ভালোবাসার কুড়িটি কবিতা ও একটি মরীয়া সঙ্গীত
অনুবাদ: জয়া চৌধুরী
প্রথম কবিতা
পাবলো নেরুদা
নারী শরীর,
দুটি শ্বেত পাহাড়,
দুটি শুচিশুভ্র উরুৎ
তোমার নিবেদনের ভঙ্গীতে তোমায় দেখায় ধরিত্রীর মত
আমার বন্য কৃষক শরীর খনন করে তোমার অধোদেশ
আর ঝাঁপ দিতে ডাকে পৃথিবীর গভীরের সন্তানকে।
যেন একা এক সুড়ঙ্গ বেয়ে গিয়েছিলাম, আমার শরীর থেকে
উড়েছিল পাখীরা
আহ্ আমার গভীরে বলশালী রাত্রি করেছিল প্রবেশ।
নিজেকে বাঁচানোর জন্য তোমাকে নির্মাণ করেছিলাম এক অস্ত্র,
একটি ধনুকে এক তীর,
আমার গুলতির একটি পাথরের মত।
তবু ঘনিয়ে আসে প্রহর,
আর আমি তোমায় ভালবাসতে থাকি।
চর্ম , শৈবাল আর দৃঢ় উন্মোচিত দুধভরা শরীর।
আহ্ বুকের সেই পানপাত্র দুটি! আহ্ সেই অবিদ্যমান চোখেরা !
আহ্ সেই গোলাপি জঙ্ঘাদুটি! আহ্ তোমার মৃদু
খিন্ন স্বর!
আমার নারীটির শরীর,
তোমার চারুতায় আমি ডুবে রইব অবিরত,
আমার তৃষ্ণা,
সীমাহীন আমার আকাঙ্ক্ষা, আমার অনির্ণীত পথ!
আমার অন্ধকার নদীখাত অনন্ত তৃষ্ণা বয়ে চলে যেখানে,
আর ক্লান্তিও,
আর আর অসীম যন্ত্রণানিচয়।
কবি পরিচিতিঃ পাবলো নেরুদা
চিলের বিংশ শতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও অন্যতম
শ্রেষ্ঠ কবি পাবলো নেরুদা ১৯০৪ সালে চিলের পাররাল শহরে জনম নেন। গারসিয়া মারকেসের
মতে বিশ শতকের যে কোন ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি তিনি। আর প্রখ্যাত সাহিত্য সমালোচক
হ্যারল্ড ব্লুম বলেছিলেন পশ্চিম গোলার্ধের বিশ শতকের কোন কবিকেই তাঁর সঙ্গে তুলনা
করা যায় না। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২৬ জন পশ্চিমী সাহিত্যিকদের অন্যতম তিনি। তাঁর
রাজনৈতিক কেরিয়ারও যথেষ্ট উজ্জ্বল ছিল। ফ্রান্সে তিনি চিলের রাষ্ট্রদূত ছিলেন কয়েক
বছর। সাহিত্যে “মোদেরনিস্মো” বা “আধুনিকতা” র
প্রভাব দেখা যায় তাঁর অত্যন্ত বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ “ভালোবাসার
একশ কবিতা ও একটি বেপরোয়া সঙ্গীত”
এ। স্পেনে তিনি কনসাল হয়ে কাজ করেছিলেন ক’বছর। বন্ধু কবি গারসিয়া লোরকার স্পেনের
গৃহযুদ্ধের সময় মৃত্যু হলে তিনি চিলে ফিরে যান এবং “হৃদয়ে স্পেন”
বইটি লেখেন। রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের সৃষ্টির সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটলে তিনি অনুরক্ত হন বিশ্বকবির। “তুমি
সন্ধ্যার মেঘমালা” গানটির মত একটি কবিতাও দেখা যায় তাঁর।
আর্জেন্টিনার প্রখ্যাত কবি খোরখে লুইস বোরখেস অবশ্য তাঁর
কবিতা অনবদ্য হলেও মানুষ তিনি ভালো নন এই কথা বলেন। তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের
