হিজড়াদের হাততালি
কচি রেজা
১
একজন্ম
কাটলো কচ্ছপের খোলস আর শীতকাল উদ্ধৃত করে । পরের জন্মে
সন্ধ্যেবেলায়
মেঘ ডেকে ওঠে যদি , তোমার
গানে , তোমার
স্মরনে , তোমার
সিল্কেরআলখেল্লা
আমি ভিজিয়ে দেব অনন্ত কান্নার জলে ,
ঋণ স্বীকার ,ভুল স্বীকার
লিখে জখম গাছের কাছে ফিরে যাচ্ছি আজ
২
এক ব্যর্থ
স্বর্ণকার , হয়ত
পাথর চেনেনি যার চোখের তলায় জলের দাগ । প্রদীপের
কালো আলোয়
মাথা গুঁজে মেলাচ্ছে পাথরের ফসিল ! যে ফুটেছিল হয়ত বালিতে ,
দু'একবার জলের
মৌসুমে ভিজতে নেমেছিল ক্ষীন্ন সিঁড়ি ঘসটে । হয়ত স্বর্ণকারও
নয় তবু দু'খানি হাত
জানে , কেন
অবুঝ শালিকের ঠোঁট ছটফট করে!
৩
মানুষের
ভিতরেও দামি পাথর কেউ কেউ । শীত আর বরফের প্রভাবে ফাটা ‘পা
অবিশ্বাস্য
সংলাপে বলে যাচ্ছে
দুম্বার গল্প । কেউ ব্যাঞ্জনা বোঝেনা । চোখও ।
প্রায়শ্চিত্য
করতে কেউ
হয়ত দেখবেন
, সূর্যাস্তের
শেষ বেলায় অশ্রুর বিকল্পে
পরিতাপ গড়িয়ে
পড়ছে ক্রুশের গায়ে । প্রার্থনালয়ের মত এই পাথর ব্যর্থ , এই
ব্যর্থতা
পাথরের ভঙ্গি
৪
বহমান জলের
কাছে, উদাস
এক নারী পাগল, যেখানে
অকারণে শরীর ভেজায় সেই
তার দুঃখের
কাছে বসি। ছিন্ন-নিঃস্ব, সন্তান
জন্মদানচিহ্নপরিস্ফুট তলপেট, শুধাতে
ইচ্ছে করে, কার
আলিঙ্গনে? চুরমার
কপালের নিশ্চুপ রেখায় থমকে যাই। নৈঃশব্দ্য
ভাঙতে খুঁজে
পাই না যুৎসই অক্সিজেন। সংকুচিত হয়ে আসে ফুসফুস।
৫
শোনা যাচ্ছে
হিজড়াদের হাততালি । যেন পুনর্বার প্রসব হয়েছে বৃহন্নলা পৃথিবী !
গোড়ালি থেকে
পা , পা
থেকে কোমর কিভাবে যে কিছু ভ্রুণবীজ ঘুরে ঘুরে মা হলো ।
হে জল , পদ্মপাতায়
শায়িত যাকে তুমি নির্বাচন করেছো বুকের খোঁড়লে সে
কতটুকু পিতা
? কন্যাকে
বিষচুম্বনে আশির সিক্ত করে পুনর্বার তার অধিষ্ঠান হলো
পৃথিবীর
কুটিরে ! অধিক
পাপে , লালায়
ছুঁড়ে দিলে আমারই অসন্তান !
লোধ্ররেনু
কচি রেজা
লোধ্ররেনু , তুমি আজ এত
মেখেছ কেন ? বসন্ত
নিয়ে আমি কোনওদিন লিখিনি ।
যেন এক
দুঃসময়ে্র পৃষ্ঠা হঠাত উড়ে আসে কালান্তর থেকে । অপরিমিত চুলে
ঢেকে যায়
মুখ। আমি হারাতে হারাতেই বলি , ফুটেছ কেন যে ---
আমার ছিলনা
রক্তপ্রীতি , তুমি
পদ্ম বেছে নিলে । কেটে গেছি ডানায়।
কাল তোমার
ভালোলেগেছিল অন্ধকারের নুন ।
হিংসিত সাপ
কচি রেজা
বেদনা এক
মেসোপটেমিয় দেবী । তোমার চুম্বনের পর
নীরবে যে অনিদ্রা
বহন করি
তাতে পাঁজর বেয়ে ওঠে হিংসিত সাপ
তাতার
প্রতিহারীর কফির কাপে ঠোঁট ভেজাতে ভেজাতে
অপেক্ষার
বিলীয়মানতা দেখতে দেখতে
বিকেলকে
অভিভূত করে হাত ফসকে উড়ে যায় প্রজ্ঞান পাখি
চুম্বনের
অনতিপরেই মৃদু হাসে মৎস্য মেয়ে
বুঝতে পারি
সাঁতারের সময় কেন এতো শ্বাসকষ্ট
আমার সংসার আসেনা
কচি রেজা
আমাকে
বারান্দায় শুতে দাও
বারান্দার
পরেই তুমি আমাকে আকাশের ঠিকানা দাও
অচল মানুষ
মেঘ , চিল
আর কাটা ঘুড়ির ভেসে যাওয়া দেখে
থালা-বাটি , চায়ের ঘ্রান
, মেয়েটির
স্নান
ঘরের ভেতর
কারো চুল , রান্না
অথবা অভিমান
ছাদের
শীতার্ত আপেল , আবর্জনার
মত নিঃশ্বাস উলুধ্বনির মত
কেউ ঘুম
থেকে উঠে পরিস্কার করে পুনর্জন্ম
আমি মশারি
থেকে বেরিয়ে এসেছি ,
আমার সংসার আসেনা
বোতামের ঘরে
কচি রেজা
তুমি কেন
অষ্ট্রিচ পাখির ডিমের ভাঙ্গা খোলে পড়ে আছ
কিভাবে যেন
সন্ততির মত হাতছানি দিচ্ছ আর আমি দেখছি-ই না দূরত্ব
দীর্ঘশ্বাসের
মাধ্যাকর্ষণ বিষয়ে তবে কি কিছু শিখব ?
সামান্য
সংবেদনায় বোতামের ঘরে দুজনেরই তো মন্বন্তর
দেখো , মৃতদেহের
মতো ঘেমে উঠেছে আমার চুল