রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য


দিন যায়
সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য

তোমার আসার অপেক্ষায় থাকি
সমস্ত বিচ্যুতি সরিয়ে
বসন্ত বউরি উড়ে যায়
মাঝ দুপুরে
রোজ
ঝাক ঝাক টিয়া
বন মাতাল কোকিল
অনন্ত আকাশ ভরে
দূরে কোথাও দূরে দূরে
অপেক্ষা মরাই উপচায়
অপেক্ষা অশোক বনে
অপেক্ষা বরফ শিখরে
অপেক্ষা নির্নিমেষ
অপেক্ষা অসীম রোদনে
অপেক্ষা প্রতিটি রোমকূপে
অপেক্ষা বালুকাবেলায়
মরুভূম ও সমুদ্রতটে
অপেক্ষা সমস্ত রিতুশেষে
এই বসন্ত সমাগমে
অনির্বান শুধু তোমার জন্যে





সুহাগ রাত
সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য

আচমকা মৃদু লয়ে
নেচে উঠলো বিষণ্ণ আগুন
শেষ বিকেলের আলো
নতমুখী
সুদীর্ঘ অতীতের গল্প
কোনও দিন কাউকে বলিনি
শরীরী সংকটে
ছায়ালোকে
বকুলফুল
শুধু তোকে
ফিসফিসিয়ে করতে চেয়েছি
স্ববিরোধী সুখের বর্ণনা
অনুপ্রাস, ছন্দ, ভাষায়
বিষাদ বিধুর
উতোর চাপান
নীরব মিছিলে
প্রতিদিন ভোরে সূর্য ডাকি
তোকে
প্রতিদিন রাতে চান্দ্রভ্রমণ
তারপর বিছানা সাজাই
ছুঁতে চাই
ছুঁতে চাই
ছুঁতে চাই
নীল বাতিঘর
অস্থির শিকড়
ছলাকলা শিখতে পারিনি
উত্তাপবিহীন
কেটেছে খন্ডরাত
শব্দের মধ্যে জেগেছে
নটরাজ
স্বপ্নের তুলো
ভাসে চোখে
মুখোমুখী দুজন
কানাড়া, ভৈরব
অন্যতর ভাষার বিন্যাসে
নির্বিকার ফিরিয়েছ মুখ
ব্যক্তিগত মহল জানে
প্রকৃত বাস্তব
রোদ্দুর নিয়ে কোনও কথা হয় নি
কখনও
বলা হয় নি একান্তে
এ আমাদের শব্দহীন ভেঙ্গে যাওয়া নয়
বিদ্যুতরেখায় করতল রেখে
বিষন্ন কবিতাও নয়
দুহাতের মধ্যে ধরা
একটি মাধবীলতা
আজানু ভূমিকম্পের পরে
ওষ্ঠে জড়ানো ওষ্ঠ
ঘুমিয়ে পড়ার আগে
নিঃশব্দে জাগা মুগ্ধ সুহাগরাত
একটি শেষতম প্রেমের কবিতা





একটি নষ্ট সম্পর্কের কথা
সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য

যদি বল মিলন
আমি বলব,
"বিচ্ছেদ যা দেয় মিলন তার কাছাকাছি যেতেই পারেনা।
এইসব কষ্টের চিঠিপত্র,গোপন কান্না
শুধু বিচ্ছেদই দিতে পারে
মিলন নয়।"
বউ নোলক চেয়েছে
উল্কি নয়
বউ কল্কাপাড়ের বেনে বউ
ডুড়ে শাড়ী চাইলে
তুমি এনে দাও
সঙ্গে আয়নাটিও।
লাল, নীল, সবুজ ফিতের
ডোর খুলতে সাহায্য কর রোজ
তবু এত সংশয়
আঁকে হৃদয়
যে
বারেবারে জিয়ন কাঠির ছোঁয়া পেতে ঘনিষ্ঠ আকাশে
পাত হাত
পুড়ে যায় দিনলিপি
দিনান্তের শোকগাথা
নিজস্ব কৈফিয়তের
ব্যকরণ
আর
আগুনের ডালপালা রাজি
দ্গদগে ক্ষত
একটি নষ্ট সম্পর্কের শপথ
ক্ষিতি অপ বায়ু আকাশ মরুত তেজ ও ব্যোম
নষ্ট রাত
নষ্ট সমুদ্রযাত্রা
নষ্ট হৃদয়
একটি নষ্ট জীবনের
তরতাজা
রূপসমাধির নিপূণ
চিত্রনাট্য,
দেখা হবে, হয়তবা হবে না
কিন্তু পথটা মিশে যাবে
অমৃত আলয়ে
ভাল থেক।





অনন্ত- প্রণয়
সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য

কবিতাটা হারিয়ে গেল
অনির্বাণ
তোমার অনির্বচনীয়তা
একান্ত
চাওয়া পাওয়া
তোমার স্পর্শ
সকল অনুভূতি
আমি গ্রহণ করেছি
চেতনায়
অই ভুবনমনোমোহিনী
পদ্মগন্ধা গঙ্গা
জটা বেয়ে ভাগীরথী
ভোলামহেশ্বর তুমি
রাত্রির গভীরে বেজে ওঠা
অনন্ত জিঞ্জাসা
মুহুর্তকথা
আমার সাঁঝবেলা
সকাল,প্রতিটি নিঝুম
দুপুরবেলা
চলে যায়, চলে যায়
সব অশ্রু জলে
পাবক শিখাটির
অসীম আবর্তে
একটি কন্যাজন্ম যায়
দুটি কন্যাজন্ম যায়
তিনটি কন্যাজন্মও যায়
অনন্তের দিকে
আমার দহনবেলা
গলা, বুক, ঠোঁট
সব জ্বালায়
হুতাশন
অদৃশ্য বাতাসে ওড়ে
দীর্ঘশ্বাস, প্রলয় ও
শান্তির প্রতিস্থাপক
অগ্নিবলয়
এসো অনির্বান নির্বাপিত কর প্রলয়




বেশ কথা বোলো না তুমি
সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য
.................................
প্রতিদিন কত কথা
সাবলীল
মনোহরা
কে চায় আকাশ
ঠিকানা
চিঠি
খুশি রং
মাছরাঙ্গা
জলতরঙ্গ
পাখোয়াজ
খোদাই করেছ নাম গোপনে
কানে কানে ভ্রমণকাহিনী
পুরস্কার সব
জনান্তিকে
আলিঙ্গন, অভিমানও
ডাক হরকরার ঝুলিতে
হঠাৎ চমকে ওঠা
চিকন বৃষ্টি
কেন তুমি এলে
যাকে আমি বপন করেছি স্তব্ধ রাতে
খাঁচার ভিতর
বৌ কথা কও
মৌটুসী
পৌষের ঘ্রাণ
কে চায় আলিঙ্গন
ভ্রমণ কাহিনী সকল
তোমার,
অবহেলা ধারাবাহিক
বিহানবেলায় ছল
খেলাঘর
অহল্যা উদ্ধার
আত্মতৃপ্তি
তবু
হৃদয়ে বাঁশির ধ্বনি
দীপ জ্বেলে যাই

বেশ কথা বোলো না তুমি