মধ্যে “পৃথিবীতে একটি ঠিকানা”, “ক্যাপ্টেনের
কিছু কথা”, “সাধারণ সঙ্গীত”,
“স্বীকার করি যে আমি
বেঁচেছি” ইত্যাদি । ১৯৭১
সালে নোবেল পদক লাভ করার ২ বছর পরে প্রয়াণ ঘটে অসংখ্য কাব্যগ্রন্থ এর
স্রষ্টা এই মহান সাহিত্যিকের।
*************************************************
চলে যাওয়া আর থেকে যাওয়ার মাঝখানে
ওক্তাভিও পাস
চলে যাওয়া আর থেকে যাওয়ার মাঝখানে
স্বচ্ছতায়,
মুগ্ধ হয়ে দিন সন্দেহে থাকে।
বৃত্তাকার বিকেল ইতিমধ্যেই খাড়ি হয়ে যায়
তার শান্ত আন্দোলনে বিচলন ঘটে পৃথিবীর।
সবকিছু দৃশ্যমান আর সবকিছুই ছলনাময়
সবকিছু কাছে আর সবই অস্পর্শযোগ্য।
কাগজেরা,
বই, গেলাস, পেন্সিল
তাদের নামের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়।
আমার বুকের মধ্যে সময়ের ধকধক চলে
সেই এক জেদী রক্তের অক্ষর সব।
প্রতিচ্ছবির এক বর্ণালী নাটকে
আলো অনাসক্ত করে দেয় প্রাচীর।
একটা চোখের কেন্দ্রে আমি নিজেকে আবিষ্কার করি,
চোখটা আমার দিকে তাকাচ্ছে না, আমিই আমাকে দেখছি
ওর দৃষ্টিতে।
আমাকে না নাড়িয়ে,
মুহূর্ত বিচ্ছুরণ ঘটায়।
আমি রয়ে যাই আমি চলে যাই, আমি স্রেফ কোন
দ্বিধা।
কবি পরিচিতিঃ ওক্তাভিও
পাসঃ
ওক্তাভিও
পাস লোসানো ওরফে ওক্তাভিও পাস মেক্সিকান কবি ও ডিপ্লোম্যাট মেক্সিকোয় ১৯১৪ সালে
জন্মগ্রহণ করেন। মিগেল দে সেরভান্তেস পুরস্কার
এবং নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এই কবির এটি জন্মশতবর্ষ ছিল ২০১৪ সালে। মারক্সিজম, সুররিয়ালিজম ও এক্সিস্ট্যানশিয়ালিজমের
বিশেষ প্রভাব দেখা যায় তাঁর কবিতায়। ভারতে রাষ্ট্রদূত হিসাবে কাজ চলাকালীন তিনি ‘ভিসলুম্ব্রেস দে লা ইন্ডিয়া’ বা “ভারতের
আভাস” নামে বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। ইংরাজী ভাষার
প্রাতস্মরনীয় বেশ কজন কবি তাঁর কবিতার অনুবাদ করেন- যেমন
এলিজাবেথ বিশপ, স্যামুয়েল বেকেট, চার্লস টমলিনসন প্রমুখ। সর্বাধিক বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের নাম
“সূর্যের পাথরকুচি”
বা “পিয়েদ্রা
দে সল”। ১৯৯৮
সালে তাঁর দেহান্তর হয়।
**********************************************
তোকে বলে দেবো’খন কিভাবে তুই জন্মেছিলি
লুইস সেরনুদা
তোকে বলে দেবো’খন কিভাবে তুই জন্মেছিলি, নিষিদ্ধ আনন্দের
ওপরে,
ভয়ের মিনারের ওপরে কিভাবে জন্ম নেয় কামনা,
গরাদের ধমকিগুলোর ওপর ,
বর্ণহীন আক্রোশের ওপর ,
ঘুঁষির দাপটে হতচকিত পাথর হয়ে যাওয়া রাতের ওপর,
সবকিছুর আগে গিয়ে, সবচেয়ে কঠিন বিদ্রোহটা সুদ্ধু,
দেওয়ালহীন জীবনেই কেবল মাপসই সে কামনা।
অজেয় ঢাল,
বর্শা অথবা ছোরাদের,
প্রতিটিই ভালো যদি ওগুলো শরীরকে খন্ড বিখন্ড করে;
