রোদ নামের মেয়েটি
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
রোদ নামের মেয়েটি দরজায় দাঁড়ালে হারমোনিয়াম বাজতে থাকে ।
তার টলোমলো পা, আধো আধো কথা, আলতো ছোঁয়া
এসবই কখন যেন সচল ছবি হয়ে যায়
মাটির দিকে চোখ ফেরাই...
ঢেঁকির শব্দ বোনে তাঁতঘর ...
এমন কুসুমদিনে মেঠোপথ পার হয়ে আসে
কেউ ।
দীর্ঘ হয়নি ছায়া
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
আবিলতা লেগে আছে পায়ের অক্ষরে । সোনালি চৌকাঠ স্থির রিক্তপথে
আল্পনার সার্থক অ্যালবাম ...
মিষ্টি সকাল ,উষ্ণ দুপুর, লাজুকবিকেল ... এসব কোলাজ
গন্ধ ঝরাতে ঝরাতে কেউ ফেলে গেছে কাল
এক টুকরো আলো পকেট থেকে বের করে দেখি
রুমালে তার দাগ লেগে আছে মন খারাপ
বন্ধু
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
একলা উদাস মন
কে যেন তাও সঙ্গে আছে
আমার সারাক্ষণ ।
হাত বাড়িয়ে দেখি
অচেনা কেউ , তার ভেতরে
আমার ছায়াই এ কি ?
গল্প করার নামে
হাজার কথা অগোছালো
সহজে আর থামে ?
মনের ভেতর ঘর
অন্য আমি ছুঁয়েছে হাত
বন্ধু পরস্পর ।
সিনেমাখোর মেয়েটি
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
কী নিপুন অন্ধ সেজেছে দ্যাখ
সিনেমার মতো
দুপয়সা ছুড়ে দেয় সে মেয়েটি
তাচ্ছিল্যবশত
বেচারা নিরীহ তাই দীর্ঘশ্বাস
অভিমানী তার
হাতে লাঠি কিছু খোঁজে
পয়সা বা আধার
মুদ্রার কী মহিমা ... আলো , রঙ
কত অভিনয়
অন্ধত্ব এখানে সত্য ,বাণিজ্যিক
বিজ্ঞাপন নয় ।
মানচিত্র
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
অই সাদা রাস্তা চলে গেছে...
তার বেদাগ শরীর জুড়ে
পায়ে পায়ে যতিচিহ্ন জ্বলে
নিশুতি প্রশ্নগুলি মাথা তোলে
ত্রানশিবিরের থেকে
উন্মনা বাতাসের শ্বাস টের পাই
অভিমানি ত্রিপল আড়াল মুছে কান্নারব
ভারী হয়ে ওঠে
অই রাস্তা সাদা চলে গেছে দিগন্ত সটান
বনবহাল , আলপথ , মাটির দুনিয়া ।
পায়ে পায়ে মানচিত্র ...
অতিক্রম
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
সম্ভ্রম দুরত্ব পেরিয়ে উন্মুখ চৌকাঠ
ছুয়ে আছে স্বনির্ভর পা
অল্পদূরে প্রার্থিত আপ্যায়ন – আয়,
এত দেরী ?
চায়ের গেলাসে ধোঁয়া
- আজ তোর জন্মদিন ?
বেশ
শুভেচ্ছা আঙুলে দীর্ঘ সফর টিকিট
উপহার ...।
এতদিন ঘুমপথ ডিঙিনৌকা কাগজের মুখ
দূরবর্তী নদী।
দরজা খোলার শব্দে কেঁপে ওঠে হাত ।