
পৃথিবীর প্রতিটি চুমুক
তুমি আর আমি
–
মাঝে অনেক
বিকল্প নদী বয়ে যায় ।
এক মোহনীয়
রতি থেকে যায় অজানায় ।
[ট্রিগারে ঠেকানো এক নির্দয় আঙুল] (প্রতিভাস)
লাল শার্ট
রঞ্জনা রায়
ধূলোমাখা , কিছুটা
ছেঁড়া , একটা
রক্তমাখা লাল শার্ট ;
জুঁই ঢাকা
বিছানায় রাখা আছে ।
এটা
কিনেছিলাম প্যান্টালুনসের সেলে
গত আগস্টে , অনেক বেছে ।
ব্যঙ্গ
হাসিতে তোমার চওড়া চোয়াল
গিয়েছিল
কুঁচকে , মজারু
আমেজে ।
এক উতপ্ত
দুপুরে , তোমার
উন্মুক্ত বুকের উপর ;
রেখেছিলে
সেই লাল শার্ট
বলেছিলে , প্লিজ একটু
হেল্প কর ,
বোতাম গুলো
খোল চটপট ।
তোমার উতপ্ত
শরীর ঘিরে সেই –
লাল লাজুকতা
আমি দেখেছিলাম দু – চোখ
ভরে ।
লতা দোল খায়
ছায়াময় গাছের আদরে ।
সাত দিন আগে
জঙ্গী হানায় ,ছিন্ন
– ভিন্ন
মুম্বাই মেল ।
মানুষের
রক্ত তৃষ্ণায় – প্রতিনিয়ত
মানুষই উদ্বেল ।
আজ সকালে
এসেছে তোমার কফিন ঢাকা নিথর বরফ দেহ ।
পার্সেলে
এলো একটা লাল শার্ট –
হয়তো সেটাই ,
নিরর্থক
সন্দেহ ......
আজকে শরত
পূর্ণিমায় – আকাশে
চাঁদ বড়ই উচ্ছ্বল !
আমার কোল
জুড়ে সেই লাল শার্ট –
এক নিরক্ত
নিসিদ্ধ ফল ।
[ট্রিগারে ঠেকানো এক নির্দয় আঙুল] (প্রতিভাস)