তোর ইচ্ছে হয় পান করিস ঐসব লালসার পাতাদের
কিংবা ঘুমাস সেইসব আদরভাসি জলে,
কিছু এসে যায় না;
ওরা এর মধ্যেই ঘোষণা করেছে তোর আত্মা নাকি অশুদ্ধ।
শুদ্ধতায় কিছু যায় আসে না, একটা গন্তব্যের
চেয়ে উপহার টুপহারগুলো সুদ্ধ
অবিস্মরণীয় হাত নিয়ে ও এগিয়ে গিয়েছিল পাখিদের কাছে,
যৌবন থাকলেও কিছু এসে যায় না, মানুষের চেয়ে
স্বপ্নসংখ্যা অধিক,
এক পতিত পলিটব্যুরো থেকে, কী মহান হাসি তার
ঝড়ের ভেতরে রেশমের তীর যেন।
বলে দেব নিষিদ্ধ আনন্দেরা কেমন। অথবা জাগতিক গ্রহরাজি,
গ্রীষ্মের স্বাদে ভরা মর্মরের সদস্যরা কেমন,
কিংবা কিরকম সমুদ্রতলে নিষিদ্ধ স্পঞ্জের খেলা,
লোহার পুষ্পেরা,
ওরা পুরুষের বুকের মত গর্জনকারী।
অহংকারী একাকীত্ব,
ভূপাতিত রাজমুকুট সব,
স্মরণীয় মুক্তিরা,
বা যৌবনের চাদর;
ভাষায় ধ্বংসস্তূপ হয়ে ,
ঐসব ফলদের ওরা অপমান করে,
এটি রাজার মত নিন্দনীয়,
যেন এটি
জীবনের এক টুকরো অর্জন করার জন্য পৃথিবীর
পদতলে হিঁচড়াতে হিঁচড়াতে টেনে আনা
রাজার ছায়া এক।
আমি জানতাম না রাজকরের সীমানা,
জানতাম না ধাতু কিংবা কাগজের সীমারেখাও
ভাগ্য যতদিন না অত উঁচু আলোর নিচে উন্মোচন করেছিল তার চোখ,
জঘন্য সব সংকেত,
ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশের ইবলিশেরা এমন কি
শূন্য বাস্তবেরাও যেখানে পৌঁছয় নি।
অতঃপর একটা হাত বাড়িয়ে ধরা
যেন নিষিদ্ধ এক পাহাড় খুঁজে ফেরা,
এক দুরাধিগম্য জঙ্গল যা কি না অস্বীকার করে
সমুদ্রকে যা কি না গিলে ফেলে বয়ঃসন্ধির বিদ্রোহ।
তথাপি যদি ক্রোধ,
অপমান, অসম্মান আর মৃত্যু,
এখনো মাংসহীন উৎসুক দাঁতেরা,
তার টরেন্ট ঘূর্ণিঝড় খুলে দিতে দিতে হুমকি দেয়,
অন্য দিক থেকে তোরা,
নিষিদ্ধ আনন্দেরা,
অহংকারের ব্রোঞ্জ,
কিংবা ধর্ম নিন্দা যাতে কি না কেউ
অংশ নেয় না
কোনো এক হাতে তোরা তা ঝুলিয়ে রাখিস রহস্যে।
এমন এক স্বাদ যা কোন তিক্ততাও নষ্ট করতে পারে না ,
আকাশেরা,
বিদ্যুৎ চমকে ভরা আকাশেরা তা ধ্বংস
করে দেয়।
নিচে, অজ্ঞাত স্ট্যাচুরা,
ছায়ায় ছায়ায়,
দুঃখেরা, কুয়াশার রীতিনীতি;
শক্তিপ্রদানের সময় ঝলসে ওঠে
সেইসব সুখের এক ঠাট্টা।
তার ঔজ্জ্বল্য তোদের পৃথিবী ধ্বংস করে দিতে পারে।
কবি পরিচিতিঃ লুইস সেরনুদা
স্পেনের ’২৭ এর জেনারেশনের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক লুইস সেরনুদা ১৯০২ সালে
স্পেনের সেভিইয়া-তে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষ ফ্রান্স থেকে স্পেনে
আসেন বসবাসের জন্য। সারা জীবন তিনি তাঁর প্রবন্ধ কবিতা ইত্যাদি লিখে গেছেন যা
লোরকা প্রভৃতির যুগেও স্পেনের বুদ্ধিজীবী মহলে বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল। তিনি বরাবরই
সাহসী ছিলেন এবং মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে কোন রকম চাপের কাছে ই নতি স্বীকার করেন
নি।। স্পেনের গৃহযুদ্ধের সূচনায় লোরকা সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি মৃত্যু হলে একটি
লেকচার দিতে গিয়ে তিনি গ্রেট ব্রিটেন যান এবং মৃত্যুর আগে আর স্বদেশে ফিরতে পারেন
নি। “বাতাসের প্রোফাইল” ও “গ্রাম্য কবিতা, বিষাদসঙ্গীত, গীতিকাব্য” হল
তাঁর প্রথম দিককার উজ্জ্বল কাব্যগ্রন্থ। তাঁর কবিতার বৈশিষ্ট্য মাচাদো,
লোরকা বা আলবের্তির
থেকে তাঁকে অনেকটাই অনন্য করে রেখেছে। সুররিয়ালিস্ট ধারার এই কবির সাহিত্য
কীর্তির ব্যপ্তি স্পেনের সাহিত্য জগতে তাঁকে বুম পূর্ব যুগের স্মরণীয় সাহিত্যিক
করে রেখেছে। ব্যক্তি জীবনেও তিনি তাঁর সমকামীতাকে কখনো লুকোন নি যদিও সেই সময়কার
প্রেক্ষাপটে এটি বৈপ্লবিক ঘোষণা বলা যেতে পারে। মেক্সিকোর রাজধানীতে প্রবাসে ১৯৬৩
সালে এই কবির মৃত্যু হয়।
******************************************
একাকীত্ব
রোসালিয়া দে কাস্ত্রো
একটা বিনম্র নদী,
এক বিস্তারী পায়ে হাঁটা ফুটপাথ,
একা প্রান্তর এক আর এক পাইন বৃক্ষ,
বুড়ো মরচে পড়া একটা সাদামাটা সেতু
এত আনন্দময় একাকীত্বকে চেয়ে দেখতে থাকে
একাকীত্ব আসলে কি?
পৃথিবীকে পূর্ণ করবার জন্য
মাঝে সাঝে এক একক ভাবনাই যথেষ্ট।
তাই আজ,
তোমার দেখা হয়,
সৌন্দর্যের ক্ষতগুলোর সঙ্গে
এক সেতু,
নদী আর নির্জন পাইন গাছ।
ওরা যারা ভালবাসে ওরা মেঘ নয় ফুল নয়;
দুঃখী কিংবা ভাগ্যবান,
হৃদয়, তুমিই সে,
যন্ত্রণা আর আনন্দের সেই রেফারী
শুকিয়ে দেয় সমুদ্রকে,
মেরুকেও করে তোলে বাসযোগ্য।
কবি পরিচিতিঃ রোসালিয়া দে কাস্ত্রো
২৪ শে ফেব্রুয়ারী ১৮৩৭ স্পেনের গালিসিয়া
প্রদেশে জন্ম হয় গালিসীয় রোম্যান্টিক কবি ও ঔপন্যাসিক রোসালিয়া দে কাস্ত্রোর।
ঊনবিংশ শতকে গালিসিয়ায় বসে কোন মহিলার লেখালেখি করা যে কী ভীষণ দুরূহ কাজ ছিল তা
আজকের দিনে বোঝা কঠিন। সারা জীবন তাকে আলোড়িত করেছে দরিদ্র শ্রেণীর দুঃখ। বিশেষত
মহিলাদের স্বাধীনতায় আমূল বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সারা
জীবন সোচ্চার থেকেছেন তিনি। তাঁর প্রথম
কাব্যগ্রন্থ “কান্তারেস
গাইয়েগোস” বা ‘গালিসীয়
সঙ্গীত’ প্রথম প্রকাশের
দিনটি গালিসীয় সাহিত্য দিবস হিসাবে আজও পালিত হয় স্পেন দেশে। “আ মি
মাদ্রেঃ বা ‘মায়ের প্রতি’,
“লা আইখা দে মার” বা ‘সমুদ্রকন্যা’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য কীর্তি। ১৮৮৫ সালে
প্রয়াত হন এই মরমীয়া কবি।
********************************************
আমার পুরুষটি কোথায়?
আনা রোসেত্তি
তোমাকে খুঁজতে গেলে যেমন পাই তেমনটি আর কক্ষনো নয়
আগেই জানা থাকে আমার যে তোমার সাথে দেখা হবে না।
তখন শুধু তোমার সঙ্গে মিলনের জন্য উৎসুক থাকি।
তখন শুধু গাড়ির ধাতুময় জঙ্গল কিংবা
কনভেয়র বেল্টের অরণ্যে,
কানায় কানায়
ভর্তি কফির কাপে,
চাঁদের গ্লাস উইনডোতে,
পার্ক কিংবা
আয়নার গোলকধাঁধায় হারিয়ে যাই আমি, ইয়ে
তোমার মত দেখতে সব কিছুর পেছনে দৌড়োই আমি।
ক্রমাগত তোমাকে অনুসরণ করতে থাকি আমি
পিচ গলে যায় ফিনকি দিয়ে
এটা শার্ট টি শার্ট দিয়ে বাঁধানো চলমান রাস্তা,
তাঁদের রঙের তুলনা করি আকাশী নীল কিংবা সবুজ ম্যালাকাইট পাথরের সঙ্গে
তোমার বুকের ওপরে বোতাম খুলেই দিই আমি।
যদি বিশ্বাস রাখি তোমাকে চিনে ওঠায় আর তোমার সুস্বাদু পীড়নে
আমাকে তা দুর্বল করে দেয়ঃ আমার শরীরময় ত্বক
তোমার নাম করতে থাকে,গোটা শরীর সজাগ, আমার চোখের মণি
গবেষণা করে,
মিলিয়ে দেখে কোন পর্যবেক্ষণ,
কোন ইঙ্গিত যা তোমার দিকে
আমাকে টেনে নেয়,
তোমাকে পরিচিত করায় সেই পরিবেশে
যেখানে
তোমার ছবিই রাজত্ব করে আর সেখানে তোমার সঙ্গেই দেখা হয়, স্থাপন করে
তোমাকেই,
তোমার কাছে আসে,
তোমার উদ্বোধন করে আর
চিরকালের মত তুমি থেকে যাও।
কবি পরিচিতিঃ আনা
রোসেত্তিঃ
ইতালীয়- স্পেনীয় মূলবাসী
আনা বুয়েনো দে লা পেন্যা বা আনা রোসেত্তি ১৯৫০ সালে স্পেনের কাদিস শহরে জন্মগ্রহণ
করেন। জীবনের এক বড় অংশ তিনি থিয়েটার, কবিতা বর্ণনাত্মক ধরণের মিশেলে কাটিয়েছেন। তাঁর রচনা একই
সঙ্গে ইরোটিক, নান্দনিক, সাংস্কৃতিক গুণে
সমৃদ্ধ। ৮০ র দশকের স্প্যানিশ কবিদের প্যানোরমায় তিনি বিপ্লব ঘটিয়ে ছিলেন। বিখ্যাত
স্পেনীয় অভিনেত্রী রুথ গাব্রিয়েল তাঁর কন্যা। লোস দেভানেওস দে এরাতো বা এরাতোর
ফ্লার্ট দেবোসিনারিও বা প্রেরথনা পুস্তক ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ।
*****************